শিক্ষকদের মূল্যায়নে শিক্ষার্থীর ভূমিকা

ড. মো. শফিকুল ইসলাম

 

শিক্ষক, শিক্ষা এবং শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষকদের মূল্যায়ন ক্রমবর্ধমানভাবে যা পেশার উন্নয়ন এবং বৃদ্ধির জন্য একটি মূল্যবান হাতিয়ার হিসেবে স্বীকৃত হচ্ছে। যা শুধু সার্টিফিকেশন এবং যোগ্যতার একটি মাধ্যম হিসেবে নয়, বরং শেখার একটি হাতিয়ার হিসেবেও গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষক মূল্যায়ন চালু করতে যাচ্ছে, যা তাদের একাডেমিক পরিষদের সভায় পাস হয়েছে।যেখানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের বিভিন্ন বিষয়ে মূল্যায়ন করতে পারবে। যেমন—শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাস নেন কি না, যথারীতি কোর্স শেষ করেন কি না, সম্পূর্ণ জ্ঞানভিত্তিক লেকচার দেন কি না, শিক্ষক কেমন পড়ান, তাঁর কোর্সের বিষয়বস্তু কেমন ইত্যাদি। যদিও আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় আইবিএতে আমার শিক্ষকদের মূল্যায়ন করতে পেরেছি প্রতি সেমিস্টারে। পরবর্তী সময়ে মূল্যায়নের সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছে পাঠানো হতো, যা তাঁর শিক্ষাদানের পদ্ধতিতে উন্নতি করতে পারতেন। কিন্তু আমাদের দেশে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রক্রিয়াটি চালু করা যায়নি।

সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের দিয়ে শিক্ষক মূল্যায়ন করা গেলে সেটি হবে সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বর্তমানে এই বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। এটা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চালু করা জরুরি। অনেক আগে থেকেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু রয়েছে। শুধু চালু থাকলেই চলবে না, এর সঠিক প্রয়োগও থাকতে হবে, যেখানে শিক্ষকরা আবার হয়রানির শিকার না হন। কারণ অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষকরা শিক্ষার্থী কর্তৃক অপরাজনীতি ঝামেলায় পড়তে পারেন। আবার অভিযোগ আছে, যে শিক্ষক বেশি মার্ক দেন এবং কম পড়ান তাঁর মূল্যায়নে বেশি ইতিবাচক প্রতিবেদন আসে। কাজেই প্রশাসনকে সঠিক এবং স্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে, যাতে শিক্ষকরা শিক্ষার্থী কর্তৃক মূল্যায়নের ব্যবস্থা হয়। তবে এটাও নীতিমালায় উল্লেখ থাকতে হবে যে কোনো শিক্ষার্থী ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো শিক্ষককে যেন হয়রানি করতে না পারে। যেমন—এ রকম অন্যায় করলে শিক্ষার্থীকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।এই মূল্যায়ন পদ্ধতি যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ অনেক দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চালু রয়েছে। ওই সব দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সফলতাও পেয়েছে। এটা আমাদের দেশে চালু করতে পারলে দেশের শিক্ষার সার্বিক উন্নয়ন হবে, যা মূলত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে। আমরা শিক্ষার উন্নয়নে অন্যান্য দেশের মতো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছি কি? শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়, কিন্তু বাস্তবে শতভাগ কার্যকর হয় না। শিক্ষার উন্নয়ন ছাড়া কোনো উন্নয়ন টেকসই হবে না। তাই শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। মানসম্মত গবেষণার জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।

আমি কোনো এক ক্লাসে শিক্ষক মূল্যায়নের বিষয়ে কথা বলেছিলাম। দেখলাম শিক্ষার্থীরা খুবই উৎসাহী। বুঝতে পারলাম যে তারা কোনো এক শিক্ষকের ওপর বিরক্ত, আবার অনেক শিক্ষকের ক্লাসে খুবই আগ্রহী। আমি কারো নাম জিজ্ঞেস করিনি।

শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষক মূল্যায়ন যথার্থ এবং প্রাসঙ্গিক। এতে শিক্ষার মান বাড়বে বলে বিশ্বাস করি। অর্থাৎ শিক্ষকরা তাঁদের নিজেদের দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতা জানতে পারবেন। সেই অনুযায়ী তাঁরা তাঁদের শিখনপদ্ধতি সম্পর্কে উন্নতি করতে পারবেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আত্মসমালোচনা ও মুক্তচিন্তার চর্চা বাড়বে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্পণ হিসেবে কাজ করবে।

শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপ্রীতি এবং লবিং বন্ধ না হলে আমরা যত মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করি না কেন, তা কাজে আসবে না। এসব বন্ধ করতে পারলে মূল্যায়ন পদ্ধতি কাজে আসবে দ্রুতগতিতে। ভালো শিক্ষার্থীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করতে হবে। শিক্ষক নিয়োগে সব ধরনের অন্যায়ের জন্য আমাদের সবাইকে উচ্চকিত হতে হবে।

শিক্ষাপদ্ধতিতে অনেক বিষয়, যেমন—টিচিং, লার্নিং, মূল্যায়ন, চাকরি এবং শিক্ষানীতি—এসবের সম্পর্ক অনেক গভীর। একটি অন্যটি ছাড়া সফল না। কিন্তু আমাদের দেশে সব হয়। তবে মূল্যায়নে শুধু শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করি, শিক্ষকদের মূল্যায়ন করা হয় না। শিক্ষকদের মূল্যায়ন করা হলে তাঁর টিচিং পদ্ধতি বর্তমান সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না সেটা বুঝতে পারা যাবে। কারণ শিক্ষাপদ্ধতি চিরাচরিত মডেল দিয়ে চলবে না। কারণ গ্লোবাল মার্কেটে টিকে থাকতে হলে নতুন নতুন আধুনিক পদ্ধতি দিয়ে শিক্ষণ দিতে হবে শিক্ষার্থীদের, যাতে শিখন ভালো হবে। শিক্ষণ ও শিখনের সেতুবন্ধ হয় সঠিক মূল্যায়নের মাধ্যমে। এই সঠিক মূল্যায়ন তখনই যথার্থ হবে যখন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ই মূল্যায়নের আওতায় আসে। এই মূল্যায়নের মাধ্যমে অর্জিত হবে জাতির কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন। কারণ মূল্যায়ন সঠিক হলে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা কমে আসবে।

শিক্ষাদানে গঠনমূলক মূল্যায়ন কর্মক্ষমতা প্রমাণ সংকলন, সংগৃহীত তথ্যের মূল্যায়ন এবং পরবর্তীকালে এমনভাবে প্রতিক্রিয়া প্রদানের একটি প্রক্রিয়া হিসেবে বর্ণনা করা হয়, যাতে শিক্ষার অনুশীলনগুলো উন্নত করা যায়। শিক্ষকের মূল্যায়ন শিক্ষার্থীদের সফলতার বর্তমান স্তর নির্ধারণ করতে এবং সেই অনুযায়ী ছাত্রের জন্য উপযুক্ত শিক্ষণ কৌশল এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়। শিক্ষকদের প্রায়ই তাঁদের ছাত্রদের মূল্যায়ন করার বিষয়ে মিশ্র অনুভূতি থাকে। সর্বোপরি এটি অনিবার্য যে কিছু শিক্ষার্থী আরো ব্যক্তিগত স্তরে মূল্যায়ন ব্যবহার করতে পারে। যাই হোক, বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর প্রতিক্রিয়া প্রকৃতপক্ষে সহায়ক হতে পারে, শিক্ষকদের আত্মসচেতনতা এবং অন্তর্দৃষ্টির সুযোগ দেয়, যা তাঁদের চাকরিতে আরো ভালো হতে সাহায্য করতে পারে। ফিডব্যাক শিক্ষকদের শিক্ষাপ্রক্রিয়াকে আরো আনন্দদায়ক এবং কার্যকর করার জন্য সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দেয়। যে শিক্ষকরা তাঁদের ছাত্রদের প্রতি আরো প্রতিক্রিয়াশীল তাঁরা একটি মানসম্পন্ন শিক্ষাগত অভিজ্ঞতা প্রদানের একটি ভালো সুযোগ তৈরি করেন।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ

শিক্ষকদের মূল্যায়নে শিক্ষার্থীর ভূমিকা

ড. মো. শফিকুল ইসলাম

 

শিক্ষক, শিক্ষা এবং শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষকদের মূল্যায়ন ক্রমবর্ধমানভাবে যা পেশার উন্নয়ন এবং বৃদ্ধির জন্য একটি মূল্যবান হাতিয়ার হিসেবে স্বীকৃত হচ্ছে। যা শুধু সার্টিফিকেশন এবং যোগ্যতার একটি মাধ্যম হিসেবে নয়, বরং শেখার একটি হাতিয়ার হিসেবেও গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষক মূল্যায়ন চালু করতে যাচ্ছে, যা তাদের একাডেমিক পরিষদের সভায় পাস হয়েছে।যেখানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের বিভিন্ন বিষয়ে মূল্যায়ন করতে পারবে। যেমন—শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাস নেন কি না, যথারীতি কোর্স শেষ করেন কি না, সম্পূর্ণ জ্ঞানভিত্তিক লেকচার দেন কি না, শিক্ষক কেমন পড়ান, তাঁর কোর্সের বিষয়বস্তু কেমন ইত্যাদি। যদিও আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় আইবিএতে আমার শিক্ষকদের মূল্যায়ন করতে পেরেছি প্রতি সেমিস্টারে। পরবর্তী সময়ে মূল্যায়নের সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছে পাঠানো হতো, যা তাঁর শিক্ষাদানের পদ্ধতিতে উন্নতি করতে পারতেন। কিন্তু আমাদের দেশে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রক্রিয়াটি চালু করা যায়নি।

সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের দিয়ে শিক্ষক মূল্যায়ন করা গেলে সেটি হবে সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বর্তমানে এই বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। এটা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চালু করা জরুরি। অনেক আগে থেