উচ্চশিক্ষার ভ্রান্তিগুলো

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

উচ্চশিক্ষাসহ শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা যে অর্থ বিনিয়োগ করি, তা দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সর্বনিম্ন। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের বেতন ও স্বীকৃতি এতই কম যে মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিতে চান না। যে দেশের উচ্চশিক্ষাব্যবস্থা করপোরেট বাজারের ব্যবস্থাপক ও সরকারি প্রশাসক তৈরির একটি উপায় হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়, সে দেশে বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক, গবেষক, চিন্তাবিদ ও পরিবর্তন নিশ্চিতকারীর সংখ্যা হতাশাজনকভাবেই কম থেকে যায়। এই ভুল ব্র্যান্ডিং উচ্চশিক্ষায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করে।

নৈরাজ্য কথাটি কিছুটা হলেও আমাদের উচ্চশিক্ষায় প্রয়োগ করা যায়। এ মুহূর্তে দেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা দ্বিগুণ, যা বিশ্বের আর কোথাও আছে কি না, জানি না। কিছু ব্যতিক্রম বাদে এরা যে শিক্ষা দেয়, তাকে বিশ্ব দূরে থাকুক, দেশীয় মানেও নিম্ন থেকে মাঝারি পর্যায়েরই বলা যায়। শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে আশ্চর্যজনকভাবে কমসংখ্যক বিষয়ে এবং প্রায় সবই বাজার–সমর্থিত। বাজারের সূত্র মেনেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো—কিছু ব্যতিক্রম বাদে—ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের চরিত্র নিয়েছে।

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাধারণত বাজারবান্ধব বিষয় পড়ায় না, তবে এখন তাদের সেই দিকে নেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। তা সত্ত্বেও বলা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের চরিত্র অনেকটাই ধরে রেখেছে। তবে যে নৈরাজ্য এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে জন–আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী কার্যকর হতে দিচ্ছে না, তার উৎসগুলো অন্যতর। এর একটি প্রয়োজনের তুলনায় কম বিনিয়োগ। দ্বিতীয়টি শিক্ষকরাজনীতি ও তৃতীয়টি নৈরাশ্যজনক ছাত্ররাজনীতি।

ভিত্তি পর্যায়ের দুর্বলতা শিশুদের পরবর্তী স্তরের শিক্ষার অর্জন ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত করে

উচ্চশিক্ষার ভ্রান্তিগুলো

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

উচ্চশিক্ষাসহ শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা যে অর্থ বিনিয়োগ করি, তা দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সর্বনিম্ন। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের বেতন ও স্বীকৃতি এতই কম যে মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিতে চান না। যে দেশের উচ্চশিক্ষাব্যবস্থা করপোরেট বাজারের ব্যবস্থাপক ও সরকারি প্রশাসক তৈরির একটি উপায় হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়, সে দেশে বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক, গবেষক, চিন্তাবিদ ও পরিবর্তন নিশ্চিতকারীর সংখ্যা হতাশাজনকভাবেই কম থেকে যায়। এই ভুল ব্র্যান্ডিং উচ্চশিক্ষায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করে।

নৈরাজ্য কথাটি কিছুটা হলেও আমাদের উচ্চশিক্ষায় প্রয়োগ করা যায়। এ মুহূর্তে দেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা দ্বিগুণ, যা বিশ্বের আর কোথাও আছে কি না, জানি না। কিছু ব্যতিক্রম বাদে এরা যে শিক্ষা দেয়, তাকে বিশ্ব দূরে থাকুক, দেশীয় মানেও নিম্ন থেকে মাঝারি পর্যায়েরই বলা যায়। শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে আশ্চর্যজনকভাবে কমসংখ্যক বিষয়ে এবং প্রায় সবই বাজার–সমর্থিত। বাজারের সূত্র মেনেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো—কিছু ব্যতিক্রম বাদে—ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের চরিত্র নিয়েছে।

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাধারণত বাজারবান্ধব বিষয় পড়ায় না, তবে এখন তাদের সেই দিকে নেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। তা সত্ত্বেও বলা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের চরিত্র অনেকটাই ধরে রেখেছে। তবে যে নৈরাজ্য এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে জন–আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী কার্যকর হতে দিচ্ছে না, তার উৎসগুলো অন্যতর। এর একটি প্রয়োজনের তুলনায় কম বিনিয়োগ। দ্বিতীয়টি শিক্ষকরাজনীতি ও তৃতীয়টি নৈরাশ্যজনক ছাত্ররাজনীতি।

ভিত্তি পর্যায়ের দুর্বলতা শিশুদের পরবর্তী স্তরের শিক্ষার অর্জন ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত করে