বিষয়ভিত্তিক পরামর্শ: কৃষিবিদ হতে চাইলে

কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। তা ছাড়া বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট নিয়ন্ত্রণে কৃষি খাত সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। কৃষিতে পড়াশোনা করে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিসহ রয়েছে দেশের বাইরে কৃষি নিয়ে কাজ করার অপার সুযোগ। দেশের কৃষি ক্ষেত্রে অবদান রাখতে চাইলে আপনিও হতে পারেন কৃষিবিদ। কৃষি বিষয়ে পড়াশোনা ও ক্যারিয়ারের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের হর্টিকালচার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. হাসানুর রহমান
ছবি: সংগৃহীত

বিজ্ঞান বিভাগের যেকোনো শিক্ষার্থী কৃষিতে পড়তে পারবে। এ ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক অথবা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ-৩ সহ সর্বমোট জিপিএ ৭.০-৭.৫ হতে হবে (চতুর্থ বিষয় বাদে)। উচ্চমাধ্যমিকের জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং ইংরেজিতে বেশি দক্ষতা প্রয়োজন। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতেও জোর দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের নিজস্বতা রয়েছে। দেশে সাতটি বিশেষায়িত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, একটি ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় এবং জেনারেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (জিএসটি) অধীনে বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষায় কৃষি বিষয় অন্তর্ভুক্ত।

কোথায় কোথায় ভর্তি হওয়া যায়? 
কৃষি বিষয়ের কথা এলে অবশ্যই প্রথমে কৃষি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রথম সারিতে থাকবে। যেমন—বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি। এ ছাড়া কৃষিপ্রধান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে প্রায় ১৫টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানে কৃষি বিষয়টির অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে পড়ানো হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে থেকেই কৃষি বিভাগ রয়েছে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়া ইদানীং বেসরকারিভাবেও কৃষি বিষয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ডিগ্রি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

কী কী বিষয় পড়ানো হয়? 
কৃষি অনুষদ একটি বিস্তৃত জায়গা। এই বিষয়ের অধীনে অনেক সাবজেক্টে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এর মধ্যে ‘অ্যাগ্রোনমি’ অন্যতম। এটি মূলত দানাদার ফসল সম্পর্কিত। চারা রোপণ থেকে শুরু করে উত্তোলন করা অবধি সব ব্যবস্থাপনাবিষয়ক তথ্য জানা যায়। ‘হর্টিকালচার’ বিষয়ে সবজি, ফল ও বাগানবিষয়ক সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনা ও বাজারজাতকরণে গুরুত্বারোপ করা হয়। ‘প্ল্যান্ট প্যাথলজি’ বিষয়ে উদ্ভিদের রোগ নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা করা হয়। ‘এন্টোমলজি’ বিষয়ে উদ্ভিদের ক্ষতি সাধনকারী যেকোনো ধরনের পোকার নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জানা যায়। মাটির গুণগত মান ও উদ্ভিদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি ও পানি ধারণ ক্ষমতার তথ্যাদি ‘সয়েল সায়েন্স’ বিষয় হতে জানা যায়। ‘জেনেটিকস অ্যান্ড প্ল্যান্ট ব্রিডিং’ বিষয়ে উদ্ভিদের কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক প্রজনন ও নিয়ন্ত্রিত বংশবৃদ্ধি-সংক্রান্ত জ্ঞান অর্জন সম্ভব। এ ছাড়াও কৃষির মেজর কিছু বিষয় রয়েছে—প্ল্যান্ট ফিজিওলজি অ্যান্ড ক্রপ বোটানি, বায়োটেকনোলজি, বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি, অ্যাগ্রিকালচারাল কেমিস্ট্রি, অ্যাগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন, অ্যাগ্রো-ফরেস্ট্রি। এ ছাড়াও নন-মেজর সাবজেক্টের মধ্যে সোশিওলজি, অ্যাগ্রিকালচারাল ইকোনমিকস, অ্যাগ্রিকালচারাল স্ট্যাটিসটিকস, ফার্ম মেকানিকসসহ আরও কিছু বিষয়ে পড়ানো হয়।

