পাঠ্যবই ছাপা ও বিতরণ: আধাআধি উৎসব, মানও যাচ্ছেতাই

রাহুল শর্মা, ঢাকা

ফাইল ছবি

এ বছর ৫ লাখ ৬২ হাজার ২২৩টি পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ পেয়েছিল মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রেস। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পরিদর্শন প্রতিবেদন বলছে, প্রতিষ্ঠানটি গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯৫ হাজার ৯২টি বই ছাপানোর কাজ শেষ করেছে। শুধু এই প্রতিষ্ঠান নয়, এবার পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ পাওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের একই অবস্থা।

এনসিটিবি এবং মুদ্রণকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনো প্রায় ৩৮ শতাংশ বই ছাপানোর কাজ বাকি। অথচ নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে মাত্র বাকি ১৪ দিন। এই অবস্থায় এবারও ১ জানুয়ারি সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই দেওয়া সম্ভব হবে না।

কাগজ ও বিদ্যুৎ-সংকট, সময়মতো দরপত্র না ডাকা, কার্যাদেশ দিতে দেরি হওয়াসহ নানা কারণে এবার নির্ধারিত সময়ে সব বই ছাপানোর কাজ শেষ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন পাঠ্যবই মুদ্রণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা। এই অবস্থায় ডিসেম্বর পর্যন্ত যতসংখ্যক বই ছাপানো হবে, তা দিয়েই উৎসব করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বলা যায়, গতবারের মতো এবারও অনেকটা নিয়ম রক্ষার জন্য পাঠ্যপুস্তক উৎসব করা হবে।

বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি এবং পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিপণন সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ‘এবার যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে কোনোভাবেই নির্ধারিত সময়ে সব বই ছাপানো সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা করব কিছু বই (প্রতিটি শ্রেণিতে কয়েকটি বই) দিয়ে দিতে, যেন পাঠ্যপুস্তক উৎসব করা যায়।’

দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ২০১০ সাল থেকে বিনা মূল্যে নতুন বই দিয়ে আসছে সরকার। এনসিটিবি থেকে জানা যায়, আগামী বছরের জন্য প্রায় ৩৩ কোটি ৪৮ লাখ ৭৬ হাজার ৯২৩ কপি পাঠ্যবই ছাপানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে প্রাথমিক স্তরের ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ৯৭৮ কপি এবং মাধ্যমিক স্তরের জন্য ২৩ কোটি ৮২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৪৫ কপি পাঠ্যবই ছাপানো হবে। এ পর্যন্ত প্রাথমিকের সাড়ে ৩ কোটি এবং মাধ্যমিকের ১৫ কোটির বেশি বই ছাপানো হয়েছে।

৬২ শতাংশ বই ছাপানো হয়েছে
এনসিটিবির একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অধিকাংশ দরপত্র অনুযায়ী ছাপানোর কাজ শেষ করার সময়সীমা ২৩ ডিসেম্বর শেষ হবে। কিন্তু অধিকাংশ মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান এ সময়ের মধ্যে তা শেষ করতে পারবে না। এই অবস্থায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বাড়তি কিছু সময় দেওয়া হতে পারে। বিষয়টি শিক্ষা প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলকেও জানানো হয়েছে। ওই কর্মকর্তা জানান, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ৬২ শতাংশ বই ছাপানো হয়েছে, আর উপজেলা পর্যায়ে বিতরণ করা হয়েছে ৫৬ শতাংশ।

জানা গেছে, পাঠ্যবই ছাপানো নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছিল, তা নিরসনে মাস দেড়েক আগে মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সভা হয়। সভায় মুখ্য সচিব সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন, যেভাবেই হোক আগামী ১ জানুয়ারি দেশে পাঠ্যপুস্তক উৎসব করতে। এরপরই সিদ্ধান্ত হয়, ১ জানুয়ারি প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ৬টি বইয়ের পরিবর্তে ৩-৪টি বই এবং মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের হাতে ১০টির পরিবর্তে ৬-৭টি বই হলেও তুলে দেওয়া হবে। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীরা পাবে।

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নানা সংকটের কারণে এবার সব বই হয়তো শিক্ষার্থীরা পাবে না। তবে সবার হাতে যেন বই পৌঁছায়, সেই ব্যবস্থা করা হবে। আমরা মাধ্যমিকের অন্তত ৮০ শতাংশ বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেব। বাকি বইগুলো ১৫ থেকে ২০ জানুয়ারি সবার হাতে পৌঁছাবে।’ তিনি আরও বলেন, কোনো মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের যদি মাধ্যমিকের ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে যায়, তাহলে তাদের প্রাথমিকের বই ছাপানো শুরু করতে বলা হয়েছে। যেন পাঠ্যপুস্তক উৎসব করা সম্ভব হয়। নিম্নমানের বই ছাপানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি খারাপ বই দেয়, তাহলে তাকে রিপ্লেস করতে বলা হবে। যদি তা না করে, তাহলে দ্বিগুণ জরিমানা করা হবে।’

