দ্রুত শেখার কার্যকরী কৌশল

আলভি আহমেদ

দ্রুত শেখার বিষয়টি হলো সময় ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দিয়ে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জনের একটি প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে খুব সহজেই প্রচুর তথ্য জানা এবং মনে রাখা যায়। দ্রুত শেখার ক্ষমতা একটি টিমওয়ার্কেও বেশ কাজে আসে। কিছু কার্যকরী টেকনিক, যা তোমাকে দ্রুত শিখতে সাহায্য করবে:

লক্ষ্য নির্ধারণ করো 
একটা পড়া কেন পড়তে হবে অথবা কেন শিখতে হবে, এ ব্যাপারটা শুরুতেই ঠিক করে নেওয়া প্রয়োজন। শেখার ব্যাপারটা কেবল সময় কাটানোর জন্য হলে সেটার জন্য তেমন একটা আগ্রহ থাকে না। এ ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট লক্ষ্য ঠিক করে রাখা তোমাকে ফোকাসড এবং এনারজেটিক রাখবে। যাতে বারবার ডিস্ট্র্যাক্ট হলেও তোমার নির্ধারিত লক্ষ্য তোমাকে সেই স্বপ্নের পথে অবিচল রাখে।

হাতেকলমে নোট করো 
কম্পিউটারাইজড ডিজিটাল নোট করা দ্রুত ও সহজ একটি মাধ্যম। কিন্তু হাতেকলমে নোট করলে সেটা একটি টপিককে আরও গভীরভাবে শিখতে, বুঝতে এবং শেখার দক্ষতা বিকাশে সাহায্য করে। নোট যত ভালো হবে, তুমিও তত দ্রুত শিখতে পারবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় রঙিন কালি, হাইলাইটার এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ নিয়ে পড়তে বসো।

শেখো এবং শেখাও
শিক্ষকেরা যখন ক্লাস নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হন, তখন তাঁরা একটি টপিকের জিস্ট এবং কীভাবে সেটা একটা সঠিক ফ্রেমওয়ার্কে স্পিচ দেওয়া যায়, সেটার দিকে গুরুত্ব দেন। ঠিক একইভাবে আমাদের তৈরি করা নোট নিয়ে গ্রুপ স্টাডি করলে শেখার গতি বাড়িয়ে আরও কার্যকর পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত হওয়া যায়। কারণ, এতে অন্য কাউকে সরাসরি শেখানোর সুযোগ তৈরি হয়, যেটা তোমার পড়ার গতিকে আরও বহুগুণে অগ্রসর করে তুলবে।

নিজেই নিমোনিক বানাও 
তোমার যদি প্রচুর তথ্য দ্রুত মুখস্থ করার প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে একটি টপিককে ভেঙে ছোট করে নিমোনিক ব্যবহার করে পড়াটা অত্যন্ত কার্যকর। নিমোনিক হতে পারে একটি টপিকের বিভিন্ন পয়েন্টগুলোর প্রথম অক্ষর, শব্দ, প্যাটার্ন কিংবা কবিতা আকারে লাইন।এখন অনেক বইয়ে সরাসরি নিমোনিক দেওয়া থাকে। যেকোনো টপিক নিয়ে নিজেই বানিয়ে ফেলো মনে রাখার টেকনিক। বিরতি নিয়ে পড়ো নতুন কিছু শেখার জন্য অতিরিক্ত প্রেশার এবং ওভারলোড মস্তিষ্ককে তথ্য স্টোর বা এক্সিকিউট করতে বাধা দেয়। কুঠারে ধার না দিয়ে একটানা গাছ কাটার গল্পটা আমরা অনেকেই জানি। ঠিক তেমনি একটানা দীর্ঘসময় না পড়ে মাঝখানে বিরতি নিয়ে পড়া যেতে পারে। যেমন একটানা ২৫ মিনিট পড়ে ৫ মিনিট বিরতি বা ন্যাপ নিতে পারো। এই ২৫ মিনিট পড়ার সময়টার ব্যক্তিভেদে ভিন্নতা থাকে, হয় কম নয়তো বেশি।

বিভিন্ন আঙ্গিকে অনুশীলন করো
একটি পড়া বারবার লিখে পড়াটা বেশ কাজে আসে। এ ক্ষেত্রে একাধিকবার অনুশীলন করলেও সেটা হওয়া উচিত বিভিন্ন আঙ্গিকে। যেমন ইন্টারনেটে একটি টপিকের ভালো ভালো রিসোর্স পাওয়া যায়। চার্ট, ডায়াগ্রাম অথবা প্রাসঙ্গিক চিত্র, অর্থাৎ যেটা তোমার শেখাকে আরও সহজ ও প্রাণবন্ত করে আয়ত্ত করতে সহজ করে তুলবে, সেভাবেই প্র্যাকটিস করো। শেখার জন্য তথ্যকে তোমার আগের জানা তথ্যের সঙ্গে অথবা রিয়েল লাইফ উদাহরণের সঙ্গে রিলেট করতে পারো।

দ্রুত নতুন কিছু শিখতে পারার মাধ্যমে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান এবং চিন্তার বিকাশ ঘটিয়ে তোমাকে আরও দক্ষ ও প্রোডাকটিভ করে তুলবে। নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে লক্ষ্য অর্জনে নিজস্ব এই দক্ষতা আরও আত্মবিশ্বাসী করবে। আর জানোই তো, ‘বিজয়ীরা ভিন্ন কিছু করে না, তারা একই কাজ ভিন্নভাবে করে!’

