এমন লোডশেডিং আগে দেখেনি ঢাবি শিক্ষার্থীরা

 

আমজাদ হোসেন হৃদয়

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে দেশের বিদ্যুৎ খাতে। তীব্র গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। যার প্রভাব পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও। যান্ত্রিক ত্রুটি ছাড়া যেখানে লোডশেডিং হতোই না সেখানে লোডশেডিং হচ্ছে একাধিকবার। বিশেষ করে আবাসিক হলগুলোতে এ সমস্যা বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, স্যার এ এফ রহমান হল, শামসুন্নাহার হলসহ কয়েকটি হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। পাশাপাশি শ্রেণি কক্ষ এবং প্রশাসনিক ভবনেও লোডশেডিং হচ্ছে বলে জানা গেছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভাষ্য, এতে তাদের কোনো হাত নেই। তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র নেই। জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং নিয়ন্ত্রণ করা হয়।শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে গত পাঁচ বছরে এমন লোডশেডিং দেখেননি তারা। দিনে দুই থেকে তিন বার লোডশেডিং হচ্ছে। ঘণ্টা হিসেবে দিনে ২-৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। বিদ্যুৎ না থাকায় বিঘ্ন ঘটছে পড়াশোনায়। দ্রুত এ সংকট সমাধানের দাবি জানান তারা।

সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রাসেল সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত পাঁচ বছরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমন লোডশেডিং দেখিনি। দিনের মধ্যে কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যায়। যার ফলে আমাদের পড়াশোনায় ব্যাপক বিঘ্ন ঘটছে। দ্রুত এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে প্রশাসন পদক্ষেপ নেবে বলে আমরা আশা করি।শামসুন্নাহার হলের শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার বলেন, সম্প্রতি হলে লোডশেডিং আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। ক্যাম্পাসে আছি প্রায় তিন বছর হয়ে গেছে। কখনো যান্ত্রিক ত্রুটি ছাড়া পাঁচ মিনিটের জন্যও বিদ্যুৎ যেতে দেখিনি। কিন্তু কিছুদিন ধরে প্রতিদিনই একাধিকবার লোডশেডিং হচ্ছে। হলের রিডিং রুমগুলোতে বিদ্যুৎতের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত পড়াশোনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আসলাম উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি প্রতিদিনই বিদ্যুৎ বিপর্যয় হচ্ছে। অন্তত এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। ক্লাসেও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছি। আমরা এ পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান চাই।প্রশাসনিক ভবনের এক কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে আমাদের এখানেও লোডশেডিং হচ্ছে। তবে আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা থাকায় তেমন সমস্যা হচ্ছে না।

লোডশেডিংয়ের বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্কেল বিদ্যুৎ ও বিদ্যুৎ জোন-১ এর প্রধান লুৎফর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের নিজস্ব কোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র নেই, জাতীয় গ্রিড থেকে আমরা বিদ্যুৎ পাই। দেশের জ্বালানি সংকটের প্রভাব ঢাবিতেও পড়ছে। জাতীয়ভাবেই বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। কখন কোথায় বিদ্যুৎ থাকবে না সেটা তারাই নির্ধারণ করেন।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো হাত নেই। রাষ্ট্র বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। এটা সবারই জানা যে গ্লোবাল ক্রাইসিসের কারণে এমন হচ্ছে।

এর আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে অফিস সময় এক ঘণ্টা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এক ঘণ্টা কমে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। যা এখনো বলবৎ রয়েছে।

এইচআর/এসএসএইচ

এমন লোডশেডিং আগে দেখেনি ঢাবি শিক্ষার্থীরা

 

আমজাদ হোসেন হৃদয়

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে দেশের বিদ্যুৎ খাতে। তীব্র গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। যার প্রভাব পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও। যান্ত্রিক ত্রুটি ছাড়া যেখানে লোডশেডিং হতোই না সেখানে লোডশেডিং হচ্ছে একাধিকবার। বিশেষ করে আবাসিক হলগুলোতে এ সমস্যা বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, স্যার এ এফ রহমান হল, শামসুন্নাহার হলসহ কয়েকটি হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। পাশাপাশি শ্রেণি কক্ষ এবং প্রশাসনিক ভবনেও লোডশেডিং হচ্ছে বলে জানা গেছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভাষ্য, এতে তাদের কোনো হাত নেই। তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র নেই। জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং নিয়ন্ত্রণ করা হয়।শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে গত পাঁচ বছরে এমন লোডশেডিং দেখেননি তারা। দিনে দুই থেকে তিন বার লোডশেডিং হচ্ছে। ঘণ্টা হিসেবে দিনে ২-৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। বিদ্যুৎ না থাকায় বিঘ্ন ঘটছে পড়াশোনায়। দ্রুত এ সংকট সমাধানের দাবি জানান তারা।

সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রাসেল সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত পাঁচ বছরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমন লোডশেডিং দেখিনি। দিনের মধ্যে কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যায়। যার ফলে আমাদের পড়াশোনায় ব্যাপক বিঘ্ন ঘটছে। দ্রুত এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে প্রশাসন পদক্ষেপ নেবে বলে আমরা আশা করি।শামসুন্নাহার হলের শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার বলেন, সম্প্রতি হলে লোডশেডিং আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। ক্যাম্পাসে আছি প্রায় তিন বছর হয়ে গেছে। কখনো যান্ত্রিক ত্রুটি ছাড়া পাঁচ মিনিটের জন্যও বিদ্যুৎ যেতে দেখিনি। কিন্তু কিছুদিন ধরে প্রতিদিনই একাধিকবার লোডশেডিং হচ্ছে। হলের রিডিং রুমগুলোতে বিদ্যুৎতের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত পড়াশোনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আসলাম উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি প্রতিদিনই বিদ্যুৎ বিপর্যয় হচ্ছে। অন্তত এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। ক্লাসেও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছি। আমরা এ পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান চাই।প্রশাসনিক ভবনের এক কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে আমাদের এখানেও লোডশেডিং হচ্ছে। তবে আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা থাকায় তেমন সমস্যা হচ্ছে না।

লোডশেডিংয়ের বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্কেল বিদ্যুৎ ও বিদ্যুৎ জোন-১ এর প্রধান লুৎফর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের নিজস্ব কোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র নেই, জাতীয় গ্রিড থেকে আমরা বিদ্যুৎ পাই। দেশের জ্বালানি সংকটের প্রভাব ঢাবিতেও পড়ছে। জাতীয়ভাবেই বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। কখন কোথায় বিদ্যুৎ থাকবে না সেটা তারাই নির্ধারণ করেন।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো হাত নেই। রাষ্ট্র বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। এটা সবারই জানা যে গ্লোবাল ক্রাইসিসের কারণে এমন হচ্ছে।

এর আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে অফিস সময় এক ঘণ্টা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এক ঘণ্টা কমে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। যা এখনো বলবৎ রয়েছে।

এইচআর/এসএসএইচ