নমুনা ভাইভা: সিভিল সার্ভিসে আসতে চান কেন?

জি, এম, এ, মুনীব
প্রতীকী ছবি

৪০তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন জি, এম, এ, মুনীব। সামনে বিসিএস ভাইভায় যারা অংশগ্রহণ করতে চান তাদের জন্য নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে নমুনা ভাইভা তুলে ধরেছেন তিনি–

জি, এম, এ, মুনীব: অনুমতি নিয়ে ভেতরে ঢুকে সালাম দিলাম।

চেয়ারম্যান স্যার: সালামের উত্তর দিয়ে বসতে বললেন। এরপর আমার কাগজপত্র দেখে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, You are Munib, completed your graduation from BUET in Chemical Engineering?
জি, এম, এ, মুনীব: জি স্যার।

চেয়ারম্যান স্যার: বিসিএস ক্যাডারে পছন্দের তালিকা বলো…
জি, এম, এ, মুনীব: স্যার, প্রথম বিসিএস প্রশাসন, দ্বিতীয় পুলিশ, তৃতীয় শুল্ক ও আবগারি।

চেয়ারম্যান স্যার: বিসিএস প্রশাসন প্রথম পছন্দ কেন?
জি, এম, এ, মুনীব: স্যার, ছোটবেলা থেকে ‘ম্যাজিস্ট্রেট’ শব্দটি আমার ভীষণ প্রিয়। বিসিএস প্রশাসনে সুযোগ পেলে আমি সহকারী কমিশনারের পাশাপাশি ‘নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট’ হিসেবেও কাজ করার সুযোগ পাব। বিসিএস প্রশাসন থেকে সরাসরি দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ আছে। তাই বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার আমার প্রথম পছন্দ।

চেয়ারম্যান স্যার: PATC কী? এটার কাজ কী? কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়?
জি, এম, এ, মুনীব: Public Administration Training Centre। বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের আয়োজন এবং পরিচালনা করে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বিসিএসে নব যোগদানকারী কর্মচারীদের ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্সসহ অন্যান্য দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।

চেয়ারম্যান স্যার: পেছনে একটি ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ছবিটা সম্পর্কে বলো।
জি, এম, এ, মুনীব: (বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘে ভাষণ দিচ্ছিলেন, সেই ছবি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দিচ্ছিলেন সেই ছবি।

চেয়ারম্যান স্যার: বঙ্গবন্ধুর লেখা বই পড়েছ? পড়লে কোনগুলো?
জি, এম, এ, মুনীব: জি স্যার, পড়েছি। বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা এবং আমার দেখা নয়াচীন ৩টি বই-ই পড়েছি।

চেয়ারম্যান স্যার: অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বঙ্গবন্ধু কী বিষয়ে লিখেছেন?
জি, এম, এ, মুনীব: বঙ্গবন্ধুর পূর্বপুরুষ, পরিবার, ছেলেবেলা, শিক্ষাজীবন এবং রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছেন।

চেয়ারম্যান স্যার এক্সটার্নাল-১ স্যারকে প্রশ্ন করতে বললেন।
এক্সটার্নাল-১: E-commerce কী? এর সুবিধা-অসুবিধা কী?

জি, এম, এ, মুনীব: ইলেকট্রনিক কমার্স বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালিত হয়, তা-ই E-commerce। ঘরে বসে অর্ডার করে স্বল্প সময়ে পণ্য পাওয়া যায়, করোনাকালে এই ব্যবস্থা বেশি জনপ্রিয় হয়েছে। মাঝেমধ্যে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নির্দিষ্ট পণ্য না দিয়ে কমদামি/ব্যবহার অযোগ্য পণ্য ডেলিভারি দেয় ইত্যাদি।

জি, এম, এ, মুনীব

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এক্সটার্নাল-২: বঙ্গবন্ধু ১৯৫২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোথায় ছিলেন এবং কী করছিলেন?

জি, এম, এ, মুনীব: তখন ভাষা আন্দোলনের জোর প্রস্তুতি চলছিল, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তখন সর্বস্তরের মানুষের মুখে মুখে। ওই সময় বঙ্গবন্ধু জেলে ছিলেন এবং অসুস্থতার জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতৃবৃন্দ এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নিয়মিত দেখা করছিলেন এবং পরামর্শ নিচ্ছিলেন আন্দোলন বিষয়ে। জেল কর্তৃপক্ষের গোচর হলে তারা বঙ্গবন্ধুকে ফরিদপুর কারাগারে স্থানান্তর করে এবং তিনি সেখানে অনশন শুরু করেন।

চেয়ারম্যান স্যার: এই যে সরকার এত টাকা খরচ করল তোমার পেছনে, তারপরও সিভিল সার্ভিসে আসতে চান কেন?
জি, এম, এ, মুনীব: যে জনগণের টাকায় আমি পড়াশোনা করলাম তাঁদের জন্য কাজ করতে চাই স্যার, আর সিভিল সার্ভিসে থেকে সেই কাজ বেশি সহজ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমার মেধা-মনন, দক্ষতা-যোগ্যতা, পরিশ্রমকে কাজে লাগাতে চাই।

চেয়ারম্যান স্যার: তোমার বাড়ি খুলনাতে তো, কোন উপজেলা?
জি, এম, এ, মুনীব: বটিয়াঘাটা।

চেয়ারম্যান স্যার: এটা কি নতুন উপজেলা?
জি, এম, এ, মুনীব: না স্যার।

চেয়ারম্যান স্যার: আচ্ছা, চুকনগর জায়গাটা চেনো?
জি, এম, এ, মুনীব: জি স্যার।

চেয়ারম্যান স্যার: কীভাবে চেনো? কী হয়েছিল ওখানে?
জি, এম, এ, মুনীব: আমি নিজে চুকনগর বধ্যভূমিতে গিয়েছিলাম স্যার। ওখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ আছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কয়েক হাজার মানুষকে মেরে এখানকার ঘ্যাংরাইল নদীতে ফেলে দেয়।

এরপর চেয়ারম্যান স্যার ও এক্স-২ স্যার অনেক ব্যক্তিগত প্রশ্ন করলেন।

চেয়ারম্যান স্যার: এবার তুমি আসো। আমি ধন্যবাদ আর সালাম দিয়ে বের হয়ে এলাম।

জি, এম, এ, মুনীব,৪০তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত।

অনুলিখন: মোছা. জেলি খাতুন

নমুনা ভাইভা: সিভিল সার্ভিসে আসতে চান কেন?

জি, এম, এ, মুনীব
প্রতীকী ছবি

৪০তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন জি, এম, এ, মুনীব। সামনে বিসিএস ভাইভায় যারা অংশগ্রহণ করতে চান তাদের জন্য নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে নমুনা ভাইভা তুলে ধরেছেন তিনি–

জি, এম, এ, মুনীব: অনুমতি নিয়ে ভেতরে ঢুকে সালাম দিলাম।

চেয়ারম্যান স্যার: সালামের উত্তর দিয়ে বসতে বললেন। এরপর আমার কাগজপত্র দেখে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, You are Munib, completed your graduation from BUET in Chemical Engineering?
জি, এম, এ, মুনীব: জি স্যার।

চেয়ারম্যান স্যার: বিসিএস ক্যাডারে পছন্দের তালিকা বলো…
জি, এম, এ, মুনীব: স্যার, প্রথম বিসিএস প্রশাসন, দ্বিতীয় পুলিশ, তৃতীয় শুল্ক ও আবগারি।

চেয়ারম্যান স্যার: বিসিএস প্রশাসন প্রথম পছন্দ কেন?
জি, এম, এ, মুনীব: স্যার, ছোটবেলা থেকে ‘ম্যাজিস্ট্রেট’ শব্দটি আমার ভীষণ প্রিয়। বিসিএস প্রশাসনে সুযোগ পেলে আমি সহকারী কমিশনারের পাশাপাশি ‘নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট’ হিসেবেও কাজ করার সুযোগ পাব। বিসিএস প্রশাসন থেকে সরাসরি দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ আছে। তাই বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার আমার প্রথম পছন্দ।

চেয়ারম্যান স্যার: PATC কী? এটার কাজ কী? কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়?
জি, এম, এ, মুনীব: Public Administration Training Centre। বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের আয়োজন এবং পরিচালনা করে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বিসিএসে নব যোগদানকারী কর্মচারীদের ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্সসহ অন্যান্য দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।

