সাক্ষাৎকারে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার

পরীক্ষা নয়, এটি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২২ * প্রস্তুতিমূলক * বিশেষ সংখ্যা

মুসতাক আহমদ

আগামী ৬ নভেম্বর শুরু হচ্ছে এইচএসসি, আলিম ও এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষা। এ উপলক্ষ্যে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক তপন কুমার সরকারের মুখোমুখি হয়েছে যুগান্তর। একান্ত আলাপচারিতায় পরীক্ষায় ভালো করার ব্যাপারে তিনি ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। পাশাপাশি পরীক্ষার আগের রাতে ও পরীক্ষাকালে বেশকিছু করণীয় সম্পর্কেও আলোকপাত করেছেন। যুগান্তরের পক্ষে সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার মুসতাক আহমদ।

যুগান্তর : আর মাত্র কয়েকদিন পরই ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা শুরু হবে। ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে আপনার কোনো পরামর্শ আছে কিনা?

চেয়ারম্যান : প্রথমেই আমি আমাদের শিক্ষার্থীদের শুভকামনা জানাতে চাই। তারা বৈশ্বিক মহামারি কোভিড পরিস্থিতির মতো একটি ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ কঠিন সময় পার করে এসে তারা আজকে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাস্তবতা বিবেচনা করে সরকার আগেই তাদের সিলেবাস ছোট করেছে-যেটাকে আমরা ‘কাস্টমাইজড’ সিলেবাস বলছি। ‘কাস্টামাইজড’ মানে কিন্তু এটা নয় যে, কোনো বাছ-বিচার ছাড়া চোখ বন্ধ করে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে দেওয়া হয়েছে। তাদের জীবনের জন্য, উচ্চশিক্ষায় গিয়ে ভালো করার জন্য বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অন্য দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে টিকে থাকার জন্য যতটুকু শিখন ও শিক্ষণ তাদের জন্য দরকার, ততটুকু তাদের সিলেবাসে রাখা হয়েছে। সাপ্লিমেন্টারি বা অতিরিক্ত অংশটুকু বাদ দিয়ে একটি সিলেবাস দেওয়া হয়েছে। সেটির আলোকে তাদের পাঠদান হয়েছে। এখন সেটির উপরেই পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষা সমাগত। এ সময়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আমার একটি কথাই আছে। সেটি হচ্ছে, তোমাদের জানা ও পড়ার বাইরে কোনো প্রশ্ন হবে না। যারা নিয়মিত লেখাপড়া করেছ, মূল পাঠ্যবই গুরুত্ব দিয়েছ, তাদের জন্য এ পরীক্ষা খুবই ভালো হবে। কাঙ্ক্ষিত সাফল্য তোমরা অর্জন করবে।

যুগান্তর : পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও মানবণ্টন কেমন হবে?

চেয়ারম্যান : প্রথম কথা হচ্ছে, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক পরিবেশে এ পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষা বলতে একটা ভীতিকর বিষয় অনেক সময়ে বুঝিয়ে থাকে। কিন্তু আমরা এটাকে পরীক্ষা না বলে মূল্যায়ন বলতে চাই। ক্লাসে শিক্ষক পাঠ দেওয়ার পরের দিন যেমন হোমওয়ার্ক নিয়ে থাকেন, তার নিজস্ব পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করেন, এটাও তেমনই একটি ইভেন্ট বলা যেতে পারে। এ পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। ইতোমধ্যে মানবণ্টন আর প্রশ্নের কাঠামো শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক বিষয়ে ১৫টি এমসিকিউ প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। সেজন্য ২০ মিনিট সময় দেওয়া হবে। সৃজনশীল অংশে যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক অংশ আছে তাতে ৩টি আর অন্য বিষয়ে ৪টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সব মিলে ৫০ শতাংশ নম্বরের মধ্যে পরীক্ষা হবে। তবে পরীক্ষার ফল তৈরি করা হবে শতভাগ নম্বরে। একজন শিক্ষার্থী যা পাবে সেটাকে শতকের হিসাবে রূপান্তর করা হবে।

যুগান্তর : কিভাবে একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ভালো করতে পারে?

চেয়ারম্যান : আগেই আমি বলেছি, যারা সারা বছর লেখাপড়া করেছে এবং মূল পাঠ্যবই গুরুত্ব দিয়েছে তারা সেরা সাফল্য অর্জন করবেই। এরপরও আমি কিছু গুরুত্ব দিতে বলব। সেটি হচ্ছে, এমসিকিউ অংশে শতভাগ নম্বর পাওয়ার চেষ্টা থাকতে হবে। কেননা সৃজনশীল বা তত্ত্বীয় অংশে সাধারণত নম্বর কমে যেতে পারে। এখনো সময় আছে, মূল পাঠ্যবই যদি ভালো করে কেউ পড়ে, তাহলে তার এমসিকিউয়ে কোনো সমস্যা হবে না। পাশাপাশি সময়ের দিকে তাকিয়ে সৃজনশীল অংশের উত্তর লিখতে হবে। সব প্রশ্নের উত্তর লিখে আসতে হবে। কোনো প্রশ্নের উত্তর বাদ দেওয়া যাবে না।

যুগান্তর : অভিভাবকদের উদ্দেশে কিছু বলবেন?

চেয়ারম্যান : সম্মানিত অভিভাবকদের কাছেই আমাদের প্রত্যাশা সবচেয়ে বেশি। একজন শিক্ষার্থী আপনার সন্তান, কিন্তু সে রাষ্ট্রের সম্পদ। তাকে সম্পদ হিসাবে গড়ে তুলতে রাষ্ট্র আপনার সহায়তা সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা করে। সন্তানকে পরীক্ষায় কেবল ভালো ফল করানোই সম্পদ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য যথেষ্ট নয়। তাকে ন্যায়নিষ্ঠ, সৎ, উদারনৈতিক সর্বোপরি ভালো মানুষ হিসাবে গড়ে তোলা জরুরি। প্রশ্নপত্র বিষয়ে কোনো ধরনের অনৈতিকতার পেছনে ছুটে নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না এবং সন্তানের ভবিষ্যত নষ্ট করবেন না। এ ব্যাপারে প্রত্যেকের সতর্ক থাকা জরুরি।

যুগান্তর : পরীক্ষার আগের রাতের প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত?

চেয়ারম্যান : পরীক্ষায় ভালো করার জন্য জরুরি শারীরিক সুস্থতা। পরীক্ষার আগের রাতে বেশি জেগে থাকলে বা পর্যাপ্ত না ঘুমালে পরীক্ষার হলে মনোযোগে বিঘ্ন ঘটতে পারে। এটিকে নজর রাখার দায়িত্ব অভিভাবকের। তাই তারা যেন পরীক্ষার আগে সন্তানকে বাড়তি চাপ না দেন। কেননা, সারা বছর যা লেখাপড়া করেছে, পরীক্ষার আগে তার বেশি আত্মস্থ করার সুযোগ নেই। যেহেতু পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে নিজ নিজ সিটে বসতে হবে, তাই বেশ আগেই সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে। এটি বিবেচনায় রাখতে হবে। তাই কেন্দ্রের দূরত্ব, যানজট, যানবাহনের প্রাপ্যতা ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে বাসা থেকে বের হতে হবে।

যুগান্তর : শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন কি?

চেয়ারম্যান : সম্মানিত শিক্ষকরা আমাদের প্রশাসনেরই অংশ। তা ছাড়া ছাত্রছাত্রীরা আপনার সন্তানের মতোই। তাই পরীক্ষার দিন আপনি যেমন আপনার সন্তানের সঙ্গে যেভাবে ইতিবাচক ও কোমল আচরণ করে থাকেন, পরীক্ষার হলেও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে একই আচরণ করবেন। আমরা কখনো কখনো অভিযোগ পেয়ে থাকি যে, অনেকে অযথা রূঢ় আচরণ করে থাকেন। এমন আচরণের অধিকার আপনার নেই। এ ধরনের আচরণ আমরা নিরুৎসাহিত করি। পরীক্ষার হলের ভেতরের পরিবেশের জন্য আপনাদেরকে দেওয়া নীতিমালাই আপনার জন্য বড় গাইডলাইন। সেটাই প্রতিপালন ও প্রয়োগই যথেষ্ট। এ ছাড়া কেন্দ্র প্রধানদেরকে বলব, পরীক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন কেউ কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে না। ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একটি ক্যামেরা ও ইন্টারনেট সংযোগবিহীন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। নিজে ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। পাশাপাশি অন্যের মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ করা আপনার দায়িত্ব। কারও বিরুদ্ধে এই নির্দেশনা পরিপন্থি আচরণ কাম্য নয়। নির্দেশনা অমান্যে কঠোর ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে।

সাক্ষাৎকারে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার

পরীক্ষা নয়, এটি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২২ * প্রস্তুতিমূলক * বিশেষ সংখ্যা

মুসতাক আহমদ

আগামী ৬ নভেম্বর শুরু হচ্ছে এইচএসসি, আলিম ও এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষা। এ উপলক্ষ্যে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক তপন কুমার সরকারের মুখোমুখি হয়েছে যুগান্তর। একান্ত আলাপচারিতায় পরীক্ষায় ভালো করার ব্যাপারে তিনি ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। পাশাপাশি পরীক্ষার আগের রাতে ও পরীক্ষাকালে বেশকিছু করণীয় সম্পর্কেও আলোকপাত করেছেন। যুগান্তরের পক্ষে সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার মুসতাক আহমদ।

যুগান্তর : আর মাত্র কয়েকদিন পরই ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা শুরু হবে। ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে আপনার কোনো পরামর্শ আছে কিনা?

চেয়ারম্যান : প্রথমেই আমি আমাদের শিক্ষার্থীদের শুভকামনা জানাতে চাই। তারা বৈশ্বিক মহামারি কোভিড পরিস্থিতির মতো একটি ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ কঠিন সময় পার করে এসে তারা আজকে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাস্তবতা বিবেচনা করে সরকার আগেই তাদের সিলেবাস ছোট করেছে-যেটাকে আমরা ‘কাস্টমাইজড’ সিলেবাস বলছি। ‘কাস্টামাইজড’ মানে কিন্তু এটা নয় যে, কোনো বাছ-বিচার ছাড়া চোখ বন্ধ করে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে দেওয়া হয়েছে। তাদের জীবনের জন্য, উচ্চশিক্ষায় গিয়ে ভালো করার জন্য বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অন্য দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে টিকে থাকার জন্য যতটুকু শিখন ও শিক্ষণ তাদের জন্য দরকার, ততটুকু তাদের সিলেবাসে রাখা হয়েছে। সাপ্লিমেন্টারি বা অতিরিক্ত অংশটুকু বাদ দিয়ে একটি সিলেবাস দেওয়া হয়েছে। সেটির আলোকে তাদের পাঠদান হয়েছে। এখন সেটির উপরেই পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষা সমাগত। এ সময়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আমার একটি কথাই আছে। সেটি হচ্ছে, তোমাদের জানা ও পড়ার বাইরে কোনো প্রশ্ন হবে না। যারা নিয়মিত লেখাপড়া করেছ, মূল পাঠ্যবই গুরুত্ব দিয়েছ, তাদের জন্য এ পরীক্ষা খুবই ভালো হবে। কাঙ্ক্ষিত সাফল্য তোমরা অর্জন করবে।

যুগান্তর : পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও মানবণ্টন কেমন হবে?

চেয়ারম্যান : প্রথম কথা হচ্ছে, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক পরিবেশে এ পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষা বলতে একটা ভীতিকর বিষয় অনেক সময়ে বুঝিয়ে থাকে। কিন্তু আমরা এটাকে পরীক্ষা না বলে মূল্যায়ন বলতে চাই। ক্লাসে শিক্ষক পাঠ দেওয়ার পরের দিন যেমন হোমওয়ার্ক নিয়ে থাকেন, তার নিজস্ব পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করেন, এটাও তেমনই একটি ইভেন্ট বলা যেতে পারে। এ পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। ইতোমধ্যে মানবণ্টন আর প্রশ্নের কাঠামো শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক বিষয়ে ১৫টি এমসিকিউ প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। সেজন্য ২০ মিনিট সময় দেওয়া হবে। সৃজনশীল অংশে যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক অংশ আছে তাতে ৩টি আর অন্য বিষয়ে ৪টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সব মিলে ৫০ শতাংশ নম্বরের মধ্যে পরীক্ষা হবে। তবে পরীক্ষার ফল তৈরি করা হবে শতভাগ নম্বরে। একজন শিক্ষার্থী যা পাবে সেটাকে শতকের হিসাবে রূপান্তর করা হবে।

যুগান্তর : কিভাবে একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ভালো করতে পারে?

চেয়ারম্যান : আগেই আমি বলেছি, যারা সারা বছর লেখাপড়া করেছে এবং মূল পাঠ্যবই গুরুত্ব দিয়েছে তারা সেরা সাফল্য অর্জন করবেই। এরপরও আমি কিছু গুরুত্ব দিতে বলব। সেটি হচ্ছে, এমসিকিউ অংশে শতভাগ নম্বর পাওয়ার চেষ্টা থাকতে হবে। কেননা সৃজনশীল বা তত্ত্বীয় অংশে সাধারণত নম্বর কমে যেতে পারে। এখনো সময় আছে, মূল পাঠ্যবই যদি ভালো করে কেউ পড়ে, তাহলে তার এমসিকিউয়ে কোনো সমস্যা হবে না। পাশাপাশি সময়ের দিকে তাকিয়ে সৃজনশীল অংশের উত্তর লিখতে হবে। সব প্রশ্নের উত্তর লিখে আসতে হবে। কোনো প্রশ্নের উত্তর বাদ দেওয়া যাবে না।

যুগান্তর : অভিভাবকদের উদ্দেশে কিছু বলবেন?

চেয়ারম্যান : সম্মানিত অভিভাবকদের কাছেই আমাদের প্রত্যাশা সবচেয়ে বেশি। একজন শিক্ষার্থী আপনার সন্তান, কিন্তু সে রাষ্ট্রের সম্পদ। তাকে সম্পদ হিসাবে গড়ে তুলতে রাষ্ট্র আপনার সহায়তা সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা করে। সন্তানকে পরীক্ষায় কেবল ভালো ফল করানোই সম্পদ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য যথেষ্ট নয়। তাকে ন্যায়নিষ্ঠ, সৎ, উদারনৈতিক সর্বোপরি ভালো মানুষ হিসাবে গড়ে তোলা জরুরি। প্রশ্নপত্র বিষয়ে কোনো ধরনের অনৈতিকতার পেছনে ছুটে নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না এবং সন্তানের ভবিষ্যত নষ্ট করবেন না। এ ব্যাপারে প্রত্যেকের সতর্ক থাকা জরুরি।

যুগান্তর : পরীক্ষার আগের রাতের প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত?

চেয়ারম্যান : পরীক্ষায় ভালো করার জন্য জরুরি শারীরিক সুস্থতা। পরীক্ষার আগের রাতে বেশি জেগে থাকলে বা পর্যাপ্ত না ঘুমালে পরীক্ষার হলে মনোযোগে বিঘ্ন ঘটতে পারে। এটিকে নজর রাখার দায়িত্ব অভিভাবকের। তাই তারা যেন পরীক্ষার আগে সন্তানকে বাড়তি চাপ না দেন। কেননা, সারা বছর যা লেখাপড়া করেছে, পরীক্ষার আগে তার বেশি আত্মস্থ করার সুযোগ নেই। যেহেতু পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে নিজ নিজ সিটে বসতে হবে, তাই বেশ আগেই সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে। এটি বিবেচনায় রাখতে হবে। তাই কেন্দ্রের দূরত্ব, যানজট, যানবাহনের প্রাপ্যতা ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে বাসা থেকে বের হতে হবে।

যুগান্তর : শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন কি?

চেয়ারম্যান : সম্মানিত শিক্ষকরা আমাদের প্রশাসনেরই অংশ। তা ছাড়া ছাত্রছাত্রীরা আপনার সন্তানের মতোই। তাই পরীক্ষার দিন আপনি যেমন আপনার সন্তানের সঙ্গে যেভাবে ইতিবাচক ও কোমল আচরণ করে থাকেন, পরীক্ষার হলেও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে একই আচরণ করবেন। আমরা কখনো কখনো অভিযোগ পেয়ে থাকি যে, অনেকে অযথা রূঢ় আচরণ করে থাকেন। এমন আচরণের অধিকার আপনার নেই। এ ধরনের আচরণ আমরা নিরুৎসাহিত করি। পরীক্ষার হলের ভেতরের পরিবেশের জন্য আপনাদেরকে দেওয়া নীতিমালাই আপনার জন্য বড় গাইডলাইন। সেটাই প্রতিপালন ও প্রয়োগই যথেষ্ট। এ ছাড়া কেন্দ্র প্রধানদেরকে বলব, পরীক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন কেউ কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে না। ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একটি ক্যামেরা ও ইন্টারনেট সংযোগবিহীন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। নিজে ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। পাশাপাশি অন্যের মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ করা আপনার দায়িত্ব। কারও বিরুদ্ধে এই নির্দেশনা পরিপন্থি আচরণ কাম্য নয়। নির্দেশনা অমান্যে কঠোর ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে।