শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেটের ৭ শতাংশ বরাদ্দ এখন সময়ের দাবি: অধ্যাপক আবদুল মান্নান

রেফায়েত উল্যাহ রুপক

বক্তব্য দিচ্ছেন অধ্যাপক আবদুল মান্নান।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা চিন্তা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, মুখ্য আলোচক ছিলেন চিটাগং ইনডিপেনডেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে।

অধ্যাপক আবদুল মান্নান তার প্রবন্ধ পাঠে বলেন, এখনতো সকল স্তরের শিক্ষা হয়ে উঠেছে পরীক্ষাকেন্দ্রিক, জ্ঞানচর্চা বা কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিকেন্দ্রিক নয়, যার ফলে গত চার দশকে বাংলাদেশ হতে আন্তর্জাতিকমানের কোনো জ্ঞানসৃষ্টি হয়নি, কোনো পণ্ডিত আন্তর্জাতিক মহলে পরিচিতি লাভ করেনি।

তিনি আরও বলেন, এখন প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা, ইংরেজি, পদার্থ, রসায়ন বিভাগ, অর্থনীতি বিভাগ আছে। কিন্তু এই সবক্ষেত্রে তো কোনো পণ্ডিত বা উঁচুমানের গবেষক তৈরি হয় না। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়ে তাদের অধিকাংশের লক্ষ্য থাকে আমলা বা প্রশাসক হওয়া, কারণ এই সব পেশায় সুযোগ সুবিধা আর ক্ষমতা আকাশচুম্বী।

শিক্ষাক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বাজেট নেই। বাজেটের ৭ শতাংশ বরাদ্দ এখন সময়ের দাবি। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় বঙ্গবন্ধুর গড়া কুদরত-ই-খুদা কমিশনের উল্টো চিত্র ফুটে উঠছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নৈতিকতা যদি থাকতো তাহলে ছাত্রের হাতে শিক্ষক মার খেয়ে মরতে হতো না কিংবা তথাকথিত কোন জনপ্রতিনিধিদের হাতে কোনো শিক্ষক প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত হতেন না। একজন শিক্ষককে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশের সামনে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এমন দৃশ্য কোনো সভ্য দুনিয়াতে পাওয়া যাবে না। এরকম ঘটনা বাংলাদেশেই ঘটছে।

সেমিনারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র হয়। তিনি চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তৈরী হবে শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী। আজকে দেশের ১৮ কোটি জনগণ শিক্ষিত হলে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন পূরণ হবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে শিক্ষার উপর জোর দিয়েছেন।

মুখ্য আলোচক ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামে শুধু স্লোগান দিয়ে পদ পদবী নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মার শান্তি মিলবে না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন সর্বজনীন শিক্ষার কথা। কিন্তু আজকে মধ্যবিত্তরাও প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ না করে তাদের সন্তানকে কিন্ডার গার্টেনে ভর্তি করাচ্ছে। অথচ আবুল ফজল, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে। আর এ বিষয়ে গবেষণা করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের।

এছাড়া, সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিরাজ উদ দৌলা, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকবৃন্দ।

ইবিহো/এসএস

শিক্ষাক্ষেত্রে বাজেটের ৭ শতাংশ বরাদ্দ এখন সময়ের দাবি: অধ্যাপক আবদুল মান্নান

রেফায়েত উল্যাহ রুপক

বক্তব্য দিচ্ছেন অধ্যাপক আবদুল মান্নান।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা চিন্তা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, মুখ্য আলোচক ছিলেন চিটাগং ইনডিপেনডেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে।

অধ্যাপক আবদুল মান্নান তার প্রবন্ধ পাঠে বলেন, এখনতো সকল স্তরের শিক্ষা হয়ে উঠেছে পরীক্ষাকেন্দ্রিক, জ্ঞানচর্চা বা কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিকেন্দ্রিক নয়, যার ফলে গত চার দশকে বাংলাদেশ হতে আন্তর্জাতিকমানের কোনো জ্ঞানসৃষ্টি হয়নি, কোনো পণ্ডিত আন্তর্জাতিক মহলে পরিচিতি লাভ করেনি।

তিনি আরও বলেন, এখন প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা, ইংরেজি, পদার্থ, রসায়ন বিভাগ, অর্থনীতি বিভাগ আছে। কিন্তু এই সবক্ষেত্রে তো কোনো পণ্ডিত বা উঁচুমানের গবেষক তৈরি হয় না। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়ে তাদের অধিকাংশের লক্ষ্য থাকে আমলা বা প্রশাসক হওয়া, কারণ এই সব পেশায় সুযোগ সুবিধা আর ক্ষমতা আকাশচুম্বী।

শিক্ষাক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বাজেট নেই। বাজেটের ৭ শতাংশ বরাদ্দ এখন সময়ের দাবি। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় বঙ্গবন্ধুর গড়া কুদরত-ই-খুদা কমিশনের উল্টো চিত্র ফুটে উঠছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নৈতিকতা যদি থাকতো তাহলে ছাত্রের হাতে শিক্ষক মার খেয়ে মরতে হতো না কিংবা তথাকথিত কোন জনপ্রতিনিধিদের হাতে কোনো শিক্ষক প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত হতেন না। একজন শিক্ষককে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশের সামনে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এমন দৃশ্য কোনো সভ্য দুনিয়াতে পাওয়া যাবে না। এরকম ঘটনা বাংলাদেশেই ঘটছে।

সেমিনারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র হয়। তিনি চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তৈরী হবে শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী। আজকে দেশের ১৮ কোটি জনগণ শিক্ষিত হলে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন পূরণ হবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে শিক্ষার উপর জোর দিয়েছেন।

মুখ্য আলোচক ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামে শুধু স্লোগান দিয়ে পদ পদবী নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মার শান্তি মিলবে না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন সর্বজনীন শিক্ষার কথা। কিন্তু আজকে মধ্যবিত্তরাও প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ না করে তাদের সন্তানকে কিন্ডার গার্টেনে ভর্তি করাচ্ছে। অথচ আবুল ফজল, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। এগুলো নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে। আর এ বিষয়ে গবেষণা করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের।

এছাড়া, সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিরাজ উদ দৌলা, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকবৃন্দ।

ইবিহো/এসএস