ছাপানো হচ্ছে নিম্নমানের বই
জানা যায়, দেরিতে কার্যাদেশ, কম দরে কাজ নেওয়া এবং কাগজ-সংকটের অজুহাতে নিম্নমানের কাগজে বই ছাপাচ্ছে অধিকাংশ মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান।

শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ, অধিকাংশ বইয়ে দরপত্রের শর্তানুযায়ী মানসম্পন্ন কাগজ ব্যবহার করা হয়নি। হোয়াইট প্রিন্টের নামে দেওয়া হয়েছে নিম্নমানের নিউজপ্রিন্ট, যা মূলত রিসাইক্লিং কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি। এ ছাড়া বাঁধাইসহ আনুষঙ্গিক কাজও মানসম্মত নয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিটিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এবারের পরিস্থিতি খুবই ঘোলাটে। নানা অজুহাতে মুদ্রণকারীরা নিম্নমানের কাগজে বই ছাপাচ্ছে। এনসিটিবি চাইলেও এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বেশি হারে কাজ পাওয়ায় এবার নিম্নমানের বই ছাপানো হচ্ছে বেশি। এ সংকট নিয়ে কয়েক দিন আগে শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও এদের অধিকাংশই অংশ নেয়নি।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গত বছরও কম দরে কাজ নিয়ে নিম্নমানের বই সরবরাহের অভিযোগ উঠেছিল। কাগজের নমুনা পরীক্ষায় প্রমাণিতও হয়েছিল। কিন্তু অজানা কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। তিনি জানান, অনেক প্রতিষ্ঠানে এনসিটিবির মান যাচাইয়ে নিযুক্ত তদারকি দল ঢুকতে পারেনি।

নিম্নমানের বই ছাপানোর অভিযোগ বেশি যাদের বিরুদ্ধে, তাদের মধ্যে অন্যতম অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস ও কচুয়া প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন।

অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেসের অন্যতম স্বত্বাধিকারী কাওসার উজ্জামান রুবেল অবশ্য বলেন, ‘না ভাই, এগুলো (নিম্নমানের বই ছাপানো) সত্য নয়। দরপত্রের শর্তানুযায়ী বই ছাপানো হচ্ছে।’

কচুয়া প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনের স্বত্বাধিকারী হুমায়ন কবির বলেন, ‘আমরা নিম্নমানের কাগজে বই ছাপাচ্ছি না। হয়তো কয়েকটি বইয়ে ভুলবশত নিম্নমানের কাগজ চলে যেতে পারে।’

পাঠ্যবই ছাপা ও বিতরণ: আধাআধি উৎসব, মানও যাচ্ছেতাই

রাহুল শর্মা, ঢাকা

ফাইল ছবি

এ বছর ৫ লাখ ৬২ হাজার ২২৩টি পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ পেয়েছিল মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রেস। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পরিদর্শন প্রতিবেদন বলছে, প্রতিষ্ঠানটি গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯৫ হাজার ৯২টি বই ছাপানোর কাজ শেষ করেছে। শুধু এই প্রতিষ্ঠান নয়, এবার পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ পাওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের একই অবস্থা।

এনসিটিবি এবং মুদ্রণকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনো প্রায় ৩৮ শতাংশ বই ছাপানোর কাজ বাকি। অথচ নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে মাত্র বাকি ১৪ দিন। এই অবস্থায় এবারও ১ জানুয়ারি সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই দেওয়া সম্ভব হবে না।

কাগজ ও বিদ্যুৎ-সংকট, সময়মতো দরপত্র না ডাকা, কার্যাদেশ দিতে দেরি হওয়াসহ নানা কারণে এবার নির্ধারিত সময়ে সব বই ছাপানোর কাজ শেষ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন পাঠ্যবই মুদ্রণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা। এই অবস্থায় ডিসেম্বর পর্যন্ত যতসংখ্যক বই ছাপানো হবে, তা দিয়েই উৎসব করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বলা যায়, গতবারের মতো এবারও অনেকটা নিয়ম রক্ষার জন্য পাঠ্যপুস্তক উৎসব করা হবে।

বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি এবং পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিপণন সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ‘এবার যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে কোনোভাবেই নির্ধারিত সময়ে সব বই ছাপানো সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা করব কিছু বই (প্রতিটি শ্রেণিতে কয়েকটি বই) দিয়ে দিতে, যেন পাঠ্যপুস্তক উৎসব করা যায়।’

দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ২০১০ সাল থেকে বিনা মূল্যে নতুন বই দিয়ে আসছে সরকার। এনসিটিবি থেকে জানা যায়, আগামী বছরের জন্য প্রায় ৩৩ কোটি ৪৮ লাখ ৭৬ হাজার ৯২৩ কপি পাঠ্যবই ছাপানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে প্রাথমিক স্তরের ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ৯৭৮ কপি এবং মাধ্যমিক স্তরের জন্য ২৩ কোটি ৮২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৪৫ কপি পাঠ্যবই ছাপানো হবে। এ পর্যন্ত প্রাথমিকের সাড়ে ৩ কোটি এবং মাধ্যমিকের ১৫ কোটির বেশি বই ছাপানো হয়েছে।

