‘রাজনীতিমুক্ত’ ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ ছাত্রলীগের হাতে

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অন্যতম শর্ত ছাত্ররাজনীতি ও ধূমপান করা যাবে না। এ জন্য অঙ্গীকারনামাও দেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রতিষ্ঠা-পরবর্তী প্রায় দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে এই শর্ত পালন করা হয়। এরপর বদলাতে থাকে পরিস্থিতি।

ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু হয়। তাদের দেখাদেখি ছাত্রদলও কমিটি দেয়। এখন বলতে গেলে ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণই ছাত্রলীগের হাতে।

২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৭ সালের ২৮ মে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ছিল ক্যাম্পাস। তবে ২০০৯ সালের শুরু থেকে দৃশ্যপট বদলাতে থাকে। ছাত্ররাজনীতি শুরু করে ছাত্রলীগ। তাদের দেখাদেখি পরবর্তী সময়ে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের কমিটি দেওয়া হয়েছে।

kalerkanthoশুরুর দিকের কয়েকটি ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৯ সালের শুরুতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নাম দিয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের তত্কালীন শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন। একই সঙ্গে পৃথক আরেকটি গ্রুপে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট ফোরাম নাম দিয়ে মার্কেটিং বিভাগের তত্কালীন শিক্ষার্থী মইনউদ্দিন সফিকুর রহমান চিশতী ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এমদাদুল বারী ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন। সে সময় রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে দুই গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকবার মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ২০১১ সালে প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ নামে শুরু হয় সংগঠনের রাজনীতি। এরপর ২০১২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ৫১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৪ জুলাই নাজমুল হাসান আলিফকে সভাপতি ও রেজা-ই-এলাহীকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৮ মে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইলিয়াস মিয়াকে সভাপতি ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী রেজাউল ইসলাম মাজেদকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৬১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। বর্তমানে ওই কমিটির নেতাদের পাঁচ ভাগের এক ভাগেরও ছাত্রত্ব নেই। অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে গেছেন। কেউ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করছেন। এক বছর মেয়াদি ওই কমিটির মেয়াদ ২০১৮ সালে শেষ হয়। এর মধ্যে সভাপতি মো. ইলিয়াস মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী, বর্তমানে ছাত্রত্ব নেই। তিনি ১৫ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের একটি কক্ষে একা থাকছেন।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ইলিয়াসের নেতৃত্বে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নিয়োগ বাণিজ্য, দরপত্র ও ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষকের ওপর হামলা, প্রতিটি হল দখল ও নিয়ন্ত্রণ, ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজিসহ নানা অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এর পরও অদৃশ্য ছায়ায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপুটে ছাত্রনেতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় চালায় ছাত্রলীগ। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থাকে নীরব দর্শকের ভূমিকায়। চলতি বছরেই অন্তত পাঁচবার প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজি করেছে ছাত্রলীগ। সর্বশেষ গত ১ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির একটি খবরকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে অস্ত্রবাজি, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরদিন জরুরি সভা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব হল ও পরিবহন বন্ধ এবং পরীক্ষা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রশাসন অস্ত্রবাজিতে জড়িতদের বিচার করতে না পেরে উল্টো শিক্ষার্থীদের বারবার দুর্ভোগে ফেলছে। কিছু হলেই শুরু হয় অস্ত্রের মহড়া, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাউকে শেষ পর্যন্ত বিচারের মুখোমুখি করতে পারে না। এতে নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ।

ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রী বলেন, ‘শুধু শুধু ভর্তির সময় আমাদের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নেওয়া হয় ছাত্ররাজনীতি ও ধূমপান মুক্ত ক্যাম্পাসের কথা বলে। অথচ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরাও প্রকাশ্যে ধূমপান করেন। শুধু শিক্ষার্থীরা নন, শিক্ষকরাও রাজনীতিতে সক্রিয়। অথচ প্রতিবছর হাস্যকর অঙ্গীকারনামা নেওয়া হয়। ’

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস মিয়া ওরফে ইলিয়াস হোসেন সবুজ। তিনি বলেন, ‘যাদের যোগ্যতা নেই এবং নেতৃত্ব দিতে পারে না, তারাই আমার ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালায়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির সময় নিয়মানুযায়ী ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি করবে না মর্মে অঙ্গীকারনামা নেওয়া হয়, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে বলা নেই যে ছাত্ররাজনীতি করা যাবে না। শুধু ছাত্রলীগ কেন, কুবিতে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরও রাজনীতি করে। ’

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক আবদুল্লাল আল মামুন বলেন, ‘ছাত্রলীগ প্রকাশ্যে রাজনীতি শুরু করার কারণে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটিতে অনুরোধ জানাই আমাদেরও কমিটি দেওয়ার জন্য। পরে ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর প্রথমবারের মতো ছাত্রদলের কমিটি দেওয়া হয়। বর্তমান কমিটি দেওয়া হয়েছে গত বছর। কিন্তু ছাত্রলীগের অস্ত্রবাজির কারণে অন্য কোনো সংগঠন ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে রাজনীতি করতে পারে না। ’

জানতে চাইলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা অনেক কথাই বলতে পারে, তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব সময় প্রতিটি অনিয়ম ও অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আমরা প্রতিবছরই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ছাত্ররাজনীতি ও ধূমপান মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীকার নিয়ে থাকি। এর মাধ্যমে তাদের রাজনীতি ও ধূমপান থেকে নিরুত্সাহ করা হয়। তবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৬-এ কোথাও বলা নেই ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ। এ জন্য আমরা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে কঠোর হতে পারি না। ’

‘রাজনীতিমুক্ত’ ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ ছাত্রলীগের হাতে

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অন্যতম শর্ত ছাত্ররাজনীতি ও ধূমপান করা যাবে না। এ জন্য অঙ্গীকারনামাও দেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রতিষ্ঠা-পরবর্তী প্রায় দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে এই শর্ত পালন করা হয়। এরপর বদলাতে থাকে পরিস্থিতি।

ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু হয়। তাদের দেখাদেখি ছাত্রদলও কমিটি দেয়। এখন বলতে গেলে ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণই ছাত্রলীগের হাতে।

২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৭ সালের ২৮ মে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ছিল ক্যাম্পাস। তবে ২০০৯ সালের শুরু থেকে দৃশ্যপট বদলাতে থাকে। ছাত্ররাজনীতি শুরু করে ছাত্রলীগ। তাদের দেখাদেখি পরবর্তী সময়ে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের কমিটি দেওয়া হয়েছে।

kalerkanthoশুরুর দিকের কয়েকটি ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৯ সালের শুরুতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নাম দিয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের তত্কালীন শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন। একই সঙ্গে পৃথক আরেকটি গ্রুপে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট ফোরাম নাম দিয়ে মার্কেটিং বিভাগের তত্কালীন শিক্ষার্থী মইনউদ্দিন সফিকুর রহমান চিশতী ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এমদাদুল বারী ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন। সে সময় রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে দুই গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকবার মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ২০১১ সালে প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ নামে শুরু হয় সংগঠনের রাজনীতি। এরপর ২০১২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ৫১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৪ জুলাই নাজমুল হাসান আলিফকে সভাপতি ও রেজা-ই-এলাহীকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৮ মে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইলিয়াস মিয়াকে সভাপতি ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী রেজাউল ইসলাম মাজেদকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৬১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। বর্তমানে ওই কমিটির নেতাদের পাঁচ ভাগের এক ভাগেরও ছাত্রত্ব নেই। অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে গেছেন। কেউ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করছেন। এক বছর মেয়াদি ওই কমিটির মেয়াদ ২০১৮ সালে শেষ হয়। এর মধ্যে সভাপতি মো. ইলিয়াস মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী, বর্তমানে ছাত্রত্ব নেই। তিনি ১৫ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের একটি কক্ষে একা থাকছেন।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ইলিয়াসের নেতৃত্বে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নিয়োগ বাণিজ্য, দরপত্র ও ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষকের ওপর হামলা, প্রতিটি হল দখল ও নিয়ন্ত্রণ, ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজিসহ নানা অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এর পরও অদৃশ্য ছায়ায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপুটে ছাত্রনেতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় চালায় ছাত্রলীগ। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থাকে নীরব দর্শকের ভূমিকায়। চলতি বছরেই অন্তত পাঁচবার প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজি করেছে ছাত্রলীগ। সর্বশেষ গত ১ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির একটি খবরকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে অস্ত্রবাজি, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরদিন জরুরি সভা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব হল ও পরিবহন বন্ধ এবং পরীক্ষা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রশাসন অস্ত্রবাজিতে জড়িতদের বিচার করতে না পেরে উল্টো শিক্ষার্থীদের বারবার দুর্ভোগে ফেলছে। কিছু হলেই শুরু হয় অস্ত্রের মহড়া, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাউকে শেষ পর্যন্ত বিচারের মুখোমুখি করতে পারে না। এতে নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ।

ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রী বলেন, ‘শুধু শুধু ভর্তির সময় আমাদের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নেওয়া হয় ছাত্ররাজনীতি ও ধূমপান মুক্ত ক্যাম্পাসের কথা বলে। অথচ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরাও প্রকাশ্যে ধূমপান করেন। শুধু শিক্ষার্থীরা নন, শিক্ষকরাও রাজনীতিতে সক্রিয়। অথচ প্রতিবছর হাস্যকর অঙ্গীকারনামা নেওয়া হয়। ’

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস মিয়া ওরফে ইলিয়াস হোসেন সবুজ। তিনি বলেন, ‘যাদের যোগ্যতা নেই এবং নেতৃত্ব দিতে পারে না, তারাই আমার ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালায়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির সময় নিয়মানুযায়ী ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি করবে না মর্মে অঙ্গীকারনামা নেওয়া হয়, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে বলা নেই যে ছাত্ররাজনীতি করা যাবে না। শুধু ছাত্রলীগ কেন, কুবিতে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরও রাজনীতি করে। ’

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক আবদুল্লাল আল মামুন বলেন, ‘ছাত্রলীগ প্রকাশ্যে রাজনীতি শুরু করার কারণে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটিতে অনুরোধ জানাই আমাদেরও কমিটি দেওয়ার জন্য। পরে ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর প্রথমবারের মতো ছাত্রদলের কমিটি দেওয়া হয়। বর্তমান কমিটি দেওয়া হয়েছে গত বছর। কিন্তু ছাত্রলীগের অস্ত্রবাজির কারণে অন্য কোনো সংগঠন ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে রাজনীতি করতে পারে না। ’

জানতে চাইলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা অনেক কথাই বলতে পারে, তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব সময় প্রতিটি অনিয়ম ও অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আমরা প্রতিবছরই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ছাত্ররাজনীতি ও ধূমপান মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীকার নিয়ে থাকি। এর মাধ্যমে তাদের রাজনীতি ও ধূমপান থেকে নিরুত্সাহ করা হয়। তবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৬-এ কোথাও বলা নেই ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ। এ জন্য আমরা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে কঠোর হতে পারি না। ’