৪৪তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ও পরামর্শ

সাদরুল আলম সিয়াম

বিসিএস লিখিত পরীক্ষা বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কঠিন। এখানে বড় বড় সিলেবাসের পরীক্ষা বিরতিহীনভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এবং শুক্র-শনিবার ব্যতীত পরীক্ষার মাঝে গ্যাপ থাকে না বললেই চলে। সুস্থ থেকে সবগুলো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা এবং ভালো নম্বর তোলা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।

পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ 

  • হাতে যতটুকু সময় আছে তার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করুন।
  • হাতের লেখা সুন্দর করার পেছনে সময় ব্যয় না করে, স্পষ্ট ও কাটাছেঁড়ামুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।
  • সর্বোচ্চ গতিতে লিখতে হবে। হাত ফ্রি করার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় ১ নম্বরের জন্য ১.২ মিনিট সময় পাবেন। আর ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ১ নম্বরের জন্য পাবেন ১.৮ মিনিট। এর বেশি সময় কোনোভাবেই নেওয়া যাবে না।
  • যেভাবেই হোক সম্পূর্ণ উত্তর করে আসতে হবে।
  • উত্তরগুলো ছোট একটা ভূমিকা, মূল উত্তর এবং ছোট একটা উপসংহার দিয়ে লেখার
    চেষ্টা করুন।
  • ডেটা দেওয়ার টেবিল পেনসিল দিয়ে আঁকতে পারেন। ডেটা ব্যবহার করলে সঙ্গে যথাযথ রেফারেন্স ব্যবহার করুন। অযথা ডেটা, চার্ট, গ্রাফ, কোটেশন ব্যবহার না করে প্রাসঙ্গিক ডেটা ব্যবহার করুন। আপনার ডেটা, চার্টের সবচেয়ে বড় সোর্স অর্থনৈতিক সমীক্ষা।
  • যেকোনো একটা পরীক্ষা খারাপ হলে হতাশ হবেন না বা ঘাবড়ে যাবেন না। পরবর্তী পরীক্ষা দিয়ে কাভার আপ করার সুযোগ পাবেন। মনে রাখবেন, বিসিএস পরীক্ষা হচ্ছে একটা ম্যারাথন দৌড়।
  • Quantitative লেখা না লিখে Qualitative লেখা লেখার চেষ্টা করুন।
  • একটা খাতায় সব সাবজেক্টের ছোটখাটো তথ্যগুলো লিখে রাখতে পারেন। যাতে পরীক্ষার আগের রাতে দেখে যেতে পারেন।
  • অবশ্যই স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখুন। বেশি প্রেশার নিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে গেলে সবই যাবে।

সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করুন যাতে তিনি আপনার জন্য সবকিছু সহজ করে দেন।

যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

  • মাথা ঠান্ডা রাখুন।
  • পরীক্ষার হলে যথাসম্ভব আগে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন। ঢাকাবাসীরা ট্রাফিক জ্যামের ব্যাপারটি যথাসম্ভব মাথায় রাখবেন।
  •  ঘুম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, একই সঙ্গে রিভিশন দেওয়াটা। আপনি যতটুকু ঘুমিয়ে সারভাইভ করতে পারবেন, ততটুকুই ঘুমান। সবার সঙ্গে তাল না মেলানোই ভালো।
  • আত্মবিশ্বাস খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোনোভাবেই আত্মবিশ্বাস হারাবেন না।
  • কোনোভাবেই দেখাদেখি করার ব্যাপার মাথায়ই আনবেন না। পিএসসি এ ব্যাপারে এখন
    খুবই স্ট্রিক্ট।পরীক্ষাকেন্দ্রে যা নেওয়া যাবে এবং যা নেওয়া যাবে না
    বিসিএস পরীক্ষার কেন্দ্রে বই-পুস্তক, সব ধরনের ঘড়ি, মুঠোফোন, সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্যাংক/ক্রেডিট কার্ডসদৃশ কোনো ডিভাইস, গয়না, ব্রেসলেট ও ব্যাগ আনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ সামগ্রীসহ কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে পারবেন না। শুধু অ্যাডমিট কার্ড, কলম, পেনসিল, স্কেল, ইরেজার, শার্পনার এবং গণিত পরীক্ষায় সাধারণ ক্যালকুলেটর (সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যতীত) নিতে পারবেন।

    কম প্রস্তুতি নেওয়া পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে 
    কোনোভাবেই পরীক্ষা না দেওয়ার চিন্তা মাথায় আনবেন না। বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি শুধু পিএসসির দেওয়া সিলেবাসের ওপরই নির্ভর করে না। ছোট থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত এযাবৎকালে যা কিছু পড়েছেন, আপনার বেসিক নলেজ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণাসহ অনেক কিছুর ওপরই নির্ভর করে। আপনার পরীক্ষা কেমন হবে, আপনি জানেন না! শেষ সময়ে যতটুকু সম্ভব প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করুন। কে জানে এই পরীক্ষা হয়তো আপনার জীবন পাল্টে দিতে পারে! মনে রাখবেন “When you want something, all the universe conspires in helping you to achieve it.” সবার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল।

লেখক: সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (৪০তম বিসিএস)।

অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম

৪৪তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ও পরামর্শ

সাদরুল আলম সিয়াম

বিসিএস লিখিত পরীক্ষা বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কঠিন। এখানে বড় বড় সিলেবাসের পরীক্ষা বিরতিহীনভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এবং শুক্র-শনিবার ব্যতীত পরীক্ষার মাঝে গ্যাপ থাকে না বললেই চলে। সুস্থ থেকে সবগুলো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা এবং ভালো নম্বর তোলা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।

পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ 

  • হাতে যতটুকু সময় আছে তার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করুন।
  • হাতের লেখা সুন্দর করার পেছনে সময় ব্যয় না করে, স্পষ্ট ও কাটাছেঁড়ামুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।
  • সর্বোচ্চ গতিতে লিখতে হবে। হাত ফ্রি করার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় ১ নম্বরের জন্য ১.২ মিনিট সময় পাবেন। আর ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ১ নম্বরের জন্য পাবেন ১.৮ মিনিট। এর বেশি সময় কোনোভাবেই নেওয়া যাবে না।
  • যেভাবেই হোক সম্পূর্ণ উত্তর করে আসতে হবে।
  • উত্তরগুলো ছোট একটা ভূমিকা, মূল উত্তর এবং ছোট একটা উপসংহার দিয়ে লেখার
    চেষ্টা করুন।
  • ডেটা দেওয়ার টেবিল পেনসিল দিয়ে আঁকতে পারেন। ডেটা ব্যবহার করলে সঙ্গে যথাযথ রেফারেন্স ব্যবহার করুন। অযথা ডেটা, চার্ট, গ্রাফ, কোটেশন ব্যবহার না করে প্রাসঙ্গিক ডেটা ব্যবহার করুন। আপনার ডেটা, চার্টের সবচেয়ে বড় সোর্স অর্থনৈতিক সমীক্ষা।
  • যেকোনো একটা পরীক্ষা খারাপ হলে হতাশ হবেন না বা ঘাবড়ে যাবেন না। পরবর্তী পরীক্ষা দিয়ে কাভার আপ করার সুযোগ পাবেন। মনে রাখবেন, বিসিএস পরীক্ষা হচ্ছে একটা ম্যারাথন দৌড়।
  • Quantitative লেখা না লিখে Qualitative লেখা লেখার চেষ্টা করুন।
  • একটা খাতায় সব সাবজেক্টের ছোটখাটো তথ্যগুলো লিখে রাখতে পারেন। যাতে পরীক্ষার আগের রাতে দেখে যেতে পারেন।
  • অবশ্যই স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখুন। বেশি প্রেশার নিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে গেলে সবই যাবে।

সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করুন যাতে তিনি আপনার জন্য সবকিছু সহজ করে দেন।

যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে

  • মাথা ঠান্ডা রাখুন।
  • পরীক্ষার হলে যথাসম্ভব আগে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন। ঢাকাবাসীরা ট্রাফিক জ্যামের ব্যাপারটি যথাসম্ভব মাথায় রাখবেন।
  •  ঘুম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, একই সঙ্গে রিভিশন দেওয়াটা। আপনি যতটুকু ঘুমিয়ে সারভাইভ করতে পারবেন, ততটুকুই ঘুমান। সবার সঙ্গে তাল না মেলানোই ভালো।
  • আত্মবিশ্বাস খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোনোভাবেই আত্মবিশ্বাস হারাবেন না।
  • কোনোভাবেই দেখাদেখি করার ব্যাপার মাথায়ই আনবেন না। পিএসসি এ ব্যাপারে এখন
    খুবই স্ট্রিক্ট।পরীক্ষাকেন্দ্রে যা নেওয়া যাবে এবং যা নেওয়া যাবে না
    বিসিএস পরীক্ষার কেন্দ্রে বই-পুস্তক, সব ধরনের ঘড়ি, মুঠোফোন, সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্যাংক/ক্রেডিট কার্ডসদৃশ কোনো ডিভাইস, গয়না, ব্রেসলেট ও ব্যাগ আনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ সামগ্রীসহ কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে পারবেন না। শুধু অ্যাডমিট কার্ড, কলম, পেনসিল, স্কেল, ইরেজার, শার্পনার এবং গণিত পরীক্ষায় সাধারণ ক্যালকুলেটর (সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যতীত) নিতে পারবেন।

    কম প্রস্তুতি নেওয়া পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে 
    কোনোভাবেই পরীক্ষা না দেওয়ার চিন্তা মাথায় আনবেন না। বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি শুধু পিএসসির দেওয়া সিলেবাসের ওপরই নির্ভর করে না। ছোট থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত এযাবৎকালে যা কিছু পড়েছেন, আপনার বেসিক নলেজ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণাসহ অনেক কিছুর ওপরই নির্ভর করে। আপনার পরীক্ষা কেমন হবে, আপনি জানেন না! শেষ সময়ে যতটুকু সম্ভব প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করুন। কে জানে এই পরীক্ষা হয়তো আপনার জীবন পাল্টে দিতে পারে! মনে রাখবেন “When you want something, all the universe conspires in helping you to achieve it.” সবার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল।

লেখক: সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (৪০তম বিসিএস)।

অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম