পরিবার তাকিয়ে তাঁদের দিকে, পিএসসির দিকে তাঁরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পিএসসির সামনের অবস্থান কর্মসূচিতে আজ আন্দোলনকারীরা সবাই একটি বিশেষ মুখোশ পরেছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা 

নিজের যোগ্যতার ওপরে বিশ্বাস রেখেই ৪০তম বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছিলেন মং ওয়াই সিং। ক্যাডার হতে না পারলেও নন ক্যাডার লিস্টে নাম এসেছিল তাঁর। এর পরও চাকরির জন্য লড়তে হচ্ছে তাকে। সরকারি কর্ম কমিশন অফিসের সামনের ফুটপাতে বসে স্লোগান দিয়ে বলতে হচ্ছে, নিজের যোগ্যতায় পাওয়া চাকরি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা।

আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে পিএসসির সামনে ছয় দফা দাবি আদায়ে স্লোগান দিতে দেখা যায় চাকরিপ্রত্যাশীদের।মং ওয়াই সিং বলেন, ‘২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনের পর আমরাও মেনে নিয়েছিলাম যোগ্যতা থাকলে আমরা কোথাও আটকাব না। নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেই লেখাপড়া, চাকরি করব আমরা। এই বিশ্বাস নিয়েই পরীক্ষা দিয়েছিলাম, আর এখন আন্দোলনে নামতে হচ্ছে সেই চাকরির জন্য। পরীক্ষা পেছানো, ভাইভার তারিখ বদলানো, রেজাল্ট পেছানো সব মেনে নিয়ে এত দিন বসেছিলাম।’মং বলেন, ‘আমার গোটা পরিবার আমার দিকে তাকিয়ে। আজকে পাঁচটা বছর আমি এই এক নিশ্চিত চাকরির জন্য বসে আছি। এটা আমার প্রাপ্য ছিল, আমি কীভাবে বুঝব এই চাকরি আমাকে দেওয়া হবে না।’

কেউ এসেছেন বাবার সঙ্গে, কারও মা ফুটপাতে বসেছেন ছেলেমেয়েদের সঙ্গে, কোনো চাকরিপ্রত্যাশীর কোলে ছোট বাচ্চা, কেউ নৃগোষ্ঠীর সদস্য। কারও সরকারি চাকরির বয়স পার হয়ে যাচ্ছে। কেউ এখনো কোনো বেসরকারি বা অন্য কোথাও কাজে ঢোকেননি, কেউ সংসারের একমাত্র ব্যক্তি, যার চাকরির আশায় বসে আছে পুরো পরিবার।

তাদের সবার দাবি, যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েও মিলছে না ৪০তম বিসিএস উত্তীর্ণ নন ক্যাডারদের চাকরি। তাই তারা পূর্বের নিয়ম বহাল রেখে সরকারি কর্ম কমিশনের কাছে নিয়োগের দাবি জানান। পিএসসির সামনের অবস্থান কর্মসূচিতে আজ আন্দোলনকারীরা সবাই একটি বিশেষ মুখোশ পরেছেন। চাকরি প্রত্যাশী রাকিবুল হাসান জানান, ‘আমাদের সঙ্গে কেউ কথা বলছে না। প্রশাসন থেকে যদি কিছুটা আশ্বাস, ভরসা পেতাম যে আমাদের পদ দেওয়া হবে তাহলে আমরা চলে যেতাম। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলছেন না। পিএসসি থেকে লিখিতভাবে চাকরি দেওয়ার বিষয়ে জানানো হলে তারা আন্দোলন থামাবেন বলে জানান রাকিবুল।’আন্দোলনকারীদের অনেকেরই দাবি, সরকার বিরোধী কিছু লোকজন এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে যুক্ত, যারা চায় একটা বিশৃঙ্খলা হোক।

একজন আন্দোলনকারী বলেন, ‘আমাদের প্রাপ্য চাকরি আমাদের না দিলে আমরা আন্দোলন করব- এটাই স্বাভাবিক। আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই আমাদের দাবি আদায় করতে চাচ্ছি। কিন্তু এর একটা প্রভাব কি শিক্ষা খাতে বা তরুণদের মধ্যে পড়বে না? তারা কি ভাববে না, সরকারি চাকরির জন্য এত পড়ে কি লাভ? যে কোনো সময়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিতে পারে।’এর ফলে সরকারি চাকরিবিমুখতা বাড়তে পারে বলে মনে করেন উপস্থিত অনেকেই।

গত ৩০ অক্টোবর রোববার থেকে শুরু করে ৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা পাঁচ দিন পিএসসির সামনে লাগাতার অবস্থান করেও পিএসসি থেকে কোনো আশানুরূপ বক্তব্য পায়নি চাকরি প্রত্যাশীরা।তাই ৬ নভেম্বর রোববার সকাল ১০টা থেকে পিএসসির সামনে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন তারা। সেই কর্মসূচিরই দ্বিতীয় দিন আজ।

পরিবার তাকিয়ে তাঁদের দিকে, পিএসসির দিকে তাঁরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পিএসসির সামনের অবস্থান কর্মসূচিতে আজ আন্দোলনকারীরা সবাই একটি বিশেষ মুখোশ পরেছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা 

নিজের যোগ্যতার ওপরে বিশ্বাস রেখেই ৪০তম বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছিলেন মং ওয়াই সিং। ক্যাডার হতে না পারলেও নন ক্যাডার লিস্টে নাম এসেছিল তাঁর। এর পরও চাকরির জন্য লড়তে হচ্ছে তাকে। সরকারি কর্ম কমিশন অফিসের সামনের ফুটপাতে বসে স্লোগান দিয়ে বলতে হচ্ছে, নিজের যোগ্যতায় পাওয়া চাকরি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা।

আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে পিএসসির সামনে ছয় দফা দাবি আদায়ে স্লোগান দিতে দেখা যায় চাকরিপ্রত্যাশীদের।মং ওয়াই সিং বলেন, ‘২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনের পর আমরাও মেনে নিয়েছিলাম যোগ্যতা থাকলে আমরা কোথাও আটকাব না। নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেই লেখাপড়া, চাকরি করব আমরা। এই বিশ্বাস নিয়েই পরীক্ষা দিয়েছিলাম, আর এখন আন্দোলনে নামতে হচ্ছে সেই চাকরির জন্য। পরীক্ষা পেছানো, ভাইভার তারিখ বদলানো, রেজাল্ট পেছানো সব মেনে নিয়ে এত দিন বসেছিলাম।’মং বলেন, ‘আমার গোটা পরিবার আমার দিকে তাকিয়ে। আজকে পাঁচটা বছর আমি এই এক নিশ্চিত চাকরির জন্য বসে আছি। এটা আমার প্রাপ্য ছিল, আমি কীভাবে বুঝব এই চাকরি আমাকে দেওয়া হবে না।’

কেউ এসেছেন বাবার সঙ্গে, কারও মা ফুটপাতে বসেছেন ছেলেমেয়েদের সঙ্গে, কোনো চাকরিপ্রত্যাশীর কোলে ছোট বাচ্চা, কেউ নৃগোষ্ঠীর সদস্য। কারও সরকারি চাকরির বয়স পার হয়ে যাচ্ছে। কেউ এখনো কোনো বেসরকারি বা অন্য কোথাও কাজে ঢোকেননি, কেউ সংসারের একমাত্র ব্যক্তি, যার চাকরির আশায় বসে আছে পুরো পরিবার।

তাদের সবার দাবি, যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েও মিলছে না ৪০তম বিসিএস উত্তীর্ণ নন ক্যাডারদের চাকরি। তাই তারা পূর্বের নিয়ম বহাল রেখে সরকারি কর্ম কমিশনের কাছে নিয়োগের দাবি জানান। পিএসসির সামনের অবস্থান কর্মসূচিতে আজ আন্দোলনকারীরা সবাই একটি বিশেষ মুখোশ পরেছেন। চাকরি প্রত্যাশী রাকিবুল হাসান জানান, ‘আমাদের সঙ্গে কেউ কথা বলছে না। প্রশাসন থেকে যদি কিছুটা আশ্বাস, ভরসা পেতাম যে আমাদের পদ দেওয়া হবে তাহলে আমরা চলে যেতাম। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলছেন না। পিএসসি থেকে লিখিতভাবে চাকরি দেওয়ার বিষয়ে জানানো হলে তারা আন্দোলন থামাবেন বলে জানান রাকিবুল।’আন্দোলনকারীদের অনেকেরই দাবি, সরকার বিরোধী কিছু লোকজন এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে যুক্ত, যারা চায় একটা বিশৃঙ্খলা হোক।

একজন আন্দোলনকারী বলেন, ‘আমাদের প্রাপ্য চাকরি আমাদের না দিলে আমরা আন্দোলন করব- এটাই স্বাভাবিক। আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই আমাদের দাবি আদায় করতে চাচ্ছি। কিন্তু এর একটা প্রভাব কি শিক্ষা খাতে বা তরুণদের মধ্যে পড়বে না? তারা কি ভাববে না, সরকারি চাকরির জন্য এত পড়ে কি লাভ? যে কোনো সময়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিতে পারে।’এর ফলে সরকারি চাকরিবিমুখতা বাড়তে পারে বলে মনে করেন উপস্থিত অনেকেই।

গত ৩০ অক্টোবর রোববার থেকে শুরু করে ৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা পাঁচ দিন পিএসসির সামনে লাগাতার অবস্থান করেও পিএসসি থেকে কোনো আশানুরূপ বক্তব্য পায়নি চাকরি প্রত্যাশীরা।তাই ৬ নভেম্বর রোববার সকাল ১০টা থেকে পিএসসির সামনে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন তারা। সেই কর্মসূচিরই দ্বিতীয় দিন আজ।

ট্যাগ