ক্যারিয়ার বিবেচনায় পড়াশোনা করতে হবে

ড. এ কে এম জাকির হোসেন

ভালো ক্যারিয়ার গড়তে সফল মানুষদের অনুপ্রেরণা বা পরামর্শ যেমন জরুরি, তেমনি নিজেকে বিকশিত করতে শুধু পড়াশোনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ভাষা, আইটি, সহশিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকতে হবে।

সবার জীবনেই কম-বেশি বিষণ্ণতা থাকে, সেই বিষণ্ণতা থেকে শক্তি নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে সফলতা অর্জন করতে হয়। শুধু নিজ গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চোখ-কান খোলা রেখে কাজ করতে হবে। থাকতে হবে বৈশ্বিক সংযোগ।

নিজেকে নিয়ে গবেষণা
নিজের সম্পর্কে গবেষণা করতে হবে। নিজেকে চিন্তা করতে হবে কোনদিকে আমার ক্যারিয়ার গড়তে চাই। কোথায় আমার শক্তি, কোথায় আমার দুর্বলতা, কোথায় আমার সম্ভাবনা—এটা নিরূপণ করতে হবে। আপনি যেদিকে ক্যারিয়ার গড়তে চান, সেদিকে যাঁরা সফল মানুষ রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের জীবন কীভাবে গঠন করেছেন বা তাঁদের জীবনে সফলতার ধাপগুলো কী, সেটা শুনতে পারেন। ইউটিউবেও প্রচুর সফল মানুষের জীবনী বা তাঁদের নিজস্ব ভাষ্য শোনার সুযোগ রয়েছে, যা আপনাকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করবে। নিজেকে সতর্কভাবে আগাতে হবে।

অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ 
বিভিন্ন বিভাগে যাঁরা অভিজ্ঞ রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে মিশতে হবে, তাঁদের সম্পর্কে জানতে হবে, তাঁদের সফলতার পথ সম্পর্কে জানতে হবে, তাঁদের পরামর্শ নিতে হবে। তাঁদের সব পরামর্শই নিতে হবে এমন নয়, যেটি আপনার ক্যারিয়ার গঠনে প্রয়োজন বা আপনার নিজেকে বিকাশে প্রয়োজনীয়, সেটি আপনি গ্রহণ করে নিজেকে গঠনে কাজে লাগাতে পারেন।

ক্যারিয়ার বিবেচনায় পড়াশোনা
আপনার ক্যারিয়ার কোনদিকে গড়ার ইচ্ছা, সেদিকে সুনির্দিষ্টভাবে ফোকাস করতে হবে। হতে পারে আপনি শিক্ষক হতে চান, বিসিএস ক্যাডার হতে চান, আইটি সেক্টরে ভালো হতে চান, উদ্যোক্তা হতে চান, দ্বিতীয় বা তৃতীয় বর্ষ থেকেই সে বিষয়ে ফোকাস করতে হবে। সে অনুযায়ী যে ধরনের পড়াশোনা করা বা প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি, তা নিতে হবে।

হতে হবে কৌশলী
আপনি যেদিকে ক্যারিয়ার গড়তে চান মানসিকভাবে সেদিকে পূর্ণাঙ্গভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। মানসিক প্রস্তুতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আপনি যদি সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পান, তাহলে কিন্তু খুব একটা আগাতে পারবেন না। আপনি যদি দোটানায় থাকেন, তা হলেও সমস্যা। দোটানায় থাকা যাবে না। সাহস নিয়ে আগাতে হবে, ভয় পাওয়া যাবে না। সুনির্দিষ্টভাবে কৌশলগত পরিকল্পনা নিয়ে অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে আগাতে হবে। কৌশলী হতে হবে। সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সাহসী হতে হবে।

সহশিক্ষা কার্যক্রমের বিকল্প নেই 
আপনার নিজেকে বিকাশ ও ক্যারিয়ার বিকাশের জন্য সহশিক্ষা কার্যক্রমের কোনো বিকল্প নেই। সেটি বিতর্ক হতে পারে, পাঠক ফোরাম হতে পারে, খেলাধুলা হতে পারে, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম হতে পারে, পত্রিকায় লেখালেখি হতে পারে। এসব কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করলে ভবিষ্যতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। সমাজের শিক্ষিত মানুষ হিসেবে আমাদের কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকে, এগুলো নিয়ে কাজ করলে কিন্তু মনটাও ভালো থাকবে।

সব সময় স্মার্ট থাকতে হবে
আপনাকে সব সময় স্মার্ট থাকতে হবে। আপনি যদি ভাবেন ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট করার পর স্মার্টলি চলাফেরা করবেন, সেটি আপনার ভুল ভাবনা হবে। প্রথম দিন থেকেই আপনার চলাফেরা, কথাবার্তা, কমিউনিকেশন, নেটওয়ার্কিং স্মার্টলি করতে হবে। এই স্মার্টনেস আপনাকে সবক্ষেত্রেই এগিয়ে রাখবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজের মধ্যে স্মার্টনেস রাখতে হবে।

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে
আপনার পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিষয়, বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। কোথায় কী কী সুযোগ রয়েছে, কোন প্রতিষ্ঠান কিসের জন্য ভালো, কোন দেশে কী সম্ভাবনা—এসব সম্পর্কে সবিস্তারে ধারণা রাখতে হবে।

আইটির ওপর দক্ষতা
আইটির ওপর ধারণা রাখতে হবে। সর্বশেষ কী টেকনোলজিক্যাল আসপেক্ট আসছে, স্মার্ট বাংলাদেশের, সে বিষয়েও সম্যক জ্ঞান থাকতে হবে। কোনো বিষয়ে অলসতা রাখা যাবে না। আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। আপনি যদি ইফিশিয়েন্ট তৈরি করতে চান, তা হলে এগুলো সবই সুনির্দিষ্টভাবে সাহসী ভূমিকা নিয়ে রপ্ত করতে হবে।

ড. এ কে এম জাকির হোসেন, উপাচার্য, কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

অনুলিখন: মো. আশিকুর রহমান

ক্যারিয়ার বিবেচনায় পড়াশোনা করতে হবে

ড. এ কে এম জাকির হোসেন

ভালো ক্যারিয়ার গড়তে সফল মানুষদের অনুপ্রেরণা বা পরামর্শ যেমন জরুরি, তেমনি নিজেকে বিকশিত করতে শুধু পড়াশোনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ভাষা, আইটি, সহশিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকতে হবে।

সবার জীবনেই কম-বেশি বিষণ্ণতা থাকে, সেই বিষণ্ণতা থেকে শক্তি নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে সফলতা অর্জন করতে হয়। শুধু নিজ গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চোখ-কান খোলা রেখে কাজ করতে হবে। থাকতে হবে বৈশ্বিক সংযোগ।

নিজেকে নিয়ে গবেষণা
নিজের সম্পর্কে গবেষণা করতে হবে। নিজেকে চিন্তা করতে হবে কোনদিকে আমার ক্যারিয়ার গড়তে চাই। কোথায় আমার শক্তি, কোথায় আমার দুর্বলতা, কোথায় আমার সম্ভাবনা—এটা নিরূপণ করতে হবে। আপনি যেদিকে ক্যারিয়ার গড়তে চান, সেদিকে যাঁরা সফল মানুষ রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের জীবন কীভাবে গঠন করেছেন বা তাঁদের জীবনে সফলতার ধাপগুলো কী, সেটা শুনতে পারেন। ইউটিউবেও প্রচুর সফল মানুষের জীবনী বা তাঁদের নিজস্ব ভাষ্য শোনার সুযোগ রয়েছে, যা আপনাকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করবে। নিজেকে সতর্কভাবে আগাতে হবে।

অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ 
বিভিন্ন বিভাগে যাঁরা অভিজ্ঞ রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে মিশতে হবে, তাঁদের সম্পর্কে জানতে হবে, তাঁদের সফলতার পথ সম্পর্কে জানতে হবে, তাঁদের পরামর্শ নিতে হবে। তাঁদের সব পরামর্শই নিতে হবে এমন নয়, যেটি আপনার ক্যারিয়ার গঠনে প্রয়োজন বা আপনার নিজেকে বিকাশে প্রয়োজনীয়, সেটি আপনি গ্রহণ করে নিজেকে গঠনে কাজে লাগাতে পারেন।

ক্যারিয়ার বিবেচনায় পড়াশোনা
আপনার ক্যারিয়ার কোনদিকে গড়ার ইচ্ছা, সেদিকে সুনির্দিষ্টভাবে ফোকাস করতে হবে। হতে পারে আপনি শিক্ষক হতে চান, বিসিএস ক্যাডার হতে চান, আইটি সেক্টরে ভালো হতে চান, উদ্যোক্তা হতে চান, দ্বিতীয় বা তৃতীয় বর্ষ থেকেই সে বিষয়ে ফোকাস করতে হবে। সে অনুযায়ী যে ধরনের পড়াশোনা করা বা প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি, তা নিতে হবে।

হতে হবে কৌশলী
আপনি যেদিকে ক্যারিয়ার গড়তে চান মানসিকভাবে সেদিকে পূর্ণাঙ্গভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। মানসিক প্রস্তুতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আপনি যদি সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পান, তাহলে কিন্তু খুব একটা আগাতে পারবেন না। আপনি যদি দোটানায় থাকেন, তা হলেও সমস্যা। দোটানায় থাকা যাবে না। সাহস নিয়ে আগাতে হবে, ভয় পাওয়া যাবে না। সুনির্দিষ্টভাবে কৌশলগত পরিকল্পনা নিয়ে অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে আগাতে হবে। কৌশলী হতে হবে। সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সাহসী হতে হবে।

সহশিক্ষা কার্যক্রমের বিকল্প নেই 
আপনার নিজেকে বিকাশ ও ক্যারিয়ার বিকাশের জন্য সহশিক্ষা কার্যক্রমের কোনো বিকল্প নেই। সেটি বিতর্ক হতে পারে, পাঠক ফোরাম হতে পারে, খেলাধুলা হতে পারে, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম হতে পারে, পত্রিকায় লেখালেখি হতে পারে। এসব কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করলে ভবিষ্যতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। সমাজের শিক্ষিত মানুষ হিসেবে আমাদের কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকে, এগুলো নিয়ে কাজ করলে কিন্তু মনটাও ভালো থাকবে।

সব সময় স্মার্ট থাকতে হবে
আপনাকে সব সময় স্মার্ট থাকতে হবে। আপনি যদি ভাবেন ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট করার পর স্মার্টলি চলাফেরা করবেন, সেটি আপনার ভুল ভাবনা হবে। প্রথম দিন থেকেই আপনার চলাফেরা, কথাবার্তা, কমিউনিকেশন, নেটওয়ার্কিং স্মার্টলি করতে হবে। এই স্মার্টনেস আপনাকে সবক্ষেত্রেই এগিয়ে রাখবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজের মধ্যে স্মার্টনেস রাখতে হবে।

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে
আপনার পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিষয়, বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। কোথায় কী কী সুযোগ রয়েছে, কোন প্রতিষ্ঠান কিসের জন্য ভালো, কোন দেশে কী সম্ভাবনা—এসব সম্পর্কে সবিস্তারে ধারণা রাখতে হবে।

আইটির ওপর দক্ষতা
আইটির ওপর ধারণা রাখতে হবে। সর্বশেষ কী টেকনোলজিক্যাল আসপেক্ট আসছে, স্মার্ট বাংলাদেশের, সে বিষয়েও সম্যক জ্ঞান থাকতে হবে। কোনো বিষয়ে অলসতা রাখা যাবে না। আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। আপনি যদি ইফিশিয়েন্ট তৈরি করতে চান, তা হলে এগুলো সবই সুনির্দিষ্টভাবে সাহসী ভূমিকা নিয়ে রপ্ত করতে হবে।

ড. এ কে এম জাকির হোসেন, উপাচার্য, কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

অনুলিখন: মো. আশিকুর রহমান