ববি ক্যাম্পাসে সাপের উপদ্রব, নীরাপত্তাহীনতায় শিক্ষার্থীরা

মেহরাব হোসেন

ববি ক্যাম্পাসে সাপের উপদ্রব বেড়েছে নীরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ২২ জুন থেকে দীর্ঘ ১৭ দিন ছুটি শেষে গত ৯ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম। ছুটিতে শিক্ষার্থীদের অবাধ বিচরণ না থাকায় বিভিন্ন ভবন, সড়ক, খেলার মাঠ, হলের আশপাশ ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ হয়ে আছে। যে কারণে ক্যাম্পাসজুড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে বিষধর সাপের আনাগোনা। সম্প্রতি আবাসিক হলের অভ্যন্তরে ও ক্যাম্পাসের এলাকায় বিষধর সাপের দেখা মিলেছে। ফলে ক্যাম্পাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিরাপত্তা কর্মীদের মধ্যে সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে তাদের৷

শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব ও ছুটির মধ্যে ক্যাম্পাস নিয়মিত পরিষ্কার না করায়, আবাসিক হলসহ বিভিন্ন স্থানে ঝোঁপঝাড়ে ভরে গেছে। রাস্তায় চলাচলের সময় বিভিন্ন সাপের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হল, শেরেবাংলা হল ও দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের আশেপাশে ঝোঁপঝাড়ের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এছাড়া ক্যাফেটেরিয়া, টিএসসি, লাইব্রেরীর সামনে পিছনে, খেলার মাঠের আশেপাশের রাস্তার অর্ধেক, একাডেমিক ভবন ২ এর সামনেসহ শেরেবাংলা হলের রাস্তার দুই পাশেঝোপঝাড় বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। ফলে চলাচলের রাস্তাসহ আবাসিক হলের বিভিন্ন ফ্লোরে কালাচ, কেউটে ও পদ্মগোখরাসহ নানান বিষাক্ত সাপের দেখা মিলছে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার পাশে ৫ ফুট লম্বা পদ্মগোখরা সাপের দেখা মিলেছে৷ এছাড়াও, বঙ্গবন্ধু হলের শৌচাগার, বিভিন্ন গাছে ও রাস্তায় রাতে সাপের অবাধ চলাচল করতে দেখেছে শিক্ষার্থীরা যা নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে৷

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সায়ফুল্লা আল বায়জীদ বলেন, ইদানীং ক্যাম্পাসে সাপের উপদ্রব অনেক বেশি বেড়েছে৷ এমনকি আবাসিক হলেও তাদের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে, যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তাছাড়া সন্ধ্যার পরে ক্যাম্পাসের অনেক পয়েন্টে বাতির অভাবে অন্ধকারাছন্ন থাকে, আমরা সবসময়ই আমাদের জীবন নিয়ে আতঙ্কিত৷ আমরা এসকল সমস্যার সমাধান চাই৷

অপর এক শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, সম্প্রতি ক্যাম্পাস জুড়ে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পরীলক্ষিতদের বেশিরভাগই বিষধর সাপ। এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় এবং আতঙ্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ চলাচলের সড়কগুলোর চারপাশ ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ হওয়ায়, যে কোনো সময় সাপের আক্রমণের শিকার হওয়ার ভয়ে আমরা অবাধ চলাফেরায় করতে পারছি না। আমি আশা করি প্রশাসন দ্রুত এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার প্রধান সায়দুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় ঝোপঝাড় বেড়েছে৷ তাছাড়া বর্ষাকালে ঝোপঝাড় বৃদ্ধি পাবে স্বাভাবিক৷ আমাদের জনবল সংকটও আছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ স্থানে যতদিন ভবন না হবে, ততদিন খালি জায়গাগুলো পরিষ্কার কষ্টসাধ্য, তবুও আমরা পরিষ্কার করে যাচ্ছি৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. তানজীল জামান বলেন, সাপের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে জঙ্গল পরিষ্কার করতে হবে। তারপর কার্বলিক এসিড ব্যবহার করলে সাপের উপদ্রব কমবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টাররে এন্টিভেনাম আছে কি এমন প্রশ্নে তিনি বলেন এন্টিভেনাম নাই। এটা পাওয়া কষ্টসাধ্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম বলেন, প্রত্যেকটা বিষয়ের জন্য আমাদের বিশেষায়িত দপ্তর আছে। তারপরও আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখব এবং এই সংকট দূর করতে অতিসত্বর ব্যবস্থা নেব।’

ইবিহো/এসএস

ববি ক্যাম্পাসে সাপের উপদ্রব, নীরাপত্তাহীনতায় শিক্ষার্থীরা

মেহরাব হোসেন

ববি ক্যাম্পাসে সাপের উপদ্রব বেড়েছে নীরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ২২ জুন থেকে দীর্ঘ ১৭ দিন ছুটি শেষে গত ৯ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম। ছুটিতে শিক্ষার্থীদের অবাধ বিচরণ না থাকায় বিভিন্ন ভবন, সড়ক, খেলার মাঠ, হলের আশপাশ ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ হয়ে আছে। যে কারণে ক্যাম্পাসজুড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে বিষধর সাপের আনাগোনা। সম্প্রতি আবাসিক হলের অভ্যন্তরে ও ক্যাম্পাসের এলাকায় বিষধর সাপের দেখা মিলেছে। ফলে ক্যাম্পাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিরাপত্তা কর্মীদের মধ্যে সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে তাদের৷

শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব ও ছুটির মধ্যে ক্যাম্পাস নিয়মিত পরিষ্কার না করায়, আবাসিক হলসহ বিভিন্ন স্থানে ঝোঁপঝাড়ে ভরে গেছে। রাস্তায় চলাচলের সময় বিভিন্ন সাপের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হল, শেরেবাংলা হল ও দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের আশেপাশে ঝোঁপঝাড়ের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এছাড়া ক্যাফেটেরিয়া, টিএসসি, লাইব্রেরীর সামনে পিছনে, খেলার মাঠের আশেপাশের রাস্তার অর্ধেক, একাডেমিক ভবন ২ এর সামনেসহ শেরেবাংলা হলের রাস্তার দুই পাশেঝোপঝাড় বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। ফলে চলাচলের রাস্তাসহ আবাসিক হলের বিভিন্ন ফ্লোরে কালাচ, কেউটে ও পদ্মগোখরাসহ নানান বিষাক্ত সাপের দেখা মিলছে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার পাশে ৫ ফুট লম্বা পদ্মগোখরা সাপের দেখা মিলেছে৷ এছাড়াও, বঙ্গবন্ধু হলের শৌচাগার, বিভিন্ন গাছে ও রাস্তায় রাতে সাপের অবাধ চলাচল করতে দেখেছে শিক্ষার্থীরা যা নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে৷

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সায়ফুল্লা আল বায়জীদ বলেন, ইদানীং ক্যাম্পাসে সাপের উপদ্রব অনেক বেশি বেড়েছে৷ এমনকি আবাসিক হলেও তাদের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে, যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তাছাড়া সন্ধ্যার পরে ক্যাম্পাসের অনেক পয়েন্টে বাতির অভাবে অন্ধকারাছন্ন থাকে, আমরা সবসময়ই আমাদের জীবন নিয়ে আতঙ্কিত৷ আমরা এসকল সমস্যার সমাধান চাই৷

অপর এক শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, সম্প্রতি ক্যাম্পাস জুড়ে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পরীলক্ষিতদের বেশিরভাগই বিষধর সাপ। এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় এবং আতঙ্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ চলাচলের সড়কগুলোর চারপাশ ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ হওয়ায়, যে কোনো সময় সাপের আক্রমণের শিকার হওয়ার ভয়ে আমরা অবাধ চলাফেরায় করতে পারছি না। আমি আশা করি প্রশাসন দ্রুত এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার প্রধান সায়দুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় ঝোপঝাড় বেড়েছে৷ তাছাড়া বর্ষাকালে ঝোপঝাড় বৃদ্ধি পাবে স্বাভাবিক৷ আমাদের জনবল সংকটও আছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ স্থানে যতদিন ভবন না হবে, ততদিন খালি জায়গাগুলো পরিষ্কার কষ্টসাধ্য, তবুও আমরা পরিষ্কার করে যাচ্ছি৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. তানজীল জামান বলেন, সাপের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে জঙ্গল পরিষ্কার করতে হবে। তারপর কার্বলিক এসিড ব্যবহার করলে সাপের উপদ্রব কমবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টাররে এন্টিভেনাম আছে কি এমন প্রশ্নে তিনি বলেন এন্টিভেনাম নাই। এটা পাওয়া কষ্টসাধ্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম বলেন, প্রত্যেকটা বিষয়ের জন্য আমাদের বিশেষায়িত দপ্তর আছে। তারপরও আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখব এবং এই সংকট দূর করতে অতিসত্বর ব্যবস্থা নেব।’

ইবিহো/এসএস