আলভি আহমেদ, সহ-প্রতিষ্ঠাতা, ম্যাথট্রনিক্স

দ্রুত শেখার কার্যকরী কৌশল

আলভি আহমেদ

দ্রুত শেখার বিষয়টি হলো সময় ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দিয়ে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জনের একটি প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে খুব সহজেই প্রচুর তথ্য জানা এবং মনে রাখা যায়। দ্রুত শেখার ক্ষমতা একটি টিমওয়ার্কেও বেশ কাজে আসে। কিছু কার্যকরী টেকনিক, যা তোমাকে দ্রুত শিখতে সাহায্য করবে:

লক্ষ্য নির্ধারণ করো 
একটা পড়া কেন পড়তে হবে অথবা কেন শিখতে হবে, এ ব্যাপারটা শুরুতেই ঠিক করে নেওয়া প্রয়োজন। শেখার ব্যাপারটা কেবল সময় কাটানোর জন্য হলে সেটার জন্য তেমন একটা আগ্রহ থাকে না। এ ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট লক্ষ্য ঠিক করে রাখা তোমাকে ফোকাসড এবং এনারজেটিক রাখবে। যাতে বারবার ডিস্ট্র্যাক্ট হলেও তোমার নির্ধারিত লক্ষ্য তোমাকে সেই স্বপ্নের পথে অবিচল রাখে।

হাতেকলমে নোট করো 
কম্পিউটারাইজড ডিজিটাল নোট করা দ্রুত ও সহজ একটি মাধ্যম। কিন্তু হাতেকলমে নোট করলে সেটা একটি টপিককে আরও গভীরভাবে শিখতে, বুঝতে এবং শেখার দক্ষতা বিকাশে সাহায্য করে। নোট যত ভালো হবে, তুমিও তত দ্রুত শিখতে পারবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় রঙিন কালি, হাইলাইটার এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ নিয়ে পড়তে বসো।

শেখো এবং শেখাও
শিক্ষকেরা যখন ক্লাস নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হন, তখন তাঁরা একটি টপিকের জিস্ট এবং কীভাবে সেটা একটা সঠিক ফ্রেমওয়ার্কে স্পিচ দেওয়া যায়, সেটার দিকে গুরুত্ব দেন। ঠিক একইভাবে আমাদের তৈরি করা নোট নিয়ে গ্রুপ স্টাডি করলে শেখার গতি বাড়িয়ে আরও কার্যকর পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত হওয়া যায়। কারণ, এতে অন্য কাউকে সরাসরি শেখানোর সুযোগ তৈরি হয়, যেটা তোমার পড়ার গতিকে আরও বহুগুণে অগ্রসর করে তুলবে।

নিজেই নিমোনিক বানাও 
তোমার যদি প্রচুর তথ্য দ্রুত মুখস্থ করার প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে একটি টপিককে ভেঙে ছোট করে নিমোনিক ব্যবহার করে পড়াটা অত্যন্ত কার্যকর। নিমোনিক হতে পারে একটি টপিকের বিভিন্ন পয়েন্টগুলোর প্রথম অক্ষর, শব্দ, প্যাটার্ন কিংবা কবিতা আকারে লাইন।এখন অনেক বইয়ে সরাসরি নিমোনিক দেওয়া থাকে। যেকোনো টপিক নিয়ে নিজেই বানিয়ে ফেলো মনে রাখার টেকনিক। বিরতি নিয়ে পড়ো নতুন কিছু শেখার জন্য অতিরিক্ত প্রেশার এবং ওভারলোড মস্তিষ্ককে তথ্য স্টোর বা এক্সিকিউট করতে বাধা দেয়। কুঠারে ধার না দিয়ে একটানা গাছ কাটার গল্পটা আমরা অনেকেই জানি। ঠিক তেমনি একটানা দীর্ঘসময় না পড়ে মাঝখানে বিরতি নিয়ে পড়া যেতে পারে। যেমন একটানা ২৫ মিনিট পড়ে ৫ মিনিট বিরতি বা ন্যাপ নিতে পারো। এই ২৫ মিনিট পড়ার সময়টার ব্যক্তিভেদে ভিন্নতা থাকে, হয় কম নয়তো বেশি।

বিভিন্ন আঙ্গিকে অনুশীলন করো
একটি পড়া বারবার লিখে পড়াটা বেশ কাজে আসে। এ ক্ষেত্রে একাধিকবার অনুশীলন করলেও সেটা হওয়া উচিত বিভিন্ন আঙ্গিকে। যেমন ইন্টারনেটে একটি টপিকের ভালো ভালো রিসোর্স পাওয়া যায়। চার্ট, ডায়াগ্রাম অথবা প্রাসঙ্গিক চিত্র, অর্থাৎ যেটা তোমার শেখাকে আরও সহজ ও প্রাণবন্ত করে আয়ত্ত করতে সহজ করে তুলবে, সেভাবেই প্র্যাকটিস করো। শেখার জন্য তথ্যকে তোমার আগের জানা তথ্যের সঙ্গে অথবা রিয়েল লাইফ উদাহরণের সঙ্গে রিলেট করতে পারো।

দ্রুত নতুন কিছু শিখতে পারার মাধ্যমে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান এবং চিন্তার বিকাশ ঘটিয়ে তোমাকে আরও দক্ষ ও প্রোডাকটিভ করে তুলবে। নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে লক্ষ্য অর্জনে নিজস্ব এই দক্ষতা আরও আত্মবিশ্বাসী করবে। আর জানোই তো, ‘বিজয়ীরা ভিন্ন কিছু করে না, তারা একই কাজ ভিন্নভাবে করে!’

আলভি আহমেদ, সহ-প্রতিষ্ঠাতা, ম্যাথট্রনিক্স