ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ: বরখাস্ত টেকনিশিয়ানের সংবাদ সম্মেলন

ফরহাদ খাদেম
সাংবাদিক সম্মেলন করেন ইবির বরখাস্ত হওয়া টেকনিশিয়ান।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সাময়িক বরখাস্ত হওয়া আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান জে এম ইলিয়াসকে প্রাণনাশের হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। মঙ্গলবার (১৬মে) বেলা ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্নারে এ সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি।

এসময় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাব ও এর সহযোগী সংগঠন সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে ভুক্তভোগী ইলিয়াস সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠে তিনি বলেন, আমি শনিবার (১৩ মে) আবাসিক ভবনের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উম্মে কুলসুম লুনা ম্যাডামের বাসায় ওয়াইফাই এর সমস্যার সমাধান করে দিয়ে আসি। আবার পর দিন বিকালে ম্যাডাম আমাকে ফোন করেন। সন্ধ্যায় ম্যাডামের বাসায় সশরীরে উপস্থিত হয়ে ওয়াইফাই সংযুক্ত করে ম্যাডামকে বুঝিয়ে দেই। ইতিমধ্যেই জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ডেপুটি সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম নামের এক লোক আমাকে ফোন দিয়ে হেলিকপ্টারে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া, চাকরিচ্যুত করা, মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমার ক্ষতিসাধন করাসহ ডিবি পুলিশ দিয়ে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন।

তিনি আর জানান, ১৪ মে এক নাম্বার থেকে আমার মুঠো ফোনে কল করে আমাকে একাধিক বার হুমকি দেন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি ও আমার পরিবার ভীত হয়ে ১৪ মে রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের কাছে নিরাপত্তার আবেদন করি। এমতাবস্থায় ১৫ মে সন্ধ্যায় কিছু অজ্ঞাত বহিরাগত ব্যক্তি প্রশাসন ভবনের আম বাগানে আমাকে হামলার চেষ্টা করে। এবং ১৬ মে ভোর রাতে জাহাঙ্গীর আলম পুনরায় অনলাইনে ফোন দিয়ে বলে তোর চাকুরি খেয়েছি আন্দোলন করবি না? আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

জানা যায়, শনিবার (১৩ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার সাথে অসদাচরণ ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান পদে কর্মরত জে এম ইলিয়াসের নামে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে সালমা লুনা।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনে তার বাসায় ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা হওয়ায় আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান ইলিয়াসকে ফোন দেন। প্রথম দিনে তার ফোন রিসিভ না করলেও গত শনিবার (১৩ মে) তার বাসার রাউটারটি রি সেটাপ করে দেন ইলিয়াস। পরে তিনি তার রাউটারের পাসওয়ার্ড জানার জন্য ইলিয়াসকে কল দিলে তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষকের কী কারণে ইন্টারনেট লাগে?’ এছাড়া তিনি স্থানীয় প্রভাব দেখিয়ে তাকে হুমকিও দেন বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষিকা। এই লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (১৫ মে) অভিযুক্ত কর্মচারী ইলিয়াসকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।

একই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে সালমা লুনার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দিয়েছেন আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান জেএম ইলিয়াস।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনকে আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন ও উপ-রেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খান।

এ ব্যাপারে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ডেপুটি সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হুমকির বিষয়টি সত্য। প্রশাসন কোনো শাস্তি দিলে আমি মাথা পেতে নিব।

ইবিহো/এসএস

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ: বরখাস্ত টেকনিশিয়ানের সংবাদ সম্মেলন

ফরহাদ খাদেম
সাংবাদিক সম্মেলন করেন ইবির বরখাস্ত হওয়া টেকনিশিয়ান।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সাময়িক বরখাস্ত হওয়া আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান জে এম ইলিয়াসকে প্রাণনাশের হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। মঙ্গলবার (১৬মে) বেলা ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্নারে এ সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি।

এসময় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাব ও এর সহযোগী সংগঠন সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে ভুক্তভোগী ইলিয়াস সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠে তিনি বলেন, আমি শনিবার (১৩ মে) আবাসিক ভবনের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উম্মে কুলসুম লুনা ম্যাডামের বাসায় ওয়াইফাই এর সমস্যার সমাধান করে দিয়ে আসি। আবার পর দিন বিকালে ম্যাডাম আমাকে ফোন করেন। সন্ধ্যায় ম্যাডামের বাসায় সশরীরে উপস্থিত হয়ে ওয়াইফাই সংযুক্ত করে ম্যাডামকে বুঝিয়ে দেই। ইতিমধ্যেই জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ডেপুটি সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম নামের এক লোক আমাকে ফোন দিয়ে হেলিকপ্টারে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া, চাকরিচ্যুত করা, মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমার ক্ষতিসাধন করাসহ ডিবি পুলিশ দিয়ে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন।

তিনি আর জানান, ১৪ মে এক নাম্বার থেকে আমার মুঠো ফোনে কল করে আমাকে একাধিক বার হুমকি দেন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি ও আমার পরিবার ভীত হয়ে ১৪ মে রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের কাছে নিরাপত্তার আবেদন করি। এমতাবস্থায় ১৫ মে সন্ধ্যায় কিছু অজ্ঞাত বহিরাগত ব্যক্তি প্রশাসন ভবনের আম বাগানে আমাকে হামলার চেষ্টা করে। এবং ১৬ মে ভোর রাতে জাহাঙ্গীর আলম পুনরায় অনলাইনে ফোন দিয়ে বলে তোর চাকুরি খেয়েছি আন্দোলন করবি না? আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

জানা যায়, শনিবার (১৩ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার সাথে অসদাচরণ ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান পদে কর্মরত জে এম ইলিয়াসের নামে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে সালমা লুনা।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনে তার বাসায় ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা হওয়ায় আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান ইলিয়াসকে ফোন দেন। প্রথম দিনে তার ফোন রিসিভ না করলেও গত শনিবার (১৩ মে) তার বাসার রাউটারটি রি সেটাপ করে দেন ইলিয়াস। পরে তিনি তার রাউটারের পাসওয়ার্ড জানার জন্য ইলিয়াসকে কল দিলে তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষকের কী কারণে ইন্টারনেট লাগে?’ এছাড়া তিনি স্থানীয় প্রভাব দেখিয়ে তাকে হুমকিও দেন বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষিকা। এই লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (১৫ মে) অভিযুক্ত কর্মচারী ইলিয়াসকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।

একই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে সালমা লুনার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দিয়েছেন আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান জেএম ইলিয়াস।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনকে আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন ও উপ-রেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খান।

এ ব্যাপারে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ডেপুটি সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হুমকির বিষয়টি সত্য। প্রশাসন কোনো শাস্তি দিলে আমি মাথা পেতে নিব।

ইবিহো/এসএস