৯ মাসে ৪০৪ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

আঁচল ফাউন্ডেশনের জরিপ

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪০৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। যার মধ্যে নারী শিক্ষার্থী রয়েছেন ২৪২ জন। গতকাল  এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি সংস্থা আঁচল ফাউন্ডেশনের ‘মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর একাডেমিক চাপের প্রভাব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা’ শীর্ষক জরিপে এ তথ্য উঠে আসে। সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষক ড. এ ওহাব।

শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির জন্য দায়ী যে সমস্যাগুলো জরিপে উঠে এসেছে তা ৪ ধরনের। সেগুলো হলো- একাডেমিক চাপ, আর্থিক সংকট ও ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা এবং শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ। আঁচল ফাউন্ডেশন সে বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সমস্যা সমাধানে কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরে।

ড. এ ওহাব জানান, গত ৯ মাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বেড়েছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছেন ৪০৪ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ শিক্ষার্থী, স্কুলের ২১৯, মাদ্রাসার ৪৪ জন এবং কলেজ পড়ুয়া ৮৪ জন। আত্মহননকারীদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ২৪২ জন এবং পুরুষ শিক্ষার্থী ১৬২ জন। তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধরন বিবেচনায় জরিপে মোট অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের।

দশমিক ৪১ শতাংশ শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের, ২ দশমিক ২৬ শতাংশ মেডিকেল শিক্ষার্থী এবং বাকিরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি এবং মাদ্রাসার।
জরিপে দেখা গেছে, মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষাজীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জরিপে মানসিক সুস্থতা বিষয়ক বেশ কয়েকটি নিয়ামক নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হলে উত্তরে উঠে আসে উদ্বেগজনক কিছু তথ্য। মোট অংশ নেয়া শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৭ দশমিক ৯৯ শতাংশই জানিয়েছেন যে, তাদের নিজস্ব শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত ভয় ও উদ্বেগ জীবনকে প্রভাবিত করেছে। এর পাশাপাশি দৈনন্দিন আচার-আচরণ ও ব্যবহারে পরিবর্তন, যেমন- মন খারাপ হওয়া, হঠাৎ ক্লান্তি আসা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে শিক্ষাজীবনে প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন ৮০ দশমিক ৭৯ শতাংশ শিক্ষার্থী। করোনা পরবর্তী সময়ে ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪০ জন বা ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আত্মহত্যার উপকরণ জোগাড় করেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। করোনা পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যা করার কথা মাথায় এসেছে ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর।

সংস্থাটি তাদের প্রস্তাবনায় বলছে, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাভাবিক ও ইনফরমাল সম্পর্ক তৈরি করা, অতিরিক্ত সিলেবাস কমিয়ে যথাসময়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করে সেশনজটমুক্ত করা, পড়াশোনাকে আনন্দময় ও বাস্তবমুখী করা, প্রথাগত সিলেবাসের পরিবর্তে চাকরির বাজারের উপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন, শিক্ষাঋণ চালু করা, স্ব স্ব ক্যাম্পাসে খণ্ডকালীন চাকরির ব্যবস্থা করা, ক্যারিয়ার গঠনে পরামর্শ ও সহায়তা পেতে বিভাগের উদ্যোগে অ্যালামনাইদের সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করা, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে বিভিন্ন সভা সেমিনার আয়োজন করা।
জরিপে অংশ নেয় ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৪৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ মাদ্রাসা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থী।

৯ মাসে ৪০৪ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

আঁচল ফাউন্ডেশনের জরিপ

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪০৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। যার মধ্যে নারী শিক্ষার্থী রয়েছেন ২৪২ জন। গতকাল  এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি সংস্থা আঁচল ফাউন্ডেশনের ‘মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর একাডেমিক চাপের প্রভাব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা’ শীর্ষক জরিপে এ তথ্য উঠে আসে। সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষক ড. এ ওহাব।

শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির জন্য দায়ী যে সমস্যাগুলো জরিপে উঠে এসেছে তা ৪ ধরনের। সেগুলো হলো- একাডেমিক চাপ, আর্থিক সংকট ও ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা এবং শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ। আঁচল ফাউন্ডেশন সে বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সমস্যা সমাধানে কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরে।

ড. এ ওহাব জানান, গত ৯ মাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বেড়েছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছেন ৪০৪ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ শিক্ষার্থী, স্কুলের ২১৯, মাদ্রাসার ৪৪ জন এবং কলেজ পড়ুয়া ৮৪ জন। আত্মহননকারীদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ২৪২ জন এবং পুরুষ শিক্ষার্থী ১৬২ জন। তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধরন বিবেচনায় জরিপে মোট অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের।

দশমিক ৪১ শতাংশ শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের, ২ দশমিক ২৬ শতাংশ মেডিকেল শিক্ষার্থী এবং বাকিরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি এবং মাদ্রাসার।
জরিপে দেখা গেছে, মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষাজীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জরিপে মানসিক সুস্থতা বিষয়ক বেশ কয়েকটি নিয়ামক নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হলে উত্তরে উঠে আসে উদ্বেগজনক কিছু তথ্য। মোট অংশ নেয়া শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৭ দশমিক ৯৯ শতাংশই জানিয়েছেন যে, তাদের নিজস্ব শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত ভয় ও উদ্বেগ জীবনকে প্রভাবিত করেছে। এর পাশাপাশি দৈনন্দিন আচার-আচরণ ও ব্যবহারে পরিবর্তন, যেমন- মন খারাপ হওয়া, হঠাৎ ক্লান্তি আসা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে শিক্ষাজীবনে প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন ৮০ দশমিক ৭৯ শতাংশ শিক্ষার্থী। করোনা পরবর্তী সময়ে ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪০ জন বা ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আত্মহত্যার উপকরণ জোগাড় করেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। করোনা পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যা করার কথা মাথায় এসেছে ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর।

সংস্থাটি তাদের প্রস্তাবনায় বলছে, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাভাবিক ও ইনফরমাল সম্পর্ক তৈরি করা, অতিরিক্ত সিলেবাস কমিয়ে যথাসময়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করে সেশনজটমুক্ত করা, পড়াশোনাকে আনন্দময় ও বাস্তবমুখী করা, প্রথাগত সিলেবাসের পরিবর্তে চাকরির বাজারের উপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন, শিক্ষাঋণ চালু করা, স্ব স্ব ক্যাম্পাসে খণ্ডকালীন চাকরির ব্যবস্থা করা, ক্যারিয়ার গঠনে পরামর্শ ও সহায়তা পেতে বিভাগের উদ্যোগে অ্যালামনাইদের সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করা, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে বিভিন্ন সভা সেমিনার আয়োজন করা।
জরিপে অংশ নেয় ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৪৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ মাদ্রাসা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থী।