৬২ শতাংশ বই ছাপানো হয়েছে
এনসিটিবির একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অধিকাংশ দরপত্র অনুযায়ী ছাপানোর কাজ শেষ করার সময়সীমা ২৩ ডিসেম্বর শেষ হবে। কিন্তু অধিকাংশ মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান এ সময়ের মধ্যে তা শেষ করতে পারবে না। এই অবস্থায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বাড়তি কিছু সময় দেওয়া হতে পারে। বিষয়টি শিক্ষা প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলকেও জানানো হয়েছে। ওই কর্মকর্তা জানান, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ৬২ শতাংশ বই ছাপানো হয়েছে, আর উপজেলা পর্যায়ে বিতরণ করা হয়েছে ৫৬ শতাংশ।

জানা গেছে, পাঠ্যবই ছাপানো নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছিল, তা নিরসনে মাস দেড়েক আগে মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সভা হয়। সভায় মুখ্য সচিব সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন, যেভাবেই হোক আগামী ১ জানুয়ারি দেশে পাঠ্যপুস্তক উৎসব করতে। এরপরই সিদ্ধান্ত হয়, ১ জানুয়ারি প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ৬টি বইয়ের পরিবর্তে ৩-৪টি বই এবং মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের হাতে ১০টির পরিবর্তে ৬-৭টি বই হলেও তুলে দেওয়া হবে। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীরা পাবে।

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নানা সংকটের কারণে এবার সব বই হয়তো শিক্ষার্থীরা পাবে না। তবে সবার হাতে যেন বই পৌঁছায়, সেই ব্যবস্থা করা হবে। আমরা মাধ্যমিকের অন্তত ৮০ শতাংশ বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেব। বাকি বইগুলো ১৫ থেকে ২০ জানুয়ারি সবার হাতে পৌঁছাবে।’ তিনি আরও বলেন, কোনো মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের যদি মাধ্যমিকের ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে যায়, তাহলে তাদের প্রাথমিকের বই ছাপানো শুরু করতে বলা হয়েছে। যেন পাঠ্যপুস্তক উৎসব করা সম্ভব হয়। নিম্নমানের বই ছাপানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি খারাপ বই দেয়, তাহলে তাকে রিপ্লেস করতে বলা হবে। যদি তা না করে, তাহলে দ্বিগুণ জরিমানা করা হবে।’

ছাপানো হচ্ছে নিম্নমানের বই
জানা যায়, দেরিতে কার্যাদেশ, কম দরে কাজ নেওয়া এবং কাগজ-সংকটের অজুহাতে নিম্নমানের কাগজে বই ছাপাচ্ছে অধিকাংশ মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান।

শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ, অধিকাংশ বইয়ে দরপত্রের শর্তানুযায়ী মানসম্পন্ন কাগজ ব্যবহার করা হয়নি। হোয়াইট প্রিন্টের নামে দেওয়া হয়েছে নিম্নমানের নিউজপ্রিন্ট, যা মূলত রিসাইক্লিং কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি। এ ছাড়া বাঁধাইসহ আনুষঙ্গিক কাজও মানসম্মত নয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিটিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এবারের পরিস্থিতি খুবই ঘোলাটে। নানা অজুহাতে মুদ্রণকারীরা নিম্নমানের কাগজে বই ছাপাচ্ছে। এনসিটিবি চাইলেও এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বেশি হারে কাজ পাওয়ায় এবার নিম্নমানের বই ছাপানো হচ্ছে বেশি। এ সংকট নিয়ে কয়েক দিন আগে শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও এদের অধিকাংশই অংশ নেয়নি।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গত বছরও কম দরে কাজ নিয়ে নিম্নমানের বই সরবরাহের অভিযোগ উঠেছিল। কাগজের নমুনা পরীক্ষায় প্রমাণিতও হয়েছিল। কিন্তু অজানা কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। তিনি জানান, অনেক প্রতিষ্ঠানে এনসিটিবির মান যাচাইয়ে নিযুক্ত তদারকি দল ঢুকতে পারেনি।

নিম্নমানের বই ছাপানোর অভিযোগ বেশি যাদের বিরুদ্ধে, তাদের মধ্যে অন্যতম অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস ও কচুয়া প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন।

অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেসের অন্যতম স্বত্বাধিকারী কাওসার উজ্জামান রুবেল অবশ্য বলেন, ‘না ভাই, এগুলো (নিম্নমানের বই ছাপানো) সত্য নয়। দরপত্রের শর্তানুযায়ী বই ছাপানো হচ্ছে।’

কচুয়া প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনের স্বত্বাধিকারী হুমায়ন কবির বলেন, ‘আমরা নিম্নমানের কাগজে বই ছাপাচ্ছি না। হয়তো কয়েকটি বইয়ে ভুলবশত নিম্নমানের কাগজ চলে যেতে পারে।’