মাদকাসক্ত সেই কাব্যের ইবি মেডিকেল ভাংচুর

ফরহাদ খাদেম
মাদকাসক্ত রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্য।

মধ্য রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেডিকেলে ভাংচুরের অভিযোগ এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্যের বিরুদ্ধে। সোমবার (১০ জুলাই) রাত ১১টার দিকে নিজের কথা মতো অ্যাম্বুলেন্স না দেওয়ার তিনি এই ভাংচুর চালান তিনি।

মাদকাসক্ত অবস্থায় তিনি চিকিৎসা কেন্দ্রে এসেছেন বলে অভিযোগ প্রত্যক্ষদর্শী কর্মকর্তাদের। এছাড়া, গত বছর দেশীয় অস্ত্রসহ আটক হওয়ায় সাময়িক বহিষ্কার হয়েছিল কাব্য।

জানা যায়, রাত ১০টার দিকে কাব্য বুকের ব্যথার চিকিৎসা নেওয়ার জন্য মেডিকেলে আসে। পরে কর্ত্যবরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদুল হাসান তাকে ইনজেকশন দেন৷ এর আধঘন্টা পর আবার সে চিকিৎসা কেন্দ্রে আসে এবং নিজেকে কুষ্টিয়া পাঠানোর জন্য ডাক্তারকে চাপাচাপি করে। এক পর্যায়ে তিনি ডাক্তারের সাথে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এরই মাঝে তার বহিষ্কৃত হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। এতে অ্যাম্বুলেন্সে পাঠানোর সিদ্ধান্তে একটু দেরি হচ্ছিল। এটা না মানতে পেরে টেবিল চেয়ার ভাংচুর করেন তিনি। ভাংচুরের সময় আইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আতিক আরমান এবং সালমান আজিজও ছিলেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্যাথলজি চিকিৎসক জাহাঙ্গীর বলেন, তিনি (কাব্য) এসে দেয়ালে লাথি দেয়া ও অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। পরে তাকে অসুস্থতার জন্য ইনজেকশন দেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসককে কুষ্টিয়া পাঠাতে জোর করেন। এতে একটু সময় লাগায় তিনি ভাংচুর করতে থাকেন।

পরে জোড়াজুড়ির ফলে তাকে ড্রাইভার মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামানের সাথে কুষ্টিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান ডা. ওয়াহিদুল হাসান।

এ বিষয়ে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান বলেন, আমাকে তিনি (কাব্য) ফোন দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে বলে এবং পরিচয় জানতে চাইলে হুমকি দিতে থাকে। পরে খোঁজাখুজি করে তাকে ক্যাম্পাসের বাইরে বিএমএস ছাত্রাবাসের পাশে ঘাসে শুয়ে থাকা অবস্থায় পাই। এতে মেডিকেলে নিয়ে আসার পর ডাক্তার তাকে ইনজেকশন দেন। কিন্ত সেবা দেওয়ার পর কেন্দ্রেই বসে থাকেন ও কুষ্টিয়া যেতে চান। কিন্ত প্রক্টরিয়াল বডি অনুমতি না দেওয়ায় আমি গাড়ি দিতে রাজি না হলে আমাকে শার্টে ধরে মারধর করে।

চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আজ মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকালে এসে জরুরি বিভাগের চেয়ার টেবিল ভাংচুর অবস্থায় পেয়েছি। পরে যোগাযোগ করে দ্রুত প্রশাসনকে জানিয়েছি। এতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান পরিদর্শনে আসেন। গতকাল রাতের ঘটনায় কর্তব্যরত ডাক্তারসহ যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের বক্তব্য নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিব। তাছাড়া এখন পুলিশ তদন্ত করছে এবং এর একটি সুষ্ঠু বিচার আমি দাবি করছি।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমি চিফ মেডিকেল অফিসারকে রেজিস্ট্রার বারার লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি৷ পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। চিফ মেডিকেল অফিসারকে রেজিস্ট্রার বারার লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি৷ পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ছিনতাই, সশস্ত্র ক্যাম্পাসে মহড়া ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন তিনি৷ এছাড়াও, সিকিউরিটি ইনচার্জ আব্দুস সালাম সেলিমের সাথে খারাপ আচরণ ও গলায় ছুরি ধরারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ইবিহো/এসএস

