ইউজিসির অভিন্ন পদ্ধতি মানছে না

বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রেডিং পদ্ধতিতে হযবরল

মুসতাক আহমদ

নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (এনএসইউ) পাশ নম্বর ৬০। কোনো শিক্ষার্থী ৫৯ পেলে তাকে ফেল বা অকৃতকার্য ধরা হয়। আর সর্বোচ্চ সাফল্য হিসাবে বিবেচিত সিজিপিএ-৪ পেতে হলে সর্বনিু ৯৩ নম্বর পেতে হয় পরীক্ষায়। কিন্তু আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (এআইইউবি) ৯০ নম্বর পেলেই একজন শিক্ষার্থী সিজিপিএ-৪ অর্জন করে।

প্রতিষ্ঠানটিতে পাশ নম্বর ৫০, যার কম পেলে অকৃতকার্য ধরা হয়। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েটে কোনো শিক্ষার্থী ৮০ নম্বর পেলে তাকে দেওয়া হয় সিজিপিএ-৪। এ দুই প্রতিষ্ঠানেই পাশ নম্বর ৪০। সবমিলিয়ে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রেডিং পদ্ধতি নিয়ে হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বলছে, পরীক্ষায় মূল্যায়নে এভাবে ভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি অনুসরণ করায় বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। বিশেষ করে চাকরির বাজার কিংবা বিদেশে উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার ক্ষেত্রে উপেক্ষিত হচ্ছেন তারা। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের অন্ত নেই। বিষয়টি সুরাহার জন্য অনেকেই ইউজিসিতে আবেদন করছে।

সংস্থাটির পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) মো. ওমর ফারুখ যুগান্তরকে বলেন, ২০০৬ সালে তারা একটি অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি তৈরি করে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছেন। সব পাবলিক এবং অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সেটি অনুসরণ করছে। হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সেটি মানছে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ বিষয়ে জানতে চেয়েছে। ইউজিসির সার্কুলার অমান্য করা প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। শিগগিরই সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে তাগিদপত্র পাঠানো হবে।

ইউজিসি প্রণীত গ্রেডিং পদ্ধতিতে দেখা যায়, ৮০ বা এর বেশি নম্বর পেলে একজন শিক্ষার্থীকে ‘এ-প্লাস’ বা সিজিপিএ-৪ দেওয়া হবে। ৭৫ থেকে ৭৯ নম্বর পেলে তা ‘এ রেগুলার’ বা সিজিপিএ-৩ দশমিক ৭৫ এবং ৭০ থেকে ৭৪ পেলে ‘এ মাইনাস’ বা সিজিপিএ-৩ দশমিক ৫ পাবে। ৬৫ থেকে ৬৯ এর জন্য ‘বি প্লাস’ বা সিজিপিএ-৩ দশমিক ২৫, ৬০ থেকে ৬৪ এর কম পেলে তা ‘বি রেগুলার’ বা সিজিপিএ-৩ হিসাবে শনাক্ত করা হবে।

একইভাবে ৫৫ থেকে ৫৯ এর জন্য ‘বি মাইনাস’ বা সিজিপিএ-২ দশমিক ৭৫; ৫০ থেকে ৫৪-এর জন্য এ ‘সি প্লাস’ বা সিজিপিএ-২ দশমিক ৫ দেওয়া হবে। ব্যক্তি পরীক্ষায় ৪৫ থেকে ৪৯ পেলে তা ‘সি রেগুলার’ বা সিজিপিএ-২ দশমিক ২৫; ৪০ থেকে ৪৪ পেলে ‘ডি’ বা সিজিপিএ-২ অধিকারী হবেন তিনি। ৪০-এর কম হলে ‘এফ’ বা অকৃতকার্য দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে ইউজিসির।

কিন্তু‘ দেশের প্রথম সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের তৈরি পদ্ধতি অনুযায়ী ইচ্ছামতো গ্রেডিং ও লেটার গ্রেড প্রদান করছে। এ ধরনের অন্তত ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে এমন চিত্র মিলেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ৮০ নম্বর পেলে শিক্ষার্থীরা ‘এ প্লাস’ বা সিজিপিএ ৪ পাওয়ার গৌরব অর্জন করে, সেখানে একই পরিমাণ নম্বর পেয়ে এনএসইউতে একজন শিক্ষার্থী বি-মাইনাস পায়।

একইভাবে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভাসির্টিতে এ প্লাসকে বলা হয় ‘এক্সিলেন্স’ আর লেটার গ্রেডে ‘এ’। কিন্তু কত নম্বর পেলে এ গ্রেড দেওয়া হয় সেটি অস্পষ্ট। এই প্রতিষ্ঠানটি ফল তৈরিতে বাংলাদেশের মধ্যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ২১টি স্তর অনুসরণ করে। এরমধ্যে শূন্য গ্রেডেই আছে বিভিন্ন নামে ১০টি স্তর। সর্বনিু সিজিপিএ-১ এরজন্য লেটার গ্রেড হচ্ছে ডি, যেটিকে ব্যাখ্যা করে বলা হয় ‘ডেফিসিয়েন্ট পাসিং। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) ৯০ পেলে এ গ্রেড বা সিজিপিএ ৪ দেয়। কোনো এ প্লাস নেই। পাশ নম্বর ৬০।

তবে এআইইউবি ৯০ নম্বরে সিজিপিএ ৪ দেওয়ার পাশাপাশি লেটার গ্রেডে এ প্লাস দিচ্ছে। আর পাশ নম্বর ৫০। এছাড়া আরও তিনটি স্তর তারা অনুসরণ করে, সেগুলো হচ্ছে-ইনকমপ্লিট, উইথড্র এবং আনঅফিশিয়ালি উইথড্র। ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতেও এ প্লাস পেতে হলে এনএসইউর মতো ৯৭ নম্বর পেতে হবে। আর পাশ নম্বর ৬০। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে সিজিপিএ ৪ পেতে ৯৭ নম্বর পেতে হলেও পাশ নম্বর অবশ্য ৫০। কিন্তু ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) লেটার গ্রেডে এ প্লাস ও সিজিপিএ ৪ ধরা হলেও তা কত নম্বরে সেটি জানায় না। আর মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এই স্তরকে তারা ‘আউটস্ট্যান্ডিং’ উল্লেখ করে থাকে।

এই প্রতিষ্ঠানে সর্বনিু সিজিপিএ ১ দশমিক ৫। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই ৮০ শতাংশ নম্বর পেলে এ প্লাস বা সিজিপিএ ৪ দিয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটিতে পাশ নম্বর ৪০ শতাংশ, কিন্তু এটাকে লেটার গ্রেডে ডি আর সিজিপিএ ২ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া আরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ইচ্ছামতো গ্রেডিং পদ্ধতি ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনএসইউ উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুর ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে সবসময়ে ইউজিসি প্রণীত অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি বাস্তবায়নের পক্ষপাতী। ইতঃপূর্বে এ ব্যাপারে বোর্ড সভায় ও সিন্ডিকেটে আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ায় তা আর বাস্তবায়ন করা যায়নি।’

তবে তিনি পাশাপাশি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর সবদেশে বিশেষ করে আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় একেক বিশ্ববিদ্যালয় একেক ধরনের গ্রেডিং পদ্ধতি ব্যবহার করে, যেটা নিজেদের মতো করে তৈরি করা। এটা বরং তাদের মর্যাদার পরিচায়ক। বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কিংয়ের কোনো অভিন্ন মাপকাঠি নেই। প্রতিষ্ঠানগুলো তার ইচ্ছামতো এ পদ্ধতি তৈরি করতে পারে। এজন্যই আন্তর্জাতিক গ্রেডিং পদ্ধতি অনুসরণ করে এসেছে এনএসইউ।’

তবে ইউজিসি কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের কাছে বিদেশে ভর্তি ও দেশে চাকরির বাজারে উপেক্ষিত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে যে, অতি উঁচু নম্বরের গ্রেডিং ব্যবস্থা অনুসরণ করায় তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। যেমন-আমেরিকায় মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য সিজিপিএ ২.৭৫ থেকে ৩ চাওয়া হয়। কিন্তু এনএসইউ, ইস্টওয়েস্ট বা ব্র্যাকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যা অনুসরণ করে তাতে তারা আবেদনের শর্তই পূরণ করে না। ফলে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।

 