চাকরি বা কাজের সুযোগ কেমন? 
কৃষি খাতের মান উন্নয়নে গবেষণা ও মাঠপর্যায়ে কাজের জন্য দক্ষ জনবল প্রয়োজন। প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরির মধ্যে সর্বপ্রথম বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের কৃষি বিভাগে শিক্ষকতা করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের স্বনামধন্য কৃষিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সায়েন্টিফিক অফিসার হিসেবে কাজের সুযোগ রয়েছে। প্রতিবছর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনে আলাদাভাবেই কৃষিবিদ নিয়োগ দেওয়া হয়। বিসিএসে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরির চাহিদা দেশজুড়ে। কৃষিতে পড়ে অন্যান্য ক্যাডারেও চাকরি পাওয়া সম্ভব। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে বিশালসংখ্যক জনবল কাজ করছে। বীজ, সার, কীটনাশক, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানিগুলোতে কৃষিবিদদের জায়গা চোখে পড়ার মতো। কম জমিতে অধিক ফলনের জন্য বিশ্বের উন্নত দেশগুলো গবেষণায় বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ করছে। কাজেই কৃষিবিদরা দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছেন।

প্রতিবছর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনে আলাদাভাবেই কৃষিবিদ নিয়োগ দেওয়া হয়। বিসিএসে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরির চাহিদা দেশজুড়ে। কৃষিতে পড়ে অন্যান্য ক্যাডারেও চাকরি পাওয়া সম্ভব।

পড়ার খরচ কেমন? 
খুব নগণ্যসংখ্যক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি পড়ানো হয়। কারণ, কৃষি বিষয়টি বেশির ভাগই প্র্যাকটিক্যাল-নির্ভর। অনেক বেশি ল্যাব সুবিধা প্রয়োজন, যা অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও নেই। বড় বড় শহরে খুব অল্প জায়গায় কৃষি পড়ানো সম্ভব হয় না। এই কারণে অন্যান্য বিষয়ের তুলনায় খরচও খানিকটা বেশি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত ভর্তির পরে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকার মধ্যে চার বছরের কোর্স সম্পন্ন করা যায়। যদিও সেটা বিশ্ববিদ্যালয় অনুযায়ী কমবেশি হতে পারে।

উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধা কেমন? 
সময় ও চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বর্তমানে কৃষি বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধা বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে অনেক সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষায় বিভিন্ন ডিগ্রি দেওয়া হয়। কৃষিতে দেশের পাশাপাশি বিদেশেও রয়েছে উচ্চশিক্ষার প্রচুর সুযোগ ও স্কলারশিপ। কৃষি বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতিবছর প্রচুর শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, চীন, ভারতসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন।

লেখক: ড. মো. হাসানুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক, হর্টিকালচার বিভাগ, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম

বিষয়ভিত্তিক পরামর্শ: কৃষিবিদ হতে চাইলে

কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। তা ছাড়া বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট নিয়ন্ত্রণে কৃষি খাত সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। কৃষিতে পড়াশোনা করে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিসহ রয়েছে দেশের বাইরে কৃষি নিয়ে কাজ করার অপার সুযোগ। দেশের কৃষি ক্ষেত্রে অবদান রাখতে চাইলে আপনিও হতে পারেন কৃষিবিদ। কৃষি বিষয়ে পড়াশোনা ও ক্যারিয়ারের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের হর্টিকালচার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. হাসানুর রহমান
ছবি: সংগৃহীত

বিজ্ঞান বিভাগের যেকোনো শিক্ষার্থী কৃষিতে পড়তে পারবে। এ ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক অথবা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ-৩ সহ সর্বমোট জিপিএ ৭.০-৭.৫ হতে হবে (চতুর্থ বিষয় বাদে)। উচ্চমাধ্যমিকের জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এবং ইংরেজিতে বেশি দক্ষতা প্রয়োজন। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতেও জোর দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের নিজস্বতা রয়েছে। দেশে সাতটি বিশেষায়িত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, একটি ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় এবং জেনারেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (জিএসটি) অধীনে বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষায় কৃষি বিষয় অন্তর্ভুক্ত।

কোথায় কোথায় ভর্তি হওয়া যায়? 
কৃষি বিষয়ের কথা এলে অবশ্যই প্রথমে কৃষি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রথম সারিতে থাকবে। যেমন—বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি। এ ছাড়া কৃষিপ্রধান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে প্রায় ১৫টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানে কৃষি বিষয়টির অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে পড়ানো হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে থেকেই কৃষি বিভাগ রয়েছে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়া ইদানীং বেসরকারিভাবেও কৃষি বিষয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ডিগ্রি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

কী কী বিষয় পড়ানো হয়? 
কৃষি অনুষদ একটি বিস্তৃত জায়গা। এই বিষয়ের অধীনে অনেক সাবজেক্টে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এর মধ্যে ‘অ্যাগ্রোনমি’ অন্যতম। এটি মূলত দানাদার ফসল সম্পর্কিত। চারা রোপণ থেকে শুরু করে উত্তোলন করা অবধি সব ব্যবস্থাপনাবিষয়ক তথ্য জানা যায়। ‘হর্টিকালচার’ বিষয়ে সবজি, ফল ও বাগানবিষয়ক সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনা ও বাজারজাতকরণে গুরুত্বারোপ করা হয়। ‘প্ল্যান্ট প্যাথলজি’ বিষয়ে উদ্ভিদের রোগ নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা করা হয়। ‘এন্টোমলজি’ বিষয়ে উদ্ভিদের ক্ষতি সাধনকারী যেকোনো ধরনের পোকার নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জানা যায়। মাটির গুণগত মান ও উদ্ভিদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি ও পানি ধারণ ক্ষমতার তথ্যাদি ‘সয়েল সায়েন্স’ বিষয় হতে জানা যায়। ‘জেনেটিকস অ্যান্ড প্ল্যান্ট ব্রিডিং’ বিষয়ে উদ্ভিদের কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক প্রজনন ও নিয়ন্ত্রিত বংশবৃদ্ধি-সংক্রান্ত জ্ঞান অর্জন সম্ভব। এ ছাড়াও কৃষির মেজর কিছু বিষয় রয়েছে—প্ল্যান্ট ফিজিওলজি অ্যান্ড ক্রপ বোটানি, বায়োটেকনোলজি, বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি, অ্যাগ্রিকালচারাল কেমিস্ট্রি, অ্যাগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন, অ্যাগ্রো-ফরেস্ট্রি। এ ছাড়াও নন-মেজর সাবজেক্টের মধ্যে সোশিওলজি, অ্যাগ্রিকালচারাল ইকোনমিকস, অ্যাগ্রিকালচারাল স্ট্যাটিসটিকস, ফার্ম মেকানিকসসহ আরও কিছু বিষয়ে পড়ানো হয়।

চাকরি বা কাজের সুযোগ কেমন? 
কৃষি খাতের মান উন্নয়নে গবেষণা ও মাঠপর্যায়ে কাজের জন্য দক্ষ জনবল প্রয়োজন। প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরির মধ্যে সর্বপ্রথম বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের কৃষি বিভাগে শিক্ষকতা করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের স্বনামধন্য কৃষিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সায়েন্টিফিক অফিসার হিসেবে কাজের সুযোগ রয়েছে। প্রতিবছর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনে আলাদাভাবেই কৃষিবিদ নিয়োগ দেওয়া হয়। বিসিএসে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরির চাহিদা দেশজুড়ে। কৃষিতে পড়ে অন্যান্য ক্যাডারেও চাকরি পাওয়া সম্ভব। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে বিশালসংখ্যক জনবল কাজ করছে। বীজ, সার, কীটনাশক, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানিগুলোতে কৃষিবিদদের জায়গা চোখে পড়ার মতো। কম জমিতে অধিক ফলনের জন্য বিশ্বের উন্নত দেশগুলো গবেষণায় বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ করছে। কাজেই কৃষিবিদরা দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছেন।

প্রতিবছর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনে আলাদাভাবেই কৃষিবিদ নিয়োগ দেওয়া হয়। বিসিএসে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরির চাহিদা দেশজুড়ে। কৃষিতে পড়ে অন্যান্য ক্যাডারেও চাকরি পাওয়া সম্ভব।

পড়ার খরচ কেমন? 
খুব নগণ্যসংখ্যক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি পড়ানো হয়। কারণ, কৃষি বিষয়টি বেশির ভাগই প্র্যাকটিক্যাল-নির্ভর। অনেক বেশি ল্যাব সুবিধা প্রয়োজন, যা অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও নেই। বড় বড় শহরে খুব অল্প জায়গায় কৃষি পড়ানো সম্ভব হয় না। এই কারণে অন্যান্য বিষয়ের তুলনায় খরচও খানিকটা বেশি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত ভর্তির পরে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকার মধ্যে চার বছরের কোর্স সম্পন্ন করা যায়। যদিও সেটা বিশ্ববিদ্যালয় অনুযায়ী কমবেশি হতে পারে।

উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধা কেমন? 
সময় ও চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বর্তমানে কৃষি বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধা বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে অনেক সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষায় বিভিন্ন ডিগ্রি দেওয়া হয়। কৃষিতে দেশের পাশাপাশি বিদেশেও রয়েছে উচ্চশিক্ষার প্রচুর সুযোগ ও স্কলারশিপ। কৃষি বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতিবছর প্রচুর শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, চীন, ভারতসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন।

লেখক: ড. মো. হাসানুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক, হর্টিকালচার বিভাগ, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম