আইবিএর ভাইভায় এগিয়ে থাকবে যেভাবে

জাওয়াদুল ইসলাম

প্রতীকী ছবি

আইবিএর লিখিত পরীক্ষার পর ভাইভা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় যাঁরা কৃতকার্য হয় তারাই ভাইভায় বসতে পারে। লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পাশাপাশি ভাইভার প্রস্তুতি নেওয়ার সঠিক সময় এখনই। আজ থাকছে আইবিএর ভাইভায় এগিয়ে থাকার উপায় নিয়ে আলোচনা।

ভাইভায় কমন কিছু প্রশ্ন করা হয়। যেমন ‘Tell us something about yourself’। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই আমরা আমাদের নাম, কোন স্কুল বা কোন কলেজ থেকে এসেছি, কোন জায়গা থেকে এসেছি, আমার কী পছন্দ, কী করতে ভালোবাসি—এগুলো নিয়ে একটা ছোট পরিচয় দিতে হয়। বাবার নাম, মায়ের নাম, বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল ইত্যাদি তথ্য, সনদ, পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেখেই জানতে পারবে। তাই এগুলো বলার দরকার নেই। ভাইভা বোর্ড যেটা জানতে আগ্রহী, সেটা হলো আমি মানুষ হিসেবে কেমন। এরপর তাঁরা জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি আইবিএতে কেন পড়তে চাও?’ তারপর জিজ্ঞেস করেন, ‘আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে তুমি নিজেকে কোথায় দেখতে চাও?’ এমন প্রচুর কমন প্রশ্ন থাকে।

ঘরে বসেই অনুশীলন  
অনেকে বলেন, মৌখিক পরীক্ষার প্রশ্নগুলোর উত্তর আয়নায় অনুশীলন করে নিতে হয়। এটা আসলেই অনেক কাজে দেয়। আর বডি ল্যাংগুয়েজ ঠিক রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কোন বডি ল্যাংগুয়েজ থেকে স্মার্টনেস, কোন বডি ল্যাংগুয়েজ থেকে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ পায়, তা জানতে হবে। চোখে চোখ রেখে কথা বলতে হবে। আমি সারাক্ষণ একজনের দিকে তাকিয়ে আছি, নাকি সবার দিকে তাকাচ্ছি—এগুলো তাঁরা খেয়াল করেন। আমি জড়সড় হয়ে বসে আছি, নাকি সাবলীলভাবে বসে আছি, এগুলোও তাঁরা দেখেন। তাই এগুলো ঘরে বসেই অনুশীলন করে যাওয়া উচিত।

আলাদা আলাদা প্রশ্ন
কমন প্রশ্নগুলো যে সবাইকে করবেন, এমন কোনো কথা নেই। অনেককে অনেক আলাদা প্রশ্ন করতেই পারে। আমার পুরো অনুশীলনের মধ্যে খালি একটা প্রশ্নই কমন পেয়েছিলাম, সেটা হচ্ছে ‘Tell us something about yourself’। এর পরের প্রশ্নগুলো ছিল পুরোই প্রশ্ন-উত্তরনির্ভর। ভাইভা বোর্ড আমার সাধারণ জ্ঞান পরীক্ষা করেছিলেন। যেমন তাঁরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, আইবিএ সম্পর্কে একটা খারাপ দিক বলো, যেটা তুমি জানো। তারপর বলেছিলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে একটা ভালো কিছু বলো। ফিফা বিশ্বকাপ, ইউক্রেন যুদ্ধসহ অনেক প্রশ্নই করেছিলেন। আমার মৌখিক পরীক্ষা ১৫ মিনিট ধরে হয়েছিল কিন্তু অনেকের মৌখিক পরীক্ষা ৫ মিনিটও হয়েছে। অনেককে অনেক কঠিনভাবে ঝালাই করেছেন। তাঁরা প্রধানত এটা দেখার চেষ্টা করেন একজন মানুষ কতটা চাপের মুখে কতখানি মনোবল নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। একজন মানুষ আইবিএর চাপ সামলাতে পারবে নাকি, তা দেখেন। আর দেখার চেষ্টা করেন অহংকারী কি না, রাজনৈতিক যোগসূত্র আছে কি না–এগুলো পরীক্ষা করে ছাত্র বাছাইয়ের চেষ্টা করেন। চেষ্টা করবে তোমার মধ্যে যেন ঔদ্ধত্য কাজ না করে বা আমি যেন তাদের না বোঝাই যে আইবিএ আমার প্রথম পছন্দ না। তাঁদের বোঝাবে যে তুমি আইবিএতেই পড়তে চাও। এখানে আসনসংখ্যা খুবই কম, প্রতিটি আসনই মূল্যবান। আর তুমি এটা পাওয়ার জন্য মরিয়া।

ভাইভা বোর্ডে স্মার্টলি বসবে
ভাইভা বোর্ডে স্মার্টলি বসবে, পায়ের ওপর পা তুলে বসা যাবে না। অবশ্যই গলা উঁচু করে কথা বলা যাবে না। ড্রেস কোড বলতে কোট-টাই পরতে হবে তা নয়। যেই ফরমাল ড্রেসে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে, সেটাই পরবে। আমি ফুল হাতা শার্ট, ফরমাল প্যান্ট, বেল্ট, শু পরেছিলাম। বেল্ট আর জুতার রং একই হতে হবে। চুলের কাট ঠিকঠাক হতে হবে।

জাওয়াদুল ইসলাম, ২য় স্থান অধিকারী, ঢাবি আইবিএ ২০২১-২২

অনুলিখন: ফরিদা আক্তার রুবি

আইবিএর ভাইভায় এগিয়ে থাকবে যেভাবে

জাওয়াদুল ইসলাম

প্রতীকী ছবি

আইবিএর লিখিত পরীক্ষার পর ভাইভা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় যাঁরা কৃতকার্য হয় তারাই ভাইভায় বসতে পারে। লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পাশাপাশি ভাইভার প্রস্তুতি নেওয়ার সঠিক সময় এখনই। আজ থাকছে আইবিএর ভাইভায় এগিয়ে থাকার উপায় নিয়ে আলোচনা।

ভাইভায় কমন কিছু প্রশ্ন করা হয়। যেমন ‘Tell us something about yourself’। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই আমরা আমাদের নাম, কোন স্কুল বা কোন কলেজ থেকে এসেছি, কোন জায়গা থেকে এসেছি, আমার কী পছন্দ, কী করতে ভালোবাসি—এগুলো নিয়ে একটা ছোট পরিচয় দিতে হয়। বাবার নাম, মায়ের নাম, বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল ইত্যাদি তথ্য, সনদ, পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেখেই জানতে পারবে। তাই এগুলো বলার দরকার নেই। ভাইভা বোর্ড যেটা জানতে আগ্রহী, সেটা হলো আমি মানুষ হিসেবে কেমন। এরপর তাঁরা জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি আইবিএতে কেন পড়তে চাও?’ তারপর জিজ্ঞেস করেন, ‘আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে তুমি নিজেকে কোথায় দেখতে চাও?’ এমন প্রচুর কমন প্রশ্ন থাকে।

ঘরে বসেই অনুশীলন  
অনেকে বলেন, মৌখিক পরীক্ষার প্রশ্নগুলোর উত্তর আয়নায় অনুশীলন করে নিতে হয়। এটা আসলেই অনেক কাজে দেয়। আর বডি ল্যাংগুয়েজ ঠিক রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কোন বডি ল্যাংগুয়েজ থেকে স্মার্টনেস, কোন বডি ল্যাংগুয়েজ থেকে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ পায়, তা জানতে হবে। চোখে চোখ রেখে কথা বলতে হবে। আমি সারাক্ষণ একজনের দিকে তাকিয়ে আছি, নাকি সবার দিকে তাকাচ্ছি—এগুলো তাঁরা খেয়াল করেন। আমি জড়সড় হয়ে বসে আছি, নাকি সাবলীলভাবে বসে আছি, এগুলোও তাঁরা দেখেন। তাই এগুলো ঘরে বসেই অনুশীলন করে যাওয়া উচিত।

আলাদা আলাদা প্রশ্ন
কমন প্রশ্নগুলো যে সবাইকে করবেন, এমন কোনো কথা নেই। অনেককে অনেক আলাদা প্রশ্ন করতেই পারে। আমার পুরো অনুশীলনের মধ্যে খালি একটা প্রশ্নই কমন পেয়েছিলাম, সেটা হচ্ছে ‘Tell us something about yourself’। এর পরের প্রশ্নগুলো ছিল পুরোই প্রশ্ন-উত্তরনির্ভর। ভাইভা বোর্ড আমার সাধারণ জ্ঞান পরীক্ষা করেছিলেন। যেমন তাঁরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, আইবিএ সম্পর্কে একটা খারাপ দিক বলো, যেটা তুমি জানো। তারপর বলেছিলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে একটা ভালো কিছু বলো। ফিফা বিশ্বকাপ, ইউক্রেন যুদ্ধসহ অনেক প্রশ্নই করেছিলেন। আমার মৌখিক পরীক্ষা ১৫ মিনিট ধরে হয়েছিল কিন্তু অনেকের মৌখিক পরীক্ষা ৫ মিনিটও হয়েছে। অনেককে অনেক কঠিনভাবে ঝালাই করেছেন। তাঁরা প্রধানত এটা দেখার চেষ্টা করেন একজন মানুষ কতটা চাপের মুখে কতখানি মনোবল নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। একজন মানুষ আইবিএর চাপ সামলাতে পারবে নাকি, তা দেখেন। আর দেখার চেষ্টা করেন অহংকারী কি না, রাজনৈতিক যোগসূত্র আছে কি না–এগুলো পরীক্ষা করে ছাত্র বাছাইয়ের চেষ্টা করেন। চেষ্টা করবে তোমার মধ্যে যেন ঔদ্ধত্য কাজ না করে বা আমি যেন তাদের না বোঝাই যে আইবিএ আমার প্রথম পছন্দ না। তাঁদের বোঝাবে যে তুমি আইবিএতেই পড়তে চাও। এখানে আসনসংখ্যা খুবই কম, প্রতিটি আসনই মূল্যবান। আর তুমি এটা পাওয়ার জন্য মরিয়া।

ভাইভা বোর্ডে স্মার্টলি বসবে
ভাইভা বোর্ডে স্মার্টলি বসবে, পায়ের ওপর পা তুলে বসা যাবে না। অবশ্যই গলা উঁচু করে কথা বলা যাবে না। ড্রেস কোড বলতে কোট-টাই পরতে হবে তা নয়। যেই ফরমাল ড্রেসে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে, সেটাই পরবে। আমি ফুল হাতা শার্ট, ফরমাল প্যান্ট, বেল্ট, শু পরেছিলাম। বেল্ট আর জুতার রং একই হতে হবে। চুলের কাট ঠিকঠাক হতে হবে।

জাওয়াদুল ইসলাম, ২য় স্থান অধিকারী, ঢাবি আইবিএ ২০২১-২২

অনুলিখন: ফরিদা আক্তার রুবি