মাদকাসক্ত সেই কাব্যের ইবি মেডিকেল ভাংচুর

ফরহাদ খাদেম
মাদকাসক্ত রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্য।

মধ্য রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেডিকেলে ভাংচুরের অভিযোগ এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্যের বিরুদ্ধে। সোমবার (১০ জুলাই) রাত ১১টার দিকে নিজের কথা মতো অ্যাম্বুলেন্স না দেওয়ার তিনি এই ভাংচুর চালান তিনি।

মাদকাসক্ত অবস্থায় তিনি চিকিৎসা কেন্দ্রে এসেছেন বলে অভিযোগ প্রত্যক্ষদর্শী কর্মকর্তাদের। এছাড়া, গত বছর দেশীয় অস্ত্রসহ আটক হওয়ায় সাময়িক বহিষ্কার হয়েছিল কাব্য।

জানা যায়, রাত ১০টার দিকে কাব্য বুকের ব্যথার চিকিৎসা নেওয়ার জন্য মেডিকেলে আসে। পরে কর্ত্যবরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদুল হাসান তাকে ইনজেকশন দেন৷ এর আধঘন্টা পর আবার সে চিকিৎসা কেন্দ্রে আসে এবং নিজেকে কুষ্টিয়া পাঠানোর জন্য ডাক্তারকে চাপাচাপি করে। এক পর্যায়ে তিনি ডাক্তারের সাথে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এরই মাঝে তার বহিষ্কৃত হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। এতে অ্যাম্বুলেন্সে পাঠানোর সিদ্ধান্তে একটু দেরি হচ্ছিল। এটা না মানতে পেরে টেবিল চেয়ার ভাংচুর করেন তিনি। ভাংচুরের সময় আইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আতিক আরমান এবং সালমান আজিজও ছিলেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্যাথলজি চিকিৎসক জাহাঙ্গীর বলেন, তিনি (কাব্য) এসে দেয়ালে লাথি দেয়া ও অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। পরে তাকে অসুস্থতার জন্য ইনজেকশন দেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসককে কুষ্টিয়া পাঠাতে জোর করেন। এতে একটু সময় লাগায় তিনি ভাংচুর করতে থাকেন।

পরে জোড়াজুড়ির ফলে তাকে ড্রাইভার মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামানের সাথে কুষ্টিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান ডা. ওয়াহিদুল হাসান।

এ বিষয়ে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান বলেন, আমাকে তিনি (কাব্য) ফোন দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে বলে এবং পরিচয় জানতে চাইলে হুমকি দিতে থাকে। পরে খোঁজাখুজি করে তাকে ক্যাম্পাসের বাইরে বিএমএস ছাত্রাবাসের পাশে ঘাসে শুয়ে থাকা অবস্থায় পাই। এতে মেডিকেলে নিয়ে আসার পর ডাক্তার তাকে ইনজেকশন দেন। কিন্ত সেবা দেওয়ার পর কেন্দ্রেই বসে থাকেন ও কুষ্টিয়া যেতে চান। কিন্ত প্রক্টরিয়াল বডি অনুমতি না দেওয়ায় আমি গাড়ি দিতে রাজি না হলে আমাকে শার্টে ধরে মারধর করে।

চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আজ মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকালে এসে জরুরি বিভাগের চেয়ার টেবিল ভাংচুর অবস্থায় পেয়েছি। পরে যোগাযোগ করে দ্রুত প্রশাসনকে জানিয়েছি। এতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান পরিদর্শনে আসেন। গতকাল রাতের ঘটনায় কর্তব্যরত ডাক্তারসহ যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের বক্তব্য নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিব। তাছাড়া এখন পুলিশ তদন্ত করছে এবং এর একটি সুষ্ঠু বিচার আমি দাবি করছি।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমি চিফ মেডিকেল অফিসারকে রেজিস্ট্রার বারার লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি৷ পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। চিফ মেডিকেল অফিসারকে রেজিস্ট্রার বারার লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি৷ পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ছিনতাই, সশস্ত্র ক্যাম্পাসে মহড়া ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন তিনি৷ এছাড়াও, সিকিউরিটি ইনচার্জ আব্দুস সালাম সেলিমের সাথে খারাপ আচরণ ও গলায় ছুরি ধরারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ইবিহো/এসএস