চেয়ারম্যান স্যার: পেছনে একটি ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ছবিটা সম্পর্কে বলো।
জি, এম, এ, মুনীব: (বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘে ভাষণ দিচ্ছিলেন, সেই ছবি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দিচ্ছিলেন সেই ছবি।

চেয়ারম্যান স্যার: বঙ্গবন্ধুর লেখা বই পড়েছ? পড়লে কোনগুলো?
জি, এম, এ, মুনীব: জি স্যার, পড়েছি। বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা এবং আমার দেখা নয়াচীন ৩টি বই-ই পড়েছি।

চেয়ারম্যান স্যার: অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বঙ্গবন্ধু কী বিষয়ে লিখেছেন?
জি, এম, এ, মুনীব: বঙ্গবন্ধুর পূর্বপুরুষ, পরিবার, ছেলেবেলা, শিক্ষাজীবন এবং রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছেন।

চেয়ারম্যান স্যার এক্সটার্নাল-১ স্যারকে প্রশ্ন করতে বললেন।
এক্সটার্নাল-১: E-commerce কী? এর সুবিধা-অসুবিধা কী?

জি, এম, এ, মুনীব: ইলেকট্রনিক কমার্স বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালিত হয়, তা-ই E-commerce। ঘরে বসে অর্ডার করে স্বল্প সময়ে পণ্য পাওয়া যায়, করোনাকালে এই ব্যবস্থা বেশি জনপ্রিয় হয়েছে। মাঝেমধ্যে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নির্দিষ্ট পণ্য না দিয়ে কমদামি/ব্যবহার অযোগ্য পণ্য ডেলিভারি দেয় ইত্যাদি।

জি, এম, এ, মুনীব

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

এক্সটার্নাল-২: বঙ্গবন্ধু ১৯৫২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোথায় ছিলেন এবং কী করছিলেন?

জি, এম, এ, মুনীব: তখন ভাষা আন্দোলনের জোর প্রস্তুতি চলছিল, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তখন সর্বস্তরের মানুষের মুখে মুখে। ওই সময় বঙ্গবন্ধু জেলে ছিলেন এবং অসুস্থতার জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতৃবৃন্দ এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নিয়মিত দেখা করছিলেন এবং পরামর্শ নিচ্ছিলেন আন্দোলন বিষয়ে। জেল কর্তৃপক্ষের গোচর হলে তারা বঙ্গবন্ধুকে ফরিদপুর কারাগারে স্থানান্তর করে এবং তিনি সেখানে অনশন শুরু করেন।

চেয়ারম্যান স্যার: এই যে সরকার এত টাকা খরচ করল তোমার পেছনে, তারপরও সিভিল সার্ভিসে আসতে চান কেন?
জি, এম, এ, মুনীব: যে জনগণের টাকায় আমি পড়াশোনা করলাম তাঁদের জন্য কাজ করতে চাই স্যার, আর সিভিল সার্ভিসে থেকে সেই কাজ বেশি সহজ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমার মেধা-মনন, দক্ষতা-যোগ্যতা, পরিশ্রমকে কাজে লাগাতে চাই।

চেয়ারম্যান স্যার: তোমার বাড়ি খুলনাতে তো, কোন উপজেলা?
জি, এম, এ, মুনীব: বটিয়াঘাটা।

চেয়ারম্যান স্যার: এটা কি নতুন উপজেলা?
জি, এম, এ, মুনীব: না স্যার।

চেয়ারম্যান স্যার: আচ্ছা, চুকনগর জায়গাটা চেনো?
জি, এম, এ, মুনীব: জি স্যার।

চেয়ারম্যান স্যার: কীভাবে চেনো? কী হয়েছিল ওখানে?
জি, এম, এ, মুনীব: আমি নিজে চুকনগর বধ্যভূমিতে গিয়েছিলাম স্যার। ওখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ আছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কয়েক হাজার মানুষকে মেরে এখানকার ঘ্যাংরাইল নদীতে ফেলে দেয়।

এরপর চেয়ারম্যান স্যার ও এক্স-২ স্যার অনেক ব্যক্তিগত প্রশ্ন করলেন।

চেয়ারম্যান স্যার: এবার তুমি আসো। আমি ধন্যবাদ আর সালাম দিয়ে বের হয়ে এলাম।

জি, এম, এ, মুনীব,৪০তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত।

অনুলিখন: মোছা. জেলি খাতুন