মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং সুশিক্ষা সংকট

 

সৈয়দ রিফাত, সংবাদকর্মী ও কলাম লেখক

একজন মানব শিশু জন্মগ্রহণ করার পর থেকেই মূলত শুরু হয় মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠার সংগ্রাম। সঠিক সামাজিকীকরণের মাধ্যমে আদর্শ গুণাবলি বিকশিত হয়ে একজন মানুষ, সমাজ বা রাষ্ট্রের প্রকৃত উত্তরসূরি হয়ে ওঠে। তাই সমাজ বা রাষ্ট্রের অগ্রগতির জন্য আদর্শ মানুষের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে খুবই দুঃখজনক একটি বাস্তবতা পরিলক্ষিত হয়। নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ যেন আজ সোনার পাথর বাটিতে পরিণত হয়েছে।

 শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য আজ রুটিরুজির নিশ্চয়তা। শিক্ষা আর অর্থ হয়ে উঠেছে একে অপরের পরিপূরক। ‘টাকার বিনিময়ে শিক্ষা, শিক্ষার বিনিময়ে টাকা’ হয়েছে আজ শিক্ষার মূলমন্ত্র। তাই সততাই সর্বোত্তম পন্থা, পরের অপকার করিও না বাক্যগুলো শুধু একশোতে নব্বই পাওয়ার জন্যই আমাদের গলাধকরণ করানো হচ্ছে, একজন সুনাগরিক হিসেবে সেগুলো বাকি জীবন লালন করার জন্য নয়। 

সম্প্রতি সংবাদপত্র মারফত জানা যায়, একটি বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে মদের আসর বানিয়েছেন, ইচ্ছা মতো অর্থের অপব্যবহার করেছেন এবং ছাত্রীদের আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে তিনি তাদের ব্লাকমেইল করেছেন। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এহেন বিকৃত মানসিকতার কর্মকাণ্ড সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়েরই বার্তা দেয়।

এধরনের ঘটনা এই প্রথম নয়। সমাজের প্রতিটি সেক্টরেই এমন বিবেক বর্জিত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ভাইরাল কনটেন্ট কিংবা সেলিব্রিটি পোস্টের কমেন্ট বক্সগুলোতে যে ধরনের অশালীন, ব্যঙ্গাত্মক, ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক মন্তব্য পাওয়া যায় তাতে মনে হয় বাংলা ভাষার বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার গতি বরং মন্থর হোক, কেননা এই ভাষা জানা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বিশ্বে যত বাড়বে ভরা মজলিশে আমাদের নৈতিক চরিত্রের হাড়ি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা ততটাই প্রকট হবে।

নিজেদের কাজের চেয়ে পরের কাজের দোষ চর্চা করাটা এখন আমাদের কাছে খুব বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে। সেই কাজেই দিবারাত্রি আমরা মনোনিবেশ করে আছি। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গতেই যেন এখন আমাদের সব আনন্দ।

অগ্রসরমাণ কাউকে পেছনে টেনে ধরার কৌশল অনুসন্ধানে যে সময় ব্যয় হচ্ছে সেই সময়ের পরিশ্রম যে আমাকে তার থেকেও বেশি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতো এই স্বাভাবিক সত্যটুকুর জায়গা আমাদের মস্তিষ্কে হয়নি।কিছুদিন আগে একজন আমলা শখের কবি হিসেবে তার ২৯টি কবিতার বই বের করেছিলেন এবং অনৈতিকভাবে সরকারি তালিকায় সেই বইগুলো ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এখানে নীতিবিরুদ্ধ কাজ যেটি তিনি করেছেন সেটি হলো বইগুলোকে অবৈধ উপায়ে সরকারি তালিকায় ঢোকানোর চেষ্টা করা, কোনোভাবেই কবিতা লেখা নয়। অথচ আমরা পড়লাম তার কবিতা নিয়ে।

একজন আমলা কেন শ্যালিকাবিষয়ক কবিতা লিখেছেন সেই প্রশ্ন বাণে অনবরত জর্জরিত হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ভাবখানা এমন যেন, এই বঙ্গদেশে আমলার রসবোধ থাকাটা গুরুতর অপরাধ। অপরকে হেনস্তা করার যে প্রবণতা ইদানীং লক্ষণীয়, তাতে ভয় হয় এদেশে নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দরা আর জন্মাবে কি না!

লাইব্রেরির সংখ্যা কমেছে, বই পড়ার সংস্কৃতি কমেছে, মুক্তবুদ্ধির চর্চায় তরুণ সমাজের আগ্রহ নেই, স্মার্টফোন আসক্তি, মাদক, হতাশা, ঘুস, দুর্নীতি, অনিয়ম সমাজের প্রতিটি পরতে বাসা বেঁধেছে এবং করে চলেছে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়। সত্যের শক্তি আমরা ভুলে গেছি, আমরা ভুলে গেছি বিনয়ের শক্তি। যার কারণে ঠুনকো বিষয়েই পেশিশক্তির প্রদর্শনে আমরা উদগ্রীব।

মূল্যবোধ নিজে নিজে জাগ্রত হতে পারে না এজন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রীয়, সামাজিক এবং পরিবারিক পরিসরে অনুকূল পরিবেশ। সুশিক্ষাই সেই পরিবেশ সৃষ্টির পথকে মসৃণ করে। সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, লোভ ও অশ্লীলতার আগ্রাসনে নৈতিক মূল্যবোধ ক্ষয় হয়েই মনুষ্যত্বে পচন ধরেছে। আর এই রোগের একমাত্র মহৌষধ হলো সুশিক্ষা। শিক্ষার কাজ জ্ঞান দান করা আর সুশিক্ষা দেয় মূল্যবোধের পাঠ। কিন্তু শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ সেই পথকেও ক্রমে সংকুচিত করছে।শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য আজ রুটি রুজির নিশ্চয়তা। শিক্ষা আর অর্থ হয়ে উঠেছে একে অপরের পরিপূরক। ‘টাকার বিনিময়ে শিক্ষা, শিক্ষার বিনিময়ে টাকা’ হয়েছে আজ শিক্ষার মূলমন্ত্র। আর তাই সততাই সর্বোত্তম পন্থা, পরের অপকার করিও না বাক্যগুলো শুধু একশোতে নব্বই পাওয়ার জন্যই আমাদের গলাধকরণ করানো হচ্ছে, একজন সুনাগরিক হিসেবে সেগুলো বাকি জীবন লালন করার জন্য নয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাজ শুধু ব্যক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করা নয় বরং তার মাঝে এমন কিছু মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটানো যার মাধ্যমে ব্যক্তি আদর্শ মানুষে পরিণত হতে পারে। অথচ বর্তমান সময়ে শুধু খাতার নম্বর নিশ্চিত করছে প্রাতিষ্ঠানিক সনদ আর সনদের সাথেই ফ্রিতে মিলছে প্রশংসাপত্র।

যেখানে কোনোরকম বাছবিচার ছাড়াই ব্যক্তি সব চরিত্রগুণে গুণান্বিত বিবেচিত হন। আর তাই শুধু পুঁথিগত বিদ্যার জোরে সমাজ বা রাষ্ট্রের উঁচুতলায় অধিষ্ঠিত হওয়া ব্যক্তিরা প্রায়শই নিজেদের নৈতিকভাবে সংযত রাখতে পারছেন না। ফলে সংবাদপত্রের পাতা ওল্টালেই ঘুস, দুর্নীতি, অনিয়ম আর নারী কেলেঙ্কারির মতো খবরগুলো আমাদের চোখে পড়ে।

বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিঃসন্দেহে অত্যন্ত চমৎকার একটি পর্যায়ে রয়েছে। আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত রাষ্ট্র হিসেবে অচিরেই আমরা বিশ্বে নাম করবো, কিন্তু মূল্যবোধের জায়গার পরিবর্তন না আনতে পারলে সব অর্জনই ম্লান হয়ে যাবে।

তাই সবকিছুর আগে শিক্ষার পরিবেশের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। শিক্ষার সংকট কাটিয়ে সুশিক্ষার সমন্বয়ই একমাত্র এই অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজকে আলোর মুখ দেখাতে পারে। রেসের মাঠে ঘোড়া যতই সুঠামদেহী আর আর্কষণীয়ই হোক না কেন, সওয়ার যদি দক্ষ না হয় সেই ঘোড়া সঠিক ট্রাকে কখনই দৌড়াতে পারবে না।

লেখক: সংবাদকর্মী।

এইচআর/ফারুক/এমএস

 

মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং সুশিক্ষা সংকট

 

সৈয়দ রিফাত, সংবাদকর্মী ও কলাম লেখক

একজন মানব শিশু জন্মগ্রহণ করার পর থেকেই মূলত শুরু হয় মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠার সংগ্রাম। সঠিক সামাজিকীকরণের মাধ্যমে আদর্শ গুণাবলি বিকশিত হয়ে একজন মানুষ, সমাজ বা রাষ্ট্রের প্রকৃত উত্তরসূরি হয়ে ওঠে। তাই সমাজ বা রাষ্ট্রের অগ্রগতির জন্য আদর্শ মানুষের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে খুবই দুঃখজনক একটি বাস্তবতা পরিলক্ষিত হয়। নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ যেন আজ সোনার পাথর বাটিতে পরিণত হয়েছে।

 শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য আজ রুটিরুজির নিশ্চয়তা। শিক্ষা আর অর্থ হয়ে উঠেছে একে অপরের পরিপূরক। ‘টাকার বিনিময়ে শিক্ষা, শিক্ষার বিনিময়ে টাকা’ হয়েছে আজ শিক্ষার মূলমন্ত্র। তাই সততাই সর্বোত্তম পন্থা, পরের অপকার করিও না বাক্যগুলো শুধু একশোতে নব্বই পাওয়ার জন্যই আমাদের গলাধকরণ করানো হচ্ছে, একজন সুনাগরিক হিসেবে সেগুলো বাকি জীবন লালন করার জন্য নয়। 

সম্প্রতি সংবাদপত্র মারফত জানা যায়, একটি বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে মদের আসর বানিয়েছেন, ইচ্ছা মতো অর্থের অপব্যবহার করেছেন এবং ছাত্রীদের আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে তিনি তাদের ব্লাকমেইল করেছেন। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এহেন বিকৃত মানসিকতার কর্মকাণ্ড সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়েরই বার্তা দেয়।

এধরনের ঘটনা এই প্রথম নয়। সমাজের প্রতিটি সেক্টরেই এমন বিবেক বর্জিত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ভাইরাল কনটেন্ট কিংবা সেলিব্রিটি পোস্টের কমেন্ট বক্সগুলোতে যে ধরনের অশালীন, ব্যঙ্গাত্মক, ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক মন্তব্য পাওয়া যায় তাতে মনে হয় বাংলা ভাষার বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার গতি বরং মন্থর হোক, কেননা এই ভাষা জানা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বিশ্বে যত বাড়বে ভরা মজলিশে আমাদের নৈতিক চরিত্রের হাড়ি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা ততটাই প্রকট হবে।

নিজেদের কাজের চেয়ে পরের কাজের দোষ চর্চা করাটা এখন আমাদের কাছে খুব বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে। সেই কাজেই দিবারাত্রি আমরা মনোনিবেশ করে আছি। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গতেই যেন এখন আমাদের সব আনন্দ।

অগ্রসরমাণ কাউকে পেছনে টেনে ধরার কৌশল অনুসন্ধানে যে সময় ব্যয় হচ্ছে সেই সময়ের পরিশ্রম যে আমাকে তার থেকেও বেশি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতো এই স্বাভাবিক সত্যটুকুর জায়গা আমাদের মস্তিষ্কে হয়নি।কিছুদিন আগে একজন আমলা শখের কবি হিসেবে তার ২৯টি কবিতার বই বের করেছিলেন এবং অনৈতিকভাবে সরকারি তালিকায় সেই বইগুলো ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এখানে নীতিবিরুদ্ধ কাজ যেটি তিনি করেছেন সেটি হলো বইগুলোকে অবৈধ উপায়ে সরকারি তালিকায় ঢোকানোর চেষ্টা করা, কোনোভাবেই কবিতা লেখা নয়। অথচ আমরা পড়লাম তার কবিতা নিয়ে।

একজন আমলা কেন শ্যালিকাবিষয়ক কবিতা লিখেছেন সেই প্রশ্ন বাণে অনবরত জর্জরিত হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ভাবখানা এমন যেন, এই বঙ্গদেশে আমলার রসবোধ থাকাটা গুরুতর অপরাধ। অপরকে হেনস্তা করার যে প্রবণতা ইদানীং লক্ষণীয়, তাতে ভয় হয় এদেশে নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দরা আর জন্মাবে কি না!

লাইব্রেরির সংখ্যা কমেছে, বই পড়ার সংস্কৃতি কমেছে, মুক্তবুদ্ধির চর্চায় তরুণ সমাজের আগ্রহ নেই, স্মার্টফোন আসক্তি, মাদক, হতাশা, ঘুস, দুর্নীতি, অনিয়ম সমাজের প্রতিটি পরতে বাসা বেঁধেছে এবং করে চলেছে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়। সত্যের শক্তি আমরা ভুলে গেছি, আমরা ভুলে গেছি বিনয়ের শক্তি। যার কারণে ঠুনকো বিষয়েই পেশিশক্তির প্রদর্শনে আমরা উদগ্রীব।

মূল্যবোধ নিজে নিজে জাগ্রত হতে পারে না এজন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রীয়, সামাজিক এবং পরিবারিক পরিসরে অনুকূল পরিবেশ। সুশিক্ষাই সেই পরিবেশ সৃষ্টির পথকে মসৃণ করে। সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, লোভ ও অশ্লীলতার আগ্রাসনে নৈতিক মূল্যবোধ ক্ষয় হয়েই মনুষ্যত্বে পচন ধরেছে। আর এই রোগের একমাত্র মহৌষধ হলো সুশিক্ষা। শিক্ষার কাজ জ্ঞান দান করা আর সুশিক্ষা দেয় মূল্যবোধের পাঠ। কিন্তু শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ সেই পথকেও ক্রমে সংকুচিত করছে।শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য আজ রুটি রুজির নিশ্চয়তা। শিক্ষা আর অর্থ হয়ে উঠেছে একে অপরের পরিপূরক। ‘টাকার বিনিময়ে শিক্ষা, শিক্ষার বিনিময়ে টাকা’ হয়েছে আজ শিক্ষার মূলমন্ত্র। আর তাই সততাই সর্বোত্তম পন্থা, পরের অপকার করিও না বাক্যগুলো শুধু একশোতে নব্বই পাওয়ার জন্যই আমাদের গলাধকরণ করানো হচ্ছে, একজন সুনাগরিক হিসেবে সেগুলো বাকি জীবন লালন করার জন্য নয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাজ শুধু ব্যক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করা নয় বরং তার মাঝে এমন কিছু মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটানো যার মাধ্যমে ব্যক্তি আদর্শ মানুষে পরিণত হতে পারে। অথচ বর্তমান সময়ে শুধু খাতার নম্বর নিশ্চিত করছে প্রাতিষ্ঠানিক সনদ আর সনদের সাথেই ফ্রিতে মিলছে প্রশংসাপত্র।

যেখানে কোনোরকম বাছবিচার ছাড়াই ব্যক্তি সব চরিত্রগুণে গুণান্বিত বিবেচিত হন। আর তাই শুধু পুঁথিগত বিদ্যার জোরে সমাজ বা রাষ্ট্রের উঁচুতলায় অধিষ্ঠিত হওয়া ব্যক্তিরা প্রায়শই নিজেদের নৈতিকভাবে সংযত রাখতে পারছেন না। ফলে সংবাদপত্রের পাতা ওল্টালেই ঘুস, দুর্নীতি, অনিয়ম আর নারী কেলেঙ্কারির মতো খবরগুলো আমাদের চোখে পড়ে।

বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিঃসন্দেহে অত্যন্ত চমৎকার একটি পর্যায়ে রয়েছে। আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত রাষ্ট্র হিসেবে অচিরেই আমরা বিশ্বে নাম করবো, কিন্তু মূল্যবোধের জায়গার পরিবর্তন না আনতে পারলে সব অর্জনই ম্লান হয়ে যাবে।

তাই সবকিছুর আগে শিক্ষার পরিবেশের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। শিক্ষার সংকট কাটিয়ে সুশিক্ষার সমন্বয়ই একমাত্র এই অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজকে আলোর মুখ দেখাতে পারে। রেসের মাঠে ঘোড়া যতই সুঠামদেহী আর আর্কষণীয়ই হোক না কেন, সওয়ার যদি দক্ষ না হয় সেই ঘোড়া সঠিক ট্রাকে কখনই দৌড়াতে পারবে না।

লেখক: সংবাদকর্মী।

এইচআর/ফারুক/এমএস

 

ট্যাগ