শেকৃবিতে স্নাতকোত্তরে ভর্তি, ৮ দপ্তর ঘুরে ১২ স্বাক্ষর

উপজেলা প্রতিনিধি, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) স্নাতকোত্তরে দীর্ঘ সেশনজট শেষে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। ১১ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর ভর্তির এ কার্যক্রম চলে। কিন্তু ভর্তির জন্য আটটি দপ্তর ঘুরে ১২ জনের স্বাক্ষর নিতে পদে পদে ভোগান্তিতে পড়ার অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা জানান, স্নাতকোত্তর ভর্তিতে রয়েছে দপ্তরভিত্তিক ক্রমান্বয়ে স্বাক্ষর চক্র। ভর্তি হওয়ার জন্য শুরুতে পছন্দক্রম অনুযায়ী নির্ধারিত বিভাগে গিয়ে একটি ফরম সংগ্রহ করতে হয়। সেখানে বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর নিয়ে যেতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে। সেখান থেকে স্বাক্ষর নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের স্বাক্ষর নিতে হয়। প্রক্টরের অফিসে আবাসিক হল নির্ধারণ করা হয়। এরপর ওই হলের ফি পরিশোধ করে প্রভোস্টের স্বাক্ষর নিয়ে ফরম ডিন অফিসে জমা দিতে হয়।

এরপর পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। কোন শিক্ষার্থী কোন বিভাগে সেটি শনাক্ত করে দীর্ঘ সময় ধরে আগের নেওয়া স্বাক্ষর ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। তাদের যাচাই-বাছাই শেষে একে একে ডেপুটি রেজিস্ট্রার, রেজিস্ট্রার ও ডিন কার্যালয়ের স্বাক্ষর নিতে হয়।

এরপর কোষাধ্যক্ষ ভবন থেকে তিন কপির এক রসিদে শিক্ষার্থীর বৃত্তান্ত লিখে ডাচ-বাংলা ব্যাংকে ভর্তি ফি জমা দিতে হয়। সেই রসিদ নিয়ে আবার ডিনের স্বাক্ষরের জন্য তার কার্যালয়ে যেতে হয়। ডিনের স্বাক্ষর নিয়ে আবার ফরম সংশ্লিষ্ট বিভাগে আনতে হয়। সেখানে চার কপির একটি বিষয়ভিত্তিক ফরম পূরণের মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়।

এ ছাড়া নির্দিষ্ট দপ্তরে নিয়োজিত কর্মকর্তারা যদি উপস্থিত না থাকেন বা ব্যস্ত থাকেন অন্য কাজে তাহলে ভর্তি হওয়ার প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ হয়। এর মধ্যে কোনো দপ্তরে কেউ অনুপস্থিত থাকলে ভোগান্তির মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায়।

ভর্তির ভোগান্তি নিয়ে ভর্তিচ্ছু কায়েস ইবনে জুবায়ের জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্নাতকোত্তর ভর্তি প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের ভর্তি হতে সুবিধা হয় বা একটু ভোগান্তি কম হয় এমন কোনো পদক্ষেপই নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ডিপার্টমেন্ট প্রধানদের থেকে স্বাক্ষর নিতে গিয়ে দেখি তিনি ক্লাস নিচ্ছেন কিংবা প্রশাসনিক কাজে অন্য কোথায় গিয়েছেন। স্বাক্ষর ছাড়া পরবর্তী ভর্তি কার্যক্রমও করতে পারছি না ফলে দীর্ঘসময় অপেক্ষার মতো ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। যেসব শিক্ষকদের স্বাক্ষর লাগছে প্রশাসন তাদের পাঠদান বা প্রশাসনিক অন্য কাজ থেকে বিরত রাখলে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কম হয়।’

ভর্তিচ্ছু আরেক শিক্ষার্থী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভর্তি কার্যক্রমে যেসব শিক্ষক, কর্মচারী-কর্মকর্তার স্বাক্ষর প্রয়োজন তাদের সবাইকে এক ছাদের নিচে এনে (অডিটোরিয়াম) এক জায়গাতেই ভর্তি সম্বলিত সব কাগজের স্বাক্ষর করে নেওয়া যেত তাহলে একদিকে শিক্ষার্থীদের এক রুম থেকে অন্য রুমে দৌড়ানোর ভোগান্তি কমতো, অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়কে ভর্তি প্রক্রিয়ায় জন্য তিন দিন সময় দেওয়া লাগতো না, এক দিনেই কাজ হয়ে যেত।’

আরেক শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (হাবিপ্রবি) থেকে স্নাতক হয়ে আজ প্রথম এ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে এসেছি। এখানকার সবকিছুই আমার অপরিচিত। ভর্তি কার্যক্রমে সাত-আট স্থানে স্বাক্ষরের প্রয়োজন হচ্ছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিক্ষক/কর্মকর্তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) তাদের সব কার্যক্রম আবাসিক হলেই ব্যবস্থা করে দিচ্ছে সেখানে শেকৃবি প্রশাসন একই স্থানে ভর্তির ব্যবস্থা নিচ্ছে না তা আমার বোধগম্য না।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ডিন অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা গত বছর ওয়ান স্টপ ভর্তি ব্যবস্থা করেছিলাম। এক স্থানে কার্যক্রম করতে গেলে তাদের লাঞ্চ, নাস্তার ব্যবস্থা করা লাগে। সরকার থেকে বাজেট কম দেওয়ায় এ বছর সম্ভব হয়নি। সামনের বছর থেকে আশা করি হবে। এ বছর স্নাতকোত্তর কার্যক্রমে ৩৫ টি বিভাগে মোট ৫৫৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।’

শেকৃবিতে স্নাতকোত্তরে ভর্তি, ৮ দপ্তর ঘুরে ১২ স্বাক্ষর

উপজেলা প্রতিনিধি, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) স্নাতকোত্তরে দীর্ঘ সেশনজট শেষে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। ১১ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর ভর্তির এ কার্যক্রম চলে। কিন্তু ভর্তির জন্য আটটি দপ্তর ঘুরে ১২ জনের স্বাক্ষর নিতে পদে পদে ভোগান্তিতে পড়ার অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা জানান, স্নাতকোত্তর ভর্তিতে রয়েছে দপ্তরভিত্তিক ক্রমান্বয়ে স্বাক্ষর চক্র। ভর্তি হওয়ার জন্য শুরুতে পছন্দক্রম অনুযায়ী নির্ধারিত বিভাগে গিয়ে একটি ফরম সংগ্রহ করতে হয়। সেখানে বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর নিয়ে যেতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে। সেখান থেকে স্বাক্ষর নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের স্বাক্ষর নিতে হয়। প্রক্টরের অফিসে আবাসিক হল নির্ধারণ করা হয়। এরপর ওই হলের ফি পরিশোধ করে প্রভোস্টের স্বাক্ষর নিয়ে ফরম ডিন অফিসে জমা দিতে হয়।

এরপর পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। কোন শিক্ষার্থী কোন বিভাগে সেটি শনাক্ত করে দীর্ঘ সময় ধরে আগের নেওয়া স্বাক্ষর ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। তাদের যাচাই-বাছাই শেষে একে একে ডেপুটি রেজিস্ট্রার, রেজিস্ট্রার ও ডিন কার্যালয়ের স্বাক্ষর নিতে হয়।

এরপর কোষাধ্যক্ষ ভবন থেকে তিন কপির এক রসিদে শিক্ষার্থীর বৃত্তান্ত লিখে ডাচ-বাংলা ব্যাংকে ভর্তি ফি জমা দিতে হয়। সেই রসিদ নিয়ে আবার ডিনের স্বাক্ষরের জন্য তার কার্যালয়ে যেতে হয়। ডিনের স্বাক্ষর নিয়ে আবার ফরম সংশ্লিষ্ট বিভাগে আনতে হয়। সেখানে চার কপির একটি বিষয়ভিত্তিক ফরম পূরণের মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়।

এ ছাড়া নির্দিষ্ট দপ্তরে নিয়োজিত কর্মকর্তারা যদি উপস্থিত না থাকেন বা ব্যস্ত থাকেন অন্য কাজে তাহলে ভর্তি হওয়ার প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ হয়। এর মধ্যে কোনো দপ্তরে কেউ অনুপস্থিত থাকলে ভোগান্তির মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যায়।

ভর্তির ভোগান্তি নিয়ে ভর্তিচ্ছু কায়েস ইবনে জুবায়ের জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্নাতকোত্তর ভর্তি প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের ভর্তি হতে সুবিধা হয় বা একটু ভোগান্তি কম হয় এমন কোনো পদক্ষেপই নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ডিপার্টমেন্ট প্রধানদের থেকে স্বাক্ষর নিতে গিয়ে দেখি তিনি ক্লাস নিচ্ছেন কিংবা প্রশাসনিক কাজে অন্য কোথায় গিয়েছেন। স্বাক্ষর ছাড়া পরবর্তী ভর্তি কার্যক্রমও করতে পারছি না ফলে দীর্ঘসময় অপেক্ষার মতো ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। যেসব শিক্ষকদের স্বাক্ষর লাগছে প্রশাসন তাদের পাঠদান বা প্রশাসনিক অন্য কাজ থেকে বিরত রাখলে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কম হয়।’

ভর্তিচ্ছু আরেক শিক্ষার্থী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভর্তি কার্যক্রমে যেসব শিক্ষক, কর্মচারী-কর্মকর্তার স্বাক্ষর প্রয়োজন তাদের সবাইকে এক ছাদের নিচে এনে (অডিটোরিয়াম) এক জায়গাতেই ভর্তি সম্বলিত সব কাগজের স্বাক্ষর করে নেওয়া যেত তাহলে একদিকে শিক্ষার্থীদের এক রুম থেকে অন্য রুমে দৌড়ানোর ভোগান্তি কমতো, অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়কে ভর্তি প্রক্রিয়ায় জন্য তিন দিন সময় দেওয়া লাগতো না, এক দিনেই কাজ হয়ে যেত।’

আরেক শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (হাবিপ্রবি) থেকে স্নাতক হয়ে আজ প্রথম এ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে এসেছি। এখানকার সবকিছুই আমার অপরিচিত। ভর্তি কার্যক্রমে সাত-আট স্থানে স্বাক্ষরের প্রয়োজন হচ্ছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিক্ষক/কর্মকর্তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) তাদের সব কার্যক্রম আবাসিক হলেই ব্যবস্থা করে দিচ্ছে সেখানে শেকৃবি প্রশাসন একই স্থানে ভর্তির ব্যবস্থা নিচ্ছে না তা আমার বোধগম্য না।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ডিন অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা গত বছর ওয়ান স্টপ ভর্তি ব্যবস্থা করেছিলাম। এক স্থানে কার্যক্রম করতে গেলে তাদের লাঞ্চ, নাস্তার ব্যবস্থা করা লাগে। সরকার থেকে বাজেট কম দেওয়ায় এ বছর সম্ভব হয়নি। সামনের বছর থেকে আশা করি হবে। এ বছর স্নাতকোত্তর কার্যক্রমে ৩৫ টি বিভাগে মোট ৫৫৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।’