ইউজিসির অভিন্ন পদ্ধতি মানছে না

বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রেডিং পদ্ধতিতে হযবরল

মুসতাক আহমদ

নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (এনএসইউ) পাশ নম্বর ৬০। কোনো শিক্ষার্থী ৫৯ পেলে তাকে ফেল বা অকৃতকার্য ধরা হয়। আর সর্বোচ্চ সাফল্য হিসাবে বিবেচিত সিজিপিএ-৪ পেতে হলে সর্বনিু ৯৩ নম্বর পেতে হয় পরীক্ষায়। কিন্তু আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (এআইইউবি) ৯০ নম্বর পেলেই একজন শিক্ষার্থী সিজিপিএ-৪ অর্জন করে।

প্রতিষ্ঠানটিতে পাশ নম্বর ৫০, যার কম পেলে অকৃতকার্য ধরা হয়। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েটে কোনো শিক্ষার্থী ৮০ নম্বর পেলে তাকে দেওয়া হয় সিজিপিএ-৪। এ দুই প্রতিষ্ঠানেই পাশ নম্বর ৪০। সবমিলিয়ে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রেডিং পদ্ধতি নিয়ে হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বলছে, পরীক্ষায় মূল্যায়নে এভাবে ভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি অনুসরণ করায় বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। বিশেষ করে চাকরির বাজার কিংবা বিদেশে উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার ক্ষেত্রে উপেক্ষিত হচ্ছেন তারা। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের অন্ত নেই। বিষয়টি সুরাহার জন্য অনেকেই ইউজিসিতে আবেদন করছে।

সংস্থাটির পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) মো. ওমর ফারুখ যুগান্তরকে বলেন, ২০০৬ সালে তারা একটি অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি তৈরি করে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছেন। সব পাবলিক এবং অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সেটি অনুসরণ করছে। হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সেটি মানছে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ বিষয়ে জানতে চেয়েছে। ইউজিসির সার্কুলার অমান্য করা প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। শিগগিরই সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে তাগিদপত্র পাঠানো হবে।

ইউজিসি প্রণীত গ্রেডিং পদ্ধতিতে দেখা যায়, ৮০ বা এর বেশি নম্বর পেলে একজন শিক্ষার্থীকে ‘এ-প্লাস’ বা সিজিপিএ-৪ দেওয়া হবে। ৭৫ থেকে ৭৯ নম্বর পেলে তা ‘এ রেগুলার’ বা সিজিপিএ-৩ দশমিক ৭৫ এবং ৭০ থেকে ৭৪ পেলে ‘এ মাইনাস’ বা সিজিপিএ-৩ দশমিক ৫ পাবে। ৬৫ থেকে ৬৯ এর জন্য ‘বি প্লাস’ বা সিজিপিএ-৩ দশমিক ২৫, ৬০ থেকে ৬৪ এর কম পেলে তা ‘বি রেগুলার’ বা সিজিপিএ-৩ হিসাবে শনাক্ত করা হবে।

একইভাবে ৫৫ থেকে ৫৯ এর জন্য ‘বি মাইনাস’ বা সিজিপিএ-২ দশমিক ৭৫; ৫০ থেকে ৫৪-এর জন্য এ ‘সি প্লাস’ বা সিজিপিএ-২ দশমিক ৫ দেওয়া হবে। ব্যক্তি পরীক্ষায় ৪৫ থেকে ৪৯ পেলে তা ‘সি রেগুলার’ বা সিজিপিএ-২ দশমিক ২৫; ৪০ থেকে ৪৪ পেলে ‘ডি’ বা সিজিপিএ-২ অধিকারী হবেন তিনি। ৪০-এর কম হলে ‘এফ’ বা অকৃতকার্য দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে ইউজিসির।

কিন্তু‘ দেশের প্রথম সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের তৈরি পদ্ধতি অনুযায়ী ইচ্ছামতো গ্রেডিং ও লেটার গ্রেড প্রদান করছে। এ ধরনের অন্তত ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে এমন চিত্র মিলেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ৮০ নম্বর পেলে শিক্ষার্থীরা ‘এ প্লাস’ বা সিজিপিএ ৪ পাওয়ার গৌরব অর্জন করে, সেখানে একই পরিমাণ নম্বর পেয়ে এনএসইউতে একজন শিক্ষার্থী বি-মাইনাস পায়।

একইভাবে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভাসির্টিতে এ প্লাসকে বলা হয় ‘এক্সিলেন্স’ আর লেটার গ্রেডে ‘এ’। কিন্তু কত নম্বর পেলে এ গ্রেড দেওয়া হয় সেটি অস্পষ্ট। এই প্রতিষ্ঠানটি ফল তৈরিতে বাংলাদেশের মধ্যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ২১টি স্তর অনুসরণ করে। এরমধ্যে শূন্য গ্রেডেই আছে বিভিন্ন নামে ১০টি স্তর। সর্বনিু সিজিপিএ-১ এরজন্য লেটার গ্রেড হচ্ছে ডি, যেটিকে ব্যাখ্যা করে বলা হয় ‘ডেফিসিয়েন্ট পাসিং। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) ৯০ পেলে এ গ্রেড বা সিজিপিএ ৪ দেয়। কোনো এ প্লাস নেই। পাশ নম্বর ৬০।

তবে এআইইউবি ৯০ নম্বরে সিজিপিএ ৪ দেওয়ার পাশাপাশি লেটার গ্রেডে এ প্লাস দিচ্ছে। আর পাশ নম্বর ৫০। এছাড়া আরও তিনটি স্তর তারা অনুসরণ করে, সেগুলো হচ্ছে-ইনকমপ্লিট, উইথড্র এবং আনঅফিশিয়ালি উইথড্র। ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতেও এ প্লাস পেতে হলে এনএসইউর মতো ৯৭ নম্বর পেতে হবে। আর পাশ নম্বর ৬০। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে সিজিপিএ ৪ পেতে ৯৭ নম্বর পেতে হলেও পাশ নম্বর অবশ্য ৫০। কিন্তু ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) লেটার গ্রেডে এ প্লাস ও সিজিপিএ ৪ ধরা হলেও তা কত নম্বরে সেটি জানায় না। আর মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এই স্তরকে তারা ‘আউটস্ট্যান্ডিং’ উল্লেখ করে থাকে।

এই প্রতিষ্ঠানে সর্বনিু সিজিপিএ ১ দশমিক ৫। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই ৮০ শতাংশ নম্বর পেলে এ প্লাস বা সিজিপিএ ৪ দিয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটিতে পাশ নম্বর ৪০ শতাংশ, কিন্তু এটাকে লেটার গ্রেডে ডি আর সিজিপিএ ২ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া আরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ইচ্ছামতো গ্রেডিং পদ্ধতি ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনএসইউ উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুর ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে সবসময়ে ইউজিসি প্রণীত অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি বাস্তবায়নের পক্ষপাতী। ইতঃপূর্বে এ ব্যাপারে বোর্ড সভায় ও সিন্ডিকেটে আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ায় তা আর বাস্তবায়ন করা যায়নি।’

তবে তিনি পাশাপাশি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর সবদেশে বিশেষ করে আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় একেক বিশ্ববিদ্যালয় একেক ধরনের গ্রেডিং পদ্ধতি ব্যবহার করে, যেটা নিজেদের মতো করে তৈরি করা। এটা বরং তাদের মর্যাদার পরিচায়ক। বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কিংয়ের কোনো অভিন্ন মাপকাঠি নেই। প্রতিষ্ঠানগুলো তার ইচ্ছামতো এ পদ্ধতি তৈরি করতে পারে। এজন্যই আন্তর্জাতিক গ্রেডিং পদ্ধতি অনুসরণ করে এসেছে এনএসইউ।’

তবে ইউজিসি কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের কাছে বিদেশে ভর্তি ও দেশে চাকরির বাজারে উপেক্ষিত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে যে, অতি উঁচু নম্বরের গ্রেডিং ব্যবস্থা অনুসরণ করায় তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। যেমন-আমেরিকায় মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদনের জন্য সিজিপিএ ২.৭৫ থেকে ৩ চাওয়া হয়। কিন্তু এনএসইউ, ইস্টওয়েস্ট বা ব্র্যাকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যা অনুসরণ করে তাতে তারা আবেদনের শর্তই পূরণ করে না। ফলে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।