জীবন হোক বইমুখী

সানজিদা ইয়াসমিন লিজা

‘পড়িলে বই, আলোকিত হই/না পড়িলে বই, অন্ধকারে রই’। জীবনের প্রত্যেকটি ধাপে আমাদের জীবনেও অনেক বন্ধু-বান্ধবের আগমন ঘটে। যাদের সঙ্গে শুরুটা আত্মার সম্পর্ক দিয়ে শুরু হলেও শেষটা খুব একটা ভালো হয় না। আবার ভালো হলেও হাতেগোনা দুই-একজন ছাড়া কাউকে বিপদে পাশে পাওয়া যায় না। কিন্তু বই আমাদের এমন একটি বন্ধু যাকে আমরা হাজারো অবহেলা করলেও জীবনের প্রত্যেকটি মুহূর্তে আমাদের সঙ্গে ছায়ায় মতো কাজ করে।

বই পড়ে আমরা মনোজগতের পূর্ণতা সাধনসহ জ্ঞানের আলোয় নিজেকে আলোকিত করতে পারি। তবে দুঃখজনকভাবে বর্তমানে আমরা এতটাই প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়েছি যে, বইয়ের সঙ্গে আমাদের  বন্ধুত্ব হওয়া দূরে থাক, গুটি কয়েক জন মানুষ ছাড়া কেউ বই পড়তে চায় না। আর বাচ্চাদের এই প্রযুক্তির রঙিন দুনিয়া থেকে বইমুখী করা অনেকটা চ্যালেঞ্জ গ্রহণের মতো। কারণ, একটা বই পড়ে শেষ করা মানে একটি জীবনের বিভিন্ন ছড়ানো ছিটানো গল্পকে একত্রিত করে তার পরিণতিটা আসলে কী হওয়া উচিত ছিল, বা কী হয়েছে সেটা উপলব্ধি করা। লেখকের লেখার যৌক্তিকতা বিচার করা, নিজের মেধা ও মননের কার্যকর ব্যবহার করে একটা বিষয় চিন্তা করে সিদ্ধান্তে  চলে আসতে পারাটা কিন্তু এত সহজ কথা  নয়।

বর্তমানে বই পাঠকের সংখ্যা লক্ষণীয়ভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে আমাদের স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান্য প্রযুক্তির অত্যাধিক পরিমাণে ব্যবহার। আমরা ছোট, বড়, অবুঝ, প্রাপ্তবয়স্ক সবাই কেমন যেন দিন দিন এসব আধুনিক প্রযুক্তির ওপর নির্ভর হয়ে পড়েছি। এটা আমাদেরকে উৎপাদনশীল কাজ যেমন, বই পড়া, ছবি আঁকা এসব করা থেকে ক্রমশ দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। যাদের একেবারেই বই পড়ার অভ্যাস নেই তাদের প্রথমেই একদম উন্নতমানের বা বড় বড় বই পড়ার দরকার নেই। যে যে বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী এবং পড়তে ভালো লাগে সেই বিষয় সম্পর্কিত বই পড়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তাহলে  ধীরে ধীরে যেমন ঐ নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে জানার পরিধি বাড়বে তেমনি বই পড়ারও অভ্যাস সৃষ্টি হবে।

সত্যিকার অর্থেই, আমাদের নিয়মিত বই পড়া উচিত। বইকে যদি আমরা আমাদের অবসরের সঙ্গী হিসেবে নিতে পারি তাহলে বইও আমাদের মনের খোরাক জুগিয়ে জ্ঞানার্জনে সাহায্য করবে। বিনোদনের মাধ্যম হোক বই। বই পড়ে আমরা যে জ্ঞান সঞ্চয় করব তা আমাদের পরবর্তী জীবনে কাজে আসবে। জীবনে যে কোনো পরিস্থিতিতে কীভাবে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়—এমন বিভিন্ন বিষয় আমরা বিভিন্ন বই পড়ার মাধ্যমে খুব সহজেই জানতে ও বুঝতে পারি। তাই আধুনিকতার ভিড়ে অত্যাধুনিক হয়ে পড়তে গিয়ে বই পড়া থেকে বিরত থাকলে চলবে না, বরং আরো বেশি পরিমাণে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

বই পরম বন্ধু। তাই জীবন হোক বইমুখী। সবার জীবনে বই নামক বন্ধুটির প্রবেশ ঘটুক। জ্ঞান, বুদ্ধি ও মেধার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটিয়ে সবাইকে সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হতে গড়ে তুলুক বই—প্রত্যাশা এটাই।

লেখক : শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

জীবন হোক বইমুখী

সানজিদা ইয়াসমিন লিজা

‘পড়িলে বই, আলোকিত হই/না পড়িলে বই, অন্ধকারে রই’। জীবনের প্রত্যেকটি ধাপে আমাদের জীবনেও অনেক বন্ধু-বান্ধবের আগমন ঘটে। যাদের সঙ্গে শুরুটা আত্মার সম্পর্ক দিয়ে শুরু হলেও শেষটা খুব একটা ভালো হয় না। আবার ভালো হলেও হাতেগোনা দুই-একজন ছাড়া কাউকে বিপদে পাশে পাওয়া যায় না। কিন্তু বই আমাদের এমন একটি বন্ধু যাকে আমরা হাজারো অবহেলা করলেও জীবনের প্রত্যেকটি মুহূর্তে আমাদের সঙ্গে ছায়ায় মতো কাজ করে।

বই পড়ে আমরা মনোজগতের পূর্ণতা সাধনসহ জ্ঞানের আলোয় নিজেকে আলোকিত করতে পারি। তবে দুঃখজনকভাবে বর্তমানে আমরা এতটাই প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়েছি যে, বইয়ের সঙ্গে আমাদের  বন্ধুত্ব হওয়া দূরে থাক, গুটি কয়েক জন মানুষ ছাড়া কেউ বই পড়তে চায় না। আর বাচ্চাদের এই প্রযুক্তির রঙিন দুনিয়া থেকে বইমুখী করা অনেকটা চ্যালেঞ্জ গ্রহণের মতো। কারণ, একটা বই পড়ে শেষ করা মানে একটি জীবনের বিভিন্ন ছড়ানো ছিটানো গল্পকে একত্রিত করে তার পরিণতিটা আসলে কী হওয়া উচিত ছিল, বা কী হয়েছে সেটা উপলব্ধি করা। লেখকের লেখার যৌক্তিকতা বিচার করা, নিজের মেধা ও মননের কার্যকর ব্যবহার করে একটা বিষয় চিন্তা করে সিদ্ধান্তে  চলে আসতে পারাটা কিন্তু এত সহজ কথা  নয়।

বর্তমানে বই পাঠকের সংখ্যা লক্ষণীয়ভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে আমাদের স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান্য প্রযুক্তির অত্যাধিক পরিমাণে ব্যবহার। আমরা ছোট, বড়, অবুঝ, প্রাপ্তবয়স্ক সবাই কেমন যেন দিন দিন এসব আধুনিক প্রযুক্তির ওপর নির্ভর হয়ে পড়েছি। এটা আমাদেরকে উৎপাদনশীল কাজ যেমন, বই পড়া, ছবি আঁকা এসব করা থেকে ক্রমশ দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। যাদের একেবারেই বই পড়ার অভ্যাস নেই তাদের প্রথমেই একদম উন্নতমানের বা বড় বড় বই পড়ার দরকার নেই। যে যে বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী এবং পড়তে ভালো লাগে সেই বিষয় সম্পর্কিত বই পড়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তাহলে  ধীরে ধীরে যেমন ঐ নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে জানার পরিধি বাড়বে তেমনি বই পড়ারও অভ্যাস সৃষ্টি হবে।

সত্যিকার অর্থেই, আমাদের নিয়মিত বই পড়া উচিত। বইকে যদি আমরা আমাদের অবসরের সঙ্গী হিসেবে নিতে পারি তাহলে বইও আমাদের মনের খোরাক জুগিয়ে জ্ঞানার্জনে সাহায্য করবে। বিনোদনের মাধ্যম হোক বই। বই পড়ে আমরা যে জ্ঞান সঞ্চয় করব তা আমাদের পরবর্তী জীবনে কাজে আসবে। জীবনে যে কোনো পরিস্থিতিতে কীভাবে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়—এমন বিভিন্ন বিষয় আমরা বিভিন্ন বই পড়ার মাধ্যমে খুব সহজেই জানতে ও বুঝতে পারি। তাই আধুনিকতার ভিড়ে অত্যাধুনিক হয়ে পড়তে গিয়ে বই পড়া থেকে বিরত থাকলে চলবে না, বরং আরো বেশি পরিমাণে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

বই পরম বন্ধু। তাই জীবন হোক বইমুখী। সবার জীবনে বই নামক বন্ধুটির প্রবেশ ঘটুক। জ্ঞান, বুদ্ধি ও মেধার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটিয়ে সবাইকে সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হতে গড়ে তুলুক বই—প্রত্যাশা এটাই।

লেখক : শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়