জনবল কাঠামো প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদন

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ৮৯ পদোন্নতি অবৈধ

পদোন্নতি, জ্যেষ্ঠতা ও বেতন-সুবিধাদির ব্যাপক অসংগতি চলে আসছে বছরের পর বছর

আনু মোস্তফা, রাজশাহী

২০১০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ৪৪নং সংস্থাপন স্মারকে একটি বিশেষ অফিস আদেশ জারি করা হয়। এই আদেশে শিক্ষা বোর্ডের শাখা সহকারী, নিুমান ও উচ্চমান সহকারী, হিসাব সহকারী, সাঁটমুদ্রাক্ষরিক, সাঁটলিপিকার এবং সমমানের পদে কর্মরত ৮৯ জন কর্মচারীকে একযোগে ‘প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ নামে একটি অস্তিত্বহীন পদে পদোন্নতিসহ জ্যেষ্ঠতা দেওয়া হয়। এই সুযোগ তারাই লাভ করেন, শিক্ষা বোর্ডে যাদের চাকরি ১৫ বছর পূর্ণ হয়েছিল ওই সময়। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, এত বিপুল সংখ্যায় কর্মচারী একযোগে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেওয়া হলেও এই ধরনের কোনো পদের অস্তিত্ব রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে আগেও ছিল না এবং এখনো নেই। পদটি ছিল দ্বিতীয় শ্রেণির। জনবল কাঠামো প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে এ ধরনের পদোন্নতিকে অবৈধ বলা হয়েছে।

এদিকে পদোন্নতির পর তাদের দায়িত্ব, সুবিধাদি, কর্মপরিধি, এবং নিজ বেতন স্কেল অপরিবর্তিত রাখার কথাও বলা হয় ওই আদেশে। পদোন্নতি ঘোষণার পর এসব কর্মচারী জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেড পাওয়ার অধিকারী ছিলেন। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদারকির অভাবে পদোন্নতিপ্রাপ্তদের অধিকাংশই ইচ্ছামতো এক ধাপ ওপরের অষ্টম গ্রেডে উঠে পড়েন। এই ৮৯ জনের মধ্যে বর্তমানে ১২ জন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে কর্মরত আছেন। তারা এখন সপ্তম গ্রেডে বেতনভাতা নিচ্ছেন। তারা এখন পঞ্চম গ্রেড পেতে মরিয়া।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের জনবল কাঠামো ও অর্গানোগ্রাম প্রণয়নে গঠিত কমিটি সম্প্রতি বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর নুরল আলম জনবল কাঠামো প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক। এই কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চলমান জনবলের পদোন্নতি, জ্যেষ্ঠতা, বেতন-সুবিধাদি প্রভৃতি বিষয়ে বিদ্যমান ব্যাপক অসংগতির বিষয়, যা বছরের পর বছর চলে আসছে।

উল্লেখ্য, দেশের অন্য শিক্ষা বোর্ডগুলোর মতো রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড একটি অধ্যাদেশ দ্বারা পরিচালিত স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি-বিধানের আওতায় নিয়ন্ত্রিত। যে কোনো সিদ্ধান্ত বোর্ডসভা ও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।

জনবল কাঠামো প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ৮৯ কর্মচারীকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল ২০০২ সালের ৩০ অক্টোবর তৎকালীন মুখ্যসচিব কালাম সিদ্দিকীর একটি পত্রের ওপর ভিত্তি করে। ওই পত্রটি তৎকালীন মুখ্যসচিব সংস্থাপন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন বিভাগে পাঠান। পত্রটিতে তিনি উল্লেখ করেন, মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরে নিু ও উচ্চমান, শাখা সহকারী, স্টেনো টাইপিস্ট কাম সাঁটমুদ্রাক্ষরিক প্রভৃতি ধরনের পদ এখনো বিদ্যমান আছে। কিন্তু প্রযুক্তির প্রসার ও ব্যবহার বাড়ায় পদগুলোর ধরন পরিবর্তন করা দরকার। এতে কম জনবল দিয়ে অধিক মাত্রায় কার্যসম্পাদন করা সম্ভব। সাবেক মুখ্য সচিবের ওই পত্রে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়কে বলা হয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মরত সাঁটমুদ্রাক্ষরিক, নিুমান ও উচ্চমান সহকারী, সাঁটলিপিকার, অফিস ও হিসাব সহকারী প্রভৃতি পদের নাম পরিবর্তন করে কম্পিউটারের সঙ্গে সংগতি রেখে পদ সৃষ্টি করতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আলোচিত পত্রটি রাজশাহী বোর্ডেও যায় মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে।

এদিকে ওই পত্রটির নির্দেশনা মোতাবেক রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড পুরোনো পদগুলোকে কম্পিউটারের সঙ্গে মিল রেখে নতুন পদের নাম জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত না করে চতুর্থ ও তৃতীয় শ্রেণির নিুমান ও উচ্চমান সহকারীসহ সাঁটমুদ্রাক্ষরিক ও সাঁটলিপিকার অফিস ও হিসাব সহকারী পদগুলোয় কর্মরতদের এক আদেশে প্রশাসনিক কর্মকর্তা নামে অস্তিত্বহীন পদে পদোন্নতির আদেশ জারি করেন। ফলে এই পদোন্নতিপ্রাপ্তরা পুরোনো সব পদে আগের মতোই কাজ করলেও তাদের সবাই নিজেদের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিতে থাকেন। এতে রাজশাহী বোর্ডে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এখনো সেই বিশৃঙ্খল পরিবেশ বিদ্যমান সেখানে।

জনবল কাঠামো প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী শিক্ষা বোর্ড শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান। কোনো নতুন পদ সৃষ্টি করতে হলে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হলেও তৎকালীন বোর্ড প্রশাসন তা নেয়নি। নিয়ম-বিধি অনুসরণ না করেই ২০১০ সালে এক আদেশে ৮৯ কর্মচারীকে পদোন্নতি দেওয়ার ফলে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তা আজও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে চলছে। আলোচিত পদোন্নতিগুলো কোনোভাবেই যথাযথ নিয়ম মেনে করা হয়নি। এভাবে ঢালাও পদোন্নতি ও পদ সৃষ্টি কর্মকর্তাদের খেয়ালখুশিতে হয়েছে, যাতে একটি বিশেষ গোষ্ঠী লাভবান হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে সাবেক মুখ্যসচিবের আধাসরকারি পত্রটিকে পুঁজি করে পদোন্নতি ও জ্যেষ্ঠতার আদেশ জারি ও কার্যকর করা হলেও ওই পত্রটির সঙ্গে রাজশাহী বোর্ডের এসব পদোন্নতির কোনো সম্পর্কই ছিল না। এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিরীক্ষা করলে বিষয়টিতে ব্যাপক অসংগতি, ত্রুটি ও অনিয়ম ধরা পড়ার কথা। কিন্তু বছরের পর বছর তাও করা হয়নি।

কমিটির প্রতিবেদনের মতামত ও মন্তব্যে বলা হয়েছে, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের জনবল কাঠামোতে কোনোদিনই প্রশাসনিক কর্মকর্তা নামে কোনো পদ ছিল না এবং এখনো নেই। ফলে এই পদটি প্রস্তাবিত জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তির কোনো সুযোগ নেই। পদোন্নতি পাওয়া ৮৯ কর্মকর্তার মধ্যে এখনো যে ১২ জন কর্মকর্তা কর্মরত আছেন, তাদের চাকরির অবস্থা পরিবর্তন, জ্যেষ্ঠতা, সুযোগ-সুবিধা এবং আর পদোন্নতির কোনো সুযোগ নেই। তারা চাকরিজীবন শেষ, চাকরি পরিত্যাগ অথবা মারা গেলে প্রশাসনিক পদ নামের পদটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে শিক্ষা বোর্ড থেকে বিলুপ্ত হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর হাবিবুর রহমান বলেন, ২০১০ সালে পদোন্নতির সময় কারও যোগ্যতা যাচাই করে দেখা হয়নি। ওই পদোন্নতির কারণে শিক্ষা বোর্ডের জনবল কাঠামোতে এখনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নতুন করে একটা জনবল কাঠামো তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। এর মাধ্যমে বোর্ডের জনবল কাঠামোয় শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশা করেন তিনি।

জনবল কাঠামো প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদন

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ৮৯ পদোন্নতি অবৈধ

পদোন্নতি, জ্যেষ্ঠতা ও বেতন-সুবিধাদির ব্যাপক অসংগতি চলে আসছে বছরের পর বছর

আনু মোস্তফা, রাজশাহী

২০১০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ৪৪নং সংস্থাপন স্মারকে একটি বিশেষ অফিস আদেশ জারি করা হয়। এই আদেশে শিক্ষা বোর্ডের শাখা সহকারী, নিুমান ও উচ্চমান সহকারী, হিসাব সহকারী, সাঁটমুদ্রাক্ষরিক, সাঁটলিপিকার এবং সমমানের পদে কর্মরত ৮৯ জন কর্মচারীকে একযোগে ‘প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ নামে একটি অস্তিত্বহীন পদে পদোন্নতিসহ জ্যেষ্ঠতা দেওয়া হয়। এই সুযোগ তারাই লাভ করেন, শিক্ষা বোর্ডে যাদের চাকরি ১৫ বছর পূর্ণ হয়েছিল ওই সময়। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, এত বিপুল সংখ্যায় কর্মচারী একযোগে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেওয়া হলেও এই ধরনের কোনো পদের অস্তিত্ব রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে আগেও ছিল না এবং এখনো নেই। পদটি ছিল দ্বিতীয় শ্রেণির। জনবল কাঠামো প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে এ ধরনের পদোন্নতিকে অবৈধ বলা হয়েছে।

এদিকে পদোন্নতির পর তাদের দায়িত্ব, সুবিধাদি, কর্মপরিধি, এবং নিজ বেতন স্কেল অপরিবর্তিত রাখার কথাও বলা হয় ওই আদেশে। পদোন্নতি ঘোষণার পর এসব কর্মচারী জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেড পাওয়ার অধিকারী ছিলেন। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদারকির অভাবে পদোন্নতিপ্রাপ্তদের অধিকাংশই ইচ্ছামতো এক ধাপ ওপরের অষ্টম গ্রেডে উঠে পড়েন। এই ৮৯ জনের মধ্যে বর্তমানে ১২ জন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে কর্মরত আছেন। তারা এখন সপ্তম গ্রেডে বেতনভাতা নিচ্ছেন। তারা এখন পঞ্চম গ্রেড পেতে মরিয়া।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের জনবল কাঠামো ও অর্গানোগ্রাম প্রণয়নে গঠিত কমিটি সম্প্রতি বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর নুরল আলম জনবল কাঠামো প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক। এই কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চলমান জনবলের পদোন্নতি, জ্যেষ্ঠতা, বেতন-সুবিধাদি প্রভৃতি বিষয়ে বিদ্যমান ব্যাপক অসংগতির বিষয়, যা বছরের পর বছর চলে আসছে।

উল্লেখ্য, দেশের অন্য শিক্ষা বোর্ডগুলোর মতো রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড একটি অধ্যাদেশ দ্বারা পরিচালিত স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি-বিধানের আওতায় নিয়ন্ত্রিত। যে কোনো সিদ্ধান্ত বোর্ডসভা ও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।

জনবল কাঠামো প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ৮৯ কর্মচারীকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল ২০০২ সালের ৩০ অক্টোবর তৎকালীন মুখ্যসচিব কালাম সিদ্দিকীর একটি পত্রের ওপর ভিত্তি করে। ওই পত্রটি তৎকালীন মুখ্যসচিব সংস্থাপন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন বিভাগে পাঠান। পত্রটিতে তিনি উল্লেখ করেন, মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরে নিু ও উচ্চমান, শাখা সহকারী, স্টেনো টাইপিস্ট কাম সাঁটমুদ্রাক্ষরিক প্রভৃতি ধরনের পদ এখনো বিদ্যমান আছে। কিন্তু প্রযুক্তির প্রসার ও ব্যবহার বাড়ায় পদগুলোর ধরন পরিবর্তন করা দরকার। এতে কম জনবল দিয়ে অধিক মাত্রায় কার্যসম্পাদন করা সম্ভব। সাবেক মুখ্য সচিবের ওই পত্রে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়কে বলা হয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মরত সাঁটমুদ্রাক্ষরিক, নিুমান ও উচ্চমান সহকারী, সাঁটলিপিকার, অফিস ও হিসাব সহকারী প্রভৃতি পদের নাম পরিবর্তন করে কম্পিউটারের সঙ্গে সংগতি রেখে পদ সৃষ্টি করতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আলোচিত পত্রটি রাজশাহী বোর্ডেও যায় মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে।

এদিকে ওই পত্রটির নির্দেশনা মোতাবেক রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড পুরোনো পদগুলোকে কম্পিউটারের সঙ্গে মিল রেখে নতুন পদের নাম জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত না করে চতুর্থ ও তৃতীয় শ্রেণির নিুমান ও উচ্চমান সহকারীসহ সাঁটমুদ্রাক্ষরিক ও সাঁটলিপিকার অফিস ও হিসাব সহকারী পদগুলোয় কর্মরতদের এক আদেশে প্রশাসনিক কর্মকর্তা নামে অস্তিত্বহীন পদে পদোন্নতির আদেশ জারি করেন। ফলে এই পদোন্নতিপ্রাপ্তরা পুরোনো সব পদে আগের মতোই কাজ করলেও তাদের সবাই নিজেদের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিতে থাকেন। এতে রাজশাহী বোর্ডে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এখনো সেই বিশৃঙ্খল পরিবেশ বিদ্যমান সেখানে।

জনবল কাঠামো প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী শিক্ষা বোর্ড শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান। কোনো নতুন পদ সৃষ্টি করতে হলে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হলেও তৎকালীন বোর্ড প্রশাসন তা নেয়নি। নিয়ম-বিধি অনুসরণ না করেই ২০১০ সালে এক আদেশে ৮৯ কর্মচারীকে পদোন্নতি দেওয়ার ফলে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তা আজও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে চলছে। আলোচিত পদোন্নতিগুলো কোনোভাবেই যথাযথ নিয়ম মেনে করা হয়নি। এভাবে ঢালাও পদোন্নতি ও পদ সৃষ্টি কর্মকর্তাদের খেয়ালখুশিতে হয়েছে, যাতে একটি বিশেষ গোষ্ঠী লাভবান হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে সাবেক মুখ্যসচিবের আধাসরকারি পত্রটিকে পুঁজি করে পদোন্নতি ও জ্যেষ্ঠতার আদেশ জারি ও কার্যকর করা হলেও ওই পত্রটির সঙ্গে রাজশাহী বোর্ডের এসব পদোন্নতির কোনো সম্পর্কই ছিল না। এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিরীক্ষা করলে বিষয়টিতে ব্যাপক অসংগতি, ত্রুটি ও অনিয়ম ধরা পড়ার কথা। কিন্তু বছরের পর বছর তাও করা হয়নি।

কমিটির প্রতিবেদনের মতামত ও মন্তব্যে বলা হয়েছে, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের জনবল কাঠামোতে কোনোদিনই প্রশাসনিক কর্মকর্তা নামে কোনো পদ ছিল না এবং এখনো নেই। ফলে এই পদটি প্রস্তাবিত জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তির কোনো সুযোগ নেই। পদোন্নতি পাওয়া ৮৯ কর্মকর্তার মধ্যে এখনো যে ১২ জন কর্মকর্তা কর্মরত আছেন, তাদের চাকরির অবস্থা পরিবর্তন, জ্যেষ্ঠতা, সুযোগ-সুবিধা এবং আর পদোন্নতির কোনো সুযোগ নেই। তারা চাকরিজীবন শেষ, চাকরি পরিত্যাগ অথবা মারা গেলে প্রশাসনিক পদ নামের পদটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে শিক্ষা বোর্ড থেকে বিলুপ্ত হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর হাবিবুর রহমান বলেন, ২০১০ সালে পদোন্নতির সময় কারও যোগ্যতা যাচাই করে দেখা হয়নি। ওই পদোন্নতির কারণে শিক্ষা বোর্ডের জনবল কাঠামোতে এখনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নতুন করে একটা জনবল কাঠামো তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। এর মাধ্যমে বোর্ডের জনবল কাঠামোয় শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশা করেন তিনি।