মাদকসেবিদের ‘হটস্পট’ পবিপ্রবি

আশিকুর রহমান

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(পবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে বাড়ছে মাদকের আসর। ক্যাম্পাসে ৮টিরও বেশি স্পটে নিয়মিত মাদক সেবন চলে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নাকের ডগায় এসব ঘটলেও তা থামাতে ব্যর্থ তারা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে মাদকাসক্তদের ‘হটস্পট’।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের সামনে, প্রশাসনিক ভবনের পিছনে, মন্দিরের সামনের ফাঁকা যায়গা, সৃজনী স্কুল রাস্তা, খামার ভবন চত্বর, কৃষি খামারের তালতলা, এম কেরামত আলী হলের পূর্ব ও দক্ষিণ পাশে নিয়মিত চলে মাদকসেবন। গতকাল (মঙ্গলবার) আনুমানিক দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এম কেরামত আলী হলের পূর্ব পাশে দুইজন বহিরাগতের মাদকসেবনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের বিভিন্ন ছাত্রনেতার কক্ষে নিয়মিত বসে মাদকের আসর। এসব ছাত্রনেতার সাথে বহিরাগত মাদকসেবিদের যোগসাজশ রয়েছে। যার ফলে হাতের নাগালেই পাওয়া যায় গাঁজা, ইয়াবা এবং ঘুমের ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। মাদক সেবনের খরচ জোগাতে চুরি, ব্ল্যাকমেইলসহ বিভিন্ন অপরাধেও জড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এদের হাতে বিভিন্ন সময় হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে শক্ত প্রাচীর না থাকায় সহজেই বহিরাগত প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে। আর এই সুযোগ মাদকসেবিরা বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদকের হটস্পট বানিয়েছে।

অন্তত দশ (১০) জন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তদারকির অভাবে মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়েছে। ক্যাম্পাসকে সুশৃঙ্খল ও মাদকমুক্ত করার দাবি জানান তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদ্য মাদক ছেড়ে দেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাস্ট গেট ও সেকেন্ড গেটে কয়েকজন স্থানীয় মাদকবিক্রেতা রয়েছে তাদেরকে ফোন করলেই আবাসিক হলে মাদক পৌঁছে দেয়। এরা সাধারণত ছোট গুটি, বড় গুটি (ইয়াবা) এবং গাঁজা পৌঁছে দেয়। অন্য মাদক আনতে হলে গিয়ে নিয়ে আসতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রনেতা মাদক কেনাবেচা ও সেবনের সাথে জড়িত। এসব মাদকসেবি ছাত্রনেতাদের কক্ষে বসে মাদকের আসর। আবাসিক হলের বাইরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে যারা মাদকসেবন করেন তারা বহিরাগত বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, মাদকসেবি ছাত্রনেতাদের সাথে এসব বহিরাগতের সুসম্পর্ক থাকায় তারা মাদকসেবনের স্থান হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিরাপদ মনে করেন। মাদক নিয়ন্ত্রণে এই শিক্ষার্থী বলেন, মাদক সেবনের সম্ভাব্য স্থান গুলোতে লাইট এবং সিসি ক্যামেরা স্থাপন করলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হবে। প্রক্টরিয়াল বডিকে কঠোর হতে হবে, বহিরাগতদের চেক করে মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক মোহাম্মদ হান্নান দৈনিক বলেন, ‘আমি গত ১৯ জুলাই এখানে যোগদান করেই বিশ্বিবদ্যালয়ে মাদকসেবিদের দমনে কাজ শুরু করেছি। এ বিষয়ে একটা সিভিল টিম নিয়েছি। আমরা অচিরেই এসব মাদকসেবিদের গ্রেপ্তার করব।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, ‘ইতিমধ্যে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি, তাদের সহায়তায় মাদক নির্মূল করব।’

ইবিহো/এসএস

মাদকসেবিদের ‘হটস্পট’ পবিপ্রবি

আশিকুর রহমান

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(পবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে বাড়ছে মাদকের আসর। ক্যাম্পাসে ৮টিরও বেশি স্পটে নিয়মিত মাদক সেবন চলে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নাকের ডগায় এসব ঘটলেও তা থামাতে ব্যর্থ তারা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে মাদকাসক্তদের ‘হটস্পট’।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের সামনে, প্রশাসনিক ভবনের পিছনে, মন্দিরের সামনের ফাঁকা যায়গা, সৃজনী স্কুল রাস্তা, খামার ভবন চত্বর, কৃষি খামারের তালতলা, এম কেরামত আলী হলের পূর্ব ও দক্ষিণ পাশে নিয়মিত চলে মাদকসেবন। গতকাল (মঙ্গলবার) আনুমানিক দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এম কেরামত আলী হলের পূর্ব পাশে দুইজন বহিরাগতের মাদকসেবনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের বিভিন্ন ছাত্রনেতার কক্ষে নিয়মিত বসে মাদকের আসর। এসব ছাত্রনেতার সাথে বহিরাগত মাদকসেবিদের যোগসাজশ রয়েছে। যার ফলে হাতের নাগালেই পাওয়া যায় গাঁজা, ইয়াবা এবং ঘুমের ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। মাদক সেবনের খরচ জোগাতে চুরি, ব্ল্যাকমেইলসহ বিভিন্ন অপরাধেও জড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এদের হাতে বিভিন্ন সময় হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে শক্ত প্রাচীর না থাকায় সহজেই বহিরাগত প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে। আর এই সুযোগ মাদকসেবিরা বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদকের হটস্পট বানিয়েছে।

অন্তত দশ (১০) জন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তদারকির অভাবে মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়েছে। ক্যাম্পাসকে সুশৃঙ্খল ও মাদকমুক্ত করার দাবি জানান তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদ্য মাদক ছেড়ে দেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাস্ট গেট ও সেকেন্ড গেটে কয়েকজন স্থানীয় মাদকবিক্রেতা রয়েছে তাদেরকে ফোন করলেই আবাসিক হলে মাদক পৌঁছে দেয়। এরা সাধারণত ছোট গুটি, বড় গুটি (ইয়াবা) এবং গাঁজা পৌঁছে দেয়। অন্য মাদক আনতে হলে গিয়ে নিয়ে আসতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রনেতা মাদক কেনাবেচা ও সেবনের সাথে জড়িত। এসব মাদকসেবি ছাত্রনেতাদের কক্ষে বসে মাদকের আসর। আবাসিক হলের বাইরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে যারা মাদকসেবন করেন তারা বহিরাগত বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, মাদকসেবি ছাত্রনেতাদের সাথে এসব বহিরাগতের সুসম্পর্ক থাকায় তারা মাদকসেবনের স্থান হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিরাপদ মনে করেন। মাদক নিয়ন্ত্রণে এই শিক্ষার্থী বলেন, মাদক সেবনের সম্ভাব্য স্থান গুলোতে লাইট এবং সিসি ক্যামেরা স্থাপন করলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ হবে। প্রক্টরিয়াল বডিকে কঠোর হতে হবে, বহিরাগতদের চেক করে মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক মোহাম্মদ হান্নান দৈনিক বলেন, ‘আমি গত ১৯ জুলাই এখানে যোগদান করেই বিশ্বিবদ্যালয়ে মাদকসেবিদের দমনে কাজ শুরু করেছি। এ বিষয়ে একটা সিভিল টিম নিয়েছি। আমরা অচিরেই এসব মাদকসেবিদের গ্রেপ্তার করব।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, ‘ইতিমধ্যে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি, তাদের সহায়তায় মাদক নির্মূল করব।’

ইবিহো/এসএস