স্বপ্ন যাঁদের সরকারি মেডিকেল কলেজ: পর্ব-২

সামিহা সারা

প্রতীকী ছবি

পর্ব-২
এইচএসসি পরীক্ষার পর শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। অনেকেরই স্বপ্ন থাকে সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার। যেহেতু এইচএসসির পর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্য তিন মাসের মতো সময় পাওয়া যায়, তাই প্রস্তুতি নিতে হবে এখন থেকেই। কিছু পদ্ধতি ও পড়াশোনার কৌশলই হতে পারে স্বপ্নপূরণের সহায়ক।

‘স্বপ্ন যাঁদের সরকারি মেডিকেল কলেজ’ এই শিরোনামের ১ম পর্বে বই নির্বাচন ও প্রাণিবিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। আজ থাকছে উদ্ভিদবিজ্ঞান, রসায়ন, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান অংশের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা।

উদ্ভিদবিজ্ঞান 
উদ্ভিদবিজ্ঞান বইয়ে মোট ১২টি অধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায় থেকে কোষ ঝিল্লি, কোষ প্রাচীরের উপাদান, কাজ, ঝিল্লিবিহীন ও ঝিল্লিযুক্ত অঙ্গানু, মাইটোকন্ড্রিয়া, গলগি বডি, নিউক্লিয়াস প্লাস্টিড, সেন্ট্রিওল, পার-অক্সিসোম—এই টপিকগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। উদাহরণস্বরূপ পার-অক্সিসোমে কোন এনজাইম থাকে?

বা পার-অক্সিসোম কোথায় অধিক পাওয়া যায়? কোষগহ্বরের কাজ, গ্লাই-অক্সিজোমের কাজ, ক্রোমোজোমের আকৃতি, প্রকারভেদ, ক্রোমোজোমের রাসায়নিক গঠন, DNA এবং RNA-এর পার্থক্য, RNA-এর প্রকারভেদ, ট্রিপলেট (64), শুরু ও সমাপ্তি কোডন। এ ছাড়া অধ্যায়ের সবগুলো ছক, অধ্যায়ের শেষে যে সারসংক্ষেপ ও দক্ষতা অর্জন এবং অনুশীলনী রয়েছে, সেগুলো অনুশীলন করতে হবে। দ্বিতীয় অধ্যায় থেকে মাইটোসিস, মিয়োসিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। এ ছাড়া কোষচক্র, সিন্যাপসিস, বাইভেলেন্ট, টেট্রাড, ক্রসিং ওভার—এগুলো সম্পর্কে জানতে হবে।

তৃতীয় অধ্যায়ে কার্বোহাইড্রেটের প্রকারভেদ উদাহরণসহ পড়তে হবে। এ ছাড়া স্টার্চ, সেলুলোজ, গ্লাইকোজেনের কাজ ও ধর্ম সম্পর্কে জানতে হবে। প্রোটিন ও লিপিড—এই দুটি টপিক খুব ভালোভাবে গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। এ ছাড়া এনজাইমের ভৌত বৈশিষ্ট্য এবং প্রভাবক জানতেই হবে। কোন এনজাইম কী কাজ করে এবং প্রস্থেটিক গ্রুপ, কো-ফ্যাক্টর, কো-এনজাইম সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। চতুর্থ অধ্যায়ে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বৈশিষ্ট্য, ব্যাকটেরিয়ার শ্রেণিবিভাগ উদাহরণসহ, ব্যাকটেরিয়ার রোগ—এগুলো জানতে হবে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ অধ্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো বুঝে পড়তে হবে। সপ্তম অধ্যায়টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায়ের কিছু বৈশিষ্ট্য, প্রকারভেদ, ছক—এগুলো জানতে হবে।

সাইকাস—এই অধ্যায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক। অষ্টম অধ্যায় থেকে ভাজকটিস্যুর বৈশিষ্ট্য, কাজ, প্রকারভেদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া টিস্যুতন্ত্র, ভাসকুলার বান্ডেলের প্রকারভেদ উদাহরণসহ, জাইলেম, একবীজপত্রী, দ্বিবীজপত্রী সম্পর্কে যে তথ্যগুলো ছক আকারে দেওয়া আছে, সেগুলো অবশ্যই জানতে হবে।

নবম অধ্যায়টি একটু বড় তাই মেডিকেলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ টপিক বুঝে পড়তে হবে। এই অধ্যায়ে মাইক্রো মৌল, ম্যাক্রো মৌলের উদাহরণ, কিছু মতবাদ, প্রভাবক, প্রস্বেদনের প্রকারভেদ, পত্ররন্ধ্র খোলা বন্ধ, পত্ররন্ধ্রের সংখ্যা, কোথায় সালোকসংশ্লেষণ সবচেয়ে বেশি হয়, সালোকসংশ্লেষণ বা ফটোসিনথেসিসে কী কী প্রয়োজন, কোথায় ঘটে, শ্বসন, লিমিটিং ফ্যাক্টর এবং বোল্ট করা লাইনগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

রসায়ন প্রথম পত্র
রসায়ন প্রথম পত্রের প্রথম অধ্যায় থেকে বিগত বছরগুলোতে প্রশ্ন আসতে দেখা গেছে। প্রথম অধ্যায় থেকে ল্যাবরেটরির ব্যবহারবিধি দিয়ে যে টপিকটি আছে, সেটি ভালোভাবে পড়তে হবে। এ ছাড়া কোমর গ্লাস সামগ্রী, পাইরেক্স গ্লাস, গ্লাস সামগ্রী ধৌতকরণ, প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থের বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ—এ অধ্যায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টপিক। মেজারিং সিলিন্ডার, মেজারিং ফ্লাস্ক, বুরেট, পিপেটের কাজ, রাসায়নিক পদার্থের হ্যাজার্ড দিয়ে যে সফটওয়্যার আছে, সেটি ভালোভাবে পড়তে হবে। দ্বিতীয় অধ্যায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায় একটু জোর দিয়ে পড়তে হবে। এ অধ্যায়ে কিছু ছোট ছোট অঙ্ক রয়েছে, যেগুলো আয়ত্ত করতে হবে। তড়িৎ চুম্বকীয় বর্ণালি, বিভিন্ন মান, পরমাণু ও পরমাণুর মূল কণিকা—এগুলো গুরুত্বপূর্ণ টপিক। তৃতীয় অধ্যায়ে বিভিন্ন অবস্থান্তর ধাতু, অবস্থান্তর ধাতুর আয়নের বর্ণ, প্যারাম্যাগনেটিক, ফেরোম্যাগনেটিক, ডায়া ম্যাগনেটিক—এসব কী এবং এদের উদাহরণ, ল্যান্থানাইড ও একটি নাইড ধর্মাবলি এবং উদাহরণ, ইলেকট্রন আসক্তি, তড়িৎ ঋণাত্মকতা, বিভিন্ন মৌলের তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান, পর্যায়বৃত্ত ধর্ম, সংকর অরবিটালের প্রকারভেদ, এদের গঠন, বন্ধন কোণ, নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন যোগল, এগুলো গুরুত্বপূর্ণ টপিক।

চতুর্থ অধ্যায় উভমুখী বিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য, প্রভাবকের বৈশিষ্ট্য প্রকারভেদ উদাহরণ এই অধ্যায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায়ে PH, pOH, দিয়ে যে অঙ্ক আছে, সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পঞ্চম অধ্যায় থেকে প্রিজারভেটিভস টপিকটি গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রেণির কলয়েড, সাসপেনশন, সাসপেনশনের ভূমিকা, দুধে শতকরা সংযুক্তি, টেলকম পাউডার, বেবি পাউডার প্রস্তুতি, এদের উপাদান, গ্লাস ক্লিনার ও টয়লেট ক্লিনার প্রস্তুতির উপাদান গুরুত্বপূর্ণ।

রসায়ন দ্বিতীয় পত্র
প্রথম অধ্যায়টি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায়ের পড়াশোনার মধ্যে বিভিন্ন মান, একক, গাণিতিক সূত্রাবলি, ম্যাথ, পার্থক্য, গ্যাস সিলিন্ডারকরণে গ্যাস সূত্রের প্রয়োগ, গ্রিনহাউস গ্যাস, ওজোন স্তর, সিএফসি, অ্যাসিড বৃষ্টি, লুইস অ্যাসিড, BOD-এর মান এবং মান অনুযায়ী পানির অবস্থা, WHO অনুমোদিত পানির গ্রহণযোগ্য মানের ছক, ভারী ধাতু ও এদের প্রভাব, বায়ুমণ্ডলের স্তর, ব্যাপন, অনুবন্ধী অ্যাসিড ও ক্ষারের উদাহরণ গুরুত্বপূর্ণ।

দ্বিতীয় অধ্যায়টি, অর্থাৎ জৈব রসায়ন অধিক বড় হওয়ায় একধরনের ভীতি কাজ করে এবং এ অধ্যায়টি সবার কাছে কম-বেশি কঠিন মনে হয়। তাই গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো আগে বুঝে সেগুলো আয়ত্ত করতে হবে। এই অধ্যায় জৈব ও অজৈব যৌগের ছক, জৈব যৌগের শ্রেণিবিভাগ উদাহরণসহ, ইথেন, ইথিন ও ইথাইন অণুতে C-এর অনুকরণীকরণ ও বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দিয়ে যে ছক রয়েছে, সেটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া সমানুতার প্রকারভেদ ও উদাহরণ, বিভিন্ন পরীক্ষা, শনাক্তকরণ, বৈশিষ্ট্য, নাইট্রোগ্লিসারিন, প্যারাসিটামল, শ্রেণিবিভাগ ও এদের উদাহরণ, অ্যালকোহল প্রস্তুতি ও শনাক্তকরণ, হ্যালোজেনো অ্যালকেনের বিশেষ ব্যবহার, অ্যালকোহলের শ্রেণিবিভাগ ও উদাহরণ গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন

স্বপ্ন যাঁদের সরকারি মেডিকেল কলেজ

তৃতীয় অধ্যায় থেকে সূত্র, ছোট ছোট গাণিতিক বিষয়, জারণ সংখ্যা, জারক, বিজারক, অ্যাসিড ক্ষার নির্দেশক প্রশমন বিন্দু, ক্রোমাটোগ্রাফি গুরুত্বপূর্ণ টপিক।
চতুর্থ অধ্যায় থেকে তড়িৎ পরিবাহীর শ্রেণিবিভাগ উদাহরণ, পরিবাহিতার প্রকারভেদ, একক, তড়িৎদ্বার ও এর প্রকারভেদ, লেড স্টোরেজ ব্যাটারি, লিথিয়াম ব্যাটারি সুবিধা ও অসুবিধা, সারণি ৪.৪, ৪.৫ এই টপিকগুলো এ অধ্যায় থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পঞ্চম অধ্যায় থেকে বাংলাদেশে কয়লার মান ও ব্যবহার, ইউরিয়া উৎপাদনের মূলনীতি, বিভিন্ন প্রকার কাচ, বিভিন্ন ধরনের সিমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ টপিক। এ ছাড়া এ অধ্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মান, সংকেত ও ছক রয়েছে, সেগুলো আয়ত্ত করতে হবে।

পদার্থবিজ্ঞান প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র: পদার্থবিজ্ঞান প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের জন্য যে বিষয়গুলো আয়ত্ত করতে হবে, সেগুলো হলো সূত্র, বিভিন্ন মান, সংকেত, গাণিতিক বিষয়াবলি, বিভিন্ন একক, মাত্রা, বিভিন্ন মতবাদ, সাল, প্রকারভেদ, শ্রেণিবিভাগ ও উদাহরণ, বিভিন্ন ছক, পার্থক্য, বিজ্ঞানের নাম।

ইংরেজি
ইংরেজির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো হলো parts of speech, tense, proverbs, synonyms, antonyms, word meaning, spelling. এই টপিকগুলো খুব ভালোভাবে জানতে হবে।

সাধারণ জ্ঞান
সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য-সম্পর্কিত যত রকম তথ্য আছে, সবগুলো আয়ত্ত করতে হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থাপত্য, জলবায়ু, বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ও দর্শনীয় স্থাপনা, নদ-নদী, প্রাচীন বাংলার ইতিহাস, সাহিত্য, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বিভিন্ন শাসনামল সম্পর্কে জানতে হবে।
সর্বোপরি বিগত ১০ বছরের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করতে হবে এবং প্রতিটি অধ্যায় শেষে অনুশীলনীতে যে প্রশ্নগুলো দেওয়া আছে, সেগুলো প্র্যাকটিস করতে হবে; বিশেষ করে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের ক্ষেত্রে অনুশীলনী থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন বিগত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় আসতে দেখা গেছে।
ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য মূল বইয়ের বিকল্প কিছুই নেই। সুতরাং মূল বই খুব ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণে আশা করি আমার এই ছোট্ট সাজেশনটি সবার সহায়ক হবে।

স্বপ্ন যাঁদের সরকারি মেডিকেল কলেজ: পর্ব-২

সামিহা সারা

প্রতীকী ছবি

পর্ব-২
এইচএসসি পরীক্ষার পর শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। অনেকেরই স্বপ্ন থাকে সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার। যেহেতু এইচএসসির পর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্য তিন মাসের মতো সময় পাওয়া যায়, তাই প্রস্তুতি নিতে হবে এখন থেকেই। কিছু পদ্ধতি ও পড়াশোনার কৌশলই হতে পারে স্বপ্নপূরণের সহায়ক।

‘স্বপ্ন যাঁদের সরকারি মেডিকেল কলেজ’ এই শিরোনামের ১ম পর্বে বই নির্বাচন ও প্রাণিবিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। আজ থাকছে উদ্ভিদবিজ্ঞান, রসায়ন, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান অংশের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা।

উদ্ভিদবিজ্ঞান 
উদ্ভিদবিজ্ঞান বইয়ে মোট ১২টি অধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায় থেকে কোষ ঝিল্লি, কোষ প্রাচীরের উপাদান, কাজ, ঝিল্লিবিহীন ও ঝিল্লিযুক্ত অঙ্গানু, মাইটোকন্ড্রিয়া, গলগি বডি, নিউক্লিয়াস প্লাস্টিড, সেন্ট্রিওল, পার-অক্সিসোম—এই টপিকগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। উদাহরণস্বরূপ পার-অক্সিসোমে কোন এনজাইম থাকে?

বা পার-অক্সিসোম কোথায় অধিক পাওয়া যায়? কোষগহ্বরের কাজ, গ্লাই-অক্সিজোমের কাজ, ক্রোমোজোমের আকৃতি, প্রকারভেদ, ক্রোমোজোমের রাসায়নিক গঠন, DNA এবং RNA-এর পার্থক্য, RNA-এর প্রকারভেদ, ট্রিপলেট (64), শুরু ও সমাপ্তি কোডন। এ ছাড়া অধ্যায়ের সবগুলো ছক, অধ্যায়ের শেষে যে সারসংক্ষেপ ও দক্ষতা অর্জন এবং অনুশীলনী রয়েছে, সেগুলো অনুশীলন করতে হবে। দ্বিতীয় অধ্যায় থেকে মাইটোসিস, মিয়োসিস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। এ ছাড়া কোষচক্র, সিন্যাপসিস, বাইভেলেন্ট, টেট্রাড, ক্রসিং ওভার—এগুলো সম্পর্কে জানতে হবে।

তৃতীয় অধ্যায়ে কার্বোহাইড্রেটের প্রকারভেদ উদাহরণসহ পড়তে হবে। এ ছাড়া স্টার্চ, সেলুলোজ, গ্লাইকোজেনের কাজ ও ধর্ম সম্পর্কে জানতে হবে। প্রোটিন ও লিপিড—এই দুটি টপিক খুব ভালোভাবে গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। এ ছাড়া এনজাইমের ভৌত বৈশিষ্ট্য এবং প্রভাবক জানতেই হবে। কোন এনজাইম কী কাজ করে এবং প্রস্থেটিক গ্রুপ, কো-ফ্যাক্টর, কো-এনজাইম সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। চতুর্থ অধ্যায়ে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বৈশিষ্ট্য, ব্যাকটেরিয়ার শ্রেণিবিভাগ উদাহরণসহ, ব্যাকটেরিয়ার রোগ—এগুলো জানতে হবে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ অধ্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো বুঝে পড়তে হবে। সপ্তম অধ্যায়টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায়ের কিছু বৈশিষ্ট্য, প্রকারভেদ, ছক—এগুলো জানতে হবে।

সাইকাস—এই অধ্যায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক। অষ্টম অধ্যায় থেকে ভাজকটিস্যুর বৈশিষ্ট্য, কাজ, প্রকারভেদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া টিস্যুতন্ত্র, ভাসকুলার বান্ডেলের প্রকারভেদ উদাহরণসহ, জাইলেম, একবীজপত্রী, দ্বিবীজপত্রী সম্পর্কে যে তথ্যগুলো ছক আকারে দেওয়া আছে, সেগুলো অবশ্যই জানতে হবে।

নবম অধ্যায়টি একটু বড় তাই মেডিকেলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ টপিক বুঝে পড়তে হবে। এই অধ্যায়ে মাইক্রো মৌল, ম্যাক্রো মৌলের উদাহরণ, কিছু মতবাদ, প্রভাবক, প্রস্বেদনের প্রকারভেদ, পত্ররন্ধ্র খোলা বন্ধ, পত্ররন্ধ্রের সংখ্যা, কোথায় সালোকসংশ্লেষণ সবচেয়ে বেশি হয়, সালোকসংশ্লেষণ বা ফটোসিনথেসিসে কী কী প্রয়োজন, কোথায় ঘটে, শ্বসন, লিমিটিং ফ্যাক্টর এবং বোল্ট করা লাইনগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

রসায়ন প্রথম পত্র
রসায়ন প্রথম পত্রের প্রথম অধ্যায় থেকে বিগত বছরগুলোতে প্রশ্ন আসতে দেখা গেছে। প্রথম অধ্যায় থেকে ল্যাবরেটরির ব্যবহারবিধি দিয়ে যে টপিকটি আছে, সেটি ভালোভাবে পড়তে হবে। এ ছাড়া কোমর গ্লাস সামগ্রী, পাইরেক্স গ্লাস, গ্লাস সামগ্রী ধৌতকরণ, প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্ট্যান্ডার্ড পদার্থের বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ—এ অধ্যায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টপিক। মেজারিং সিলিন্ডার, মেজারিং ফ্লাস্ক, বুরেট, পিপেটের কাজ, রাসায়নিক পদার্থের হ্যাজার্ড দিয়ে যে সফটওয়্যার আছে, সেটি ভালোভাবে পড়তে হবে। দ্বিতীয় অধ্যায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায় একটু জোর দিয়ে পড়তে হবে। এ অধ্যায়ে কিছু ছোট ছোট অঙ্ক রয়েছে, যেগুলো আয়ত্ত করতে হবে। তড়িৎ চুম্বকীয় বর্ণালি, বিভিন্ন মান, পরমাণু ও পরমাণুর মূল কণিকা—এগুলো গুরুত্বপূর্ণ টপিক। তৃতীয় অধ্যায়ে বিভিন্ন অবস্থান্তর ধাতু, অবস্থান্তর ধাতুর আয়নের বর্ণ, প্যারাম্যাগনেটিক, ফেরোম্যাগনেটিক, ডায়া ম্যাগনেটিক—এসব কী এবং এদের উদাহরণ, ল্যান্থানাইড ও একটি নাইড ধর্মাবলি এবং উদাহরণ, ইলেকট্রন আসক্তি, তড়িৎ ঋণাত্মকতা, বিভিন্ন মৌলের তড়িৎ ঋণাত্মকতার মান, পর্যায়বৃত্ত ধর্ম, সংকর অরবিটালের প্রকারভেদ, এদের গঠন, বন্ধন কোণ, নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন যোগল, এগুলো গুরুত্বপূর্ণ টপিক।

চতুর্থ অধ্যায় উভমুখী বিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য, প্রভাবকের বৈশিষ্ট্য প্রকারভেদ উদাহরণ এই অধ্যায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায়ে PH, pOH, দিয়ে যে অঙ্ক আছে, সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পঞ্চম অধ্যায় থেকে প্রিজারভেটিভস টপিকটি গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রেণির কলয়েড, সাসপেনশন, সাসপেনশনের ভূমিকা, দুধে শতকরা সংযুক্তি, টেলকম পাউডার, বেবি পাউডার প্রস্তুতি, এদের উপাদান, গ্লাস ক্লিনার ও টয়লেট ক্লিনার প্রস্তুতির উপাদান গুরুত্বপূর্ণ।

রসায়ন দ্বিতীয় পত্র
প্রথম অধ্যায়টি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায়ের পড়াশোনার মধ্যে বিভিন্ন মান, একক, গাণিতিক সূত্রাবলি, ম্যাথ, পার্থক্য, গ্যাস সিলিন্ডারকরণে গ্যাস সূত্রের প্রয়োগ, গ্রিনহাউস গ্যাস, ওজোন স্তর, সিএফসি, অ্যাসিড বৃষ্টি, লুইস অ্যাসিড, BOD-এর মান এবং মান অনুযায়ী পানির অবস্থা, WHO অনুমোদিত পানির গ্রহণযোগ্য মানের ছক, ভারী ধাতু ও এদের প্রভাব, বায়ুমণ্ডলের স্তর, ব্যাপন, অনুবন্ধী অ্যাসিড ও ক্ষারের উদাহরণ গুরুত্বপূর্ণ।

দ্বিতীয় অধ্যায়টি, অর্থাৎ জৈব রসায়ন অধিক বড় হওয়ায় একধরনের ভীতি কাজ করে এবং এ অধ্যায়টি সবার কাছে কম-বেশি কঠিন মনে হয়। তাই গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো আগে বুঝে সেগুলো আয়ত্ত করতে হবে। এই অধ্যায় জৈব ও অজৈব যৌগের ছক, জৈব যৌগের শ্রেণিবিভাগ উদাহরণসহ, ইথেন, ইথিন ও ইথাইন অণুতে C-এর অনুকরণীকরণ ও বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দিয়ে যে ছক রয়েছে, সেটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া সমানুতার প্রকারভেদ ও উদাহরণ, বিভিন্ন পরীক্ষা, শনাক্তকরণ, বৈশিষ্ট্য, নাইট্রোগ্লিসারিন, প্যারাসিটামল, শ্রেণিবিভাগ ও এদের উদাহরণ, অ্যালকোহল প্রস্তুতি ও শনাক্তকরণ, হ্যালোজেনো অ্যালকেনের বিশেষ ব্যবহার, অ্যালকোহলের শ্রেণিবিভাগ ও উদাহরণ গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন

স্বপ্ন যাঁদের সরকারি মেডিকেল কলেজ

তৃতীয় অধ্যায় থেকে সূত্র, ছোট ছোট গাণিতিক বিষয়, জারণ সংখ্যা, জারক, বিজারক, অ্যাসিড ক্ষার নির্দেশক প্রশমন বিন্দু, ক্রোমাটোগ্রাফি গুরুত্বপূর্ণ টপিক।
চতুর্থ অধ্যায় থেকে তড়িৎ পরিবাহীর শ্রেণিবিভাগ উদাহরণ, পরিবাহিতার প্রকারভেদ, একক, তড়িৎদ্বার ও এর প্রকারভেদ, লেড স্টোরেজ ব্যাটারি, লিথিয়াম ব্যাটারি সুবিধা ও অসুবিধা, সারণি ৪.৪, ৪.৫ এই টপিকগুলো এ অধ্যায় থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পঞ্চম অধ্যায় থেকে বাংলাদেশে কয়লার মান ও ব্যবহার, ইউরিয়া উৎপাদনের মূলনীতি, বিভিন্ন প্রকার কাচ, বিভিন্ন ধরনের সিমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ টপিক। এ ছাড়া এ অধ্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মান, সংকেত ও ছক রয়েছে, সেগুলো আয়ত্ত করতে হবে।

পদার্থবিজ্ঞান প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র: পদার্থবিজ্ঞান প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের জন্য যে বিষয়গুলো আয়ত্ত করতে হবে, সেগুলো হলো সূত্র, বিভিন্ন মান, সংকেত, গাণিতিক বিষয়াবলি, বিভিন্ন একক, মাত্রা, বিভিন্ন মতবাদ, সাল, প্রকারভেদ, শ্রেণিবিভাগ ও উদাহরণ, বিভিন্ন ছক, পার্থক্য, বিজ্ঞানের নাম।

ইংরেজি
ইংরেজির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো হলো parts of speech, tense, proverbs, synonyms, antonyms, word meaning, spelling. এই টপিকগুলো খুব ভালোভাবে জানতে হবে।

সাধারণ জ্ঞান
সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য-সম্পর্কিত যত রকম তথ্য আছে, সবগুলো আয়ত্ত করতে হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থাপত্য, জলবায়ু, বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ও দর্শনীয় স্থাপনা, নদ-নদী, প্রাচীন বাংলার ইতিহাস, সাহিত্য, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বিভিন্ন শাসনামল সম্পর্কে জানতে হবে।
সর্বোপরি বিগত ১০ বছরের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করতে হবে এবং প্রতিটি অধ্যায় শেষে অনুশীলনীতে যে প্রশ্নগুলো দেওয়া আছে, সেগুলো প্র্যাকটিস করতে হবে; বিশেষ করে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের ক্ষেত্রে অনুশীলনী থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন বিগত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় আসতে দেখা গেছে।
ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য মূল বইয়ের বিকল্প কিছুই নেই। সুতরাং মূল বই খুব ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণে আশা করি আমার এই ছোট্ট সাজেশনটি সবার সহায়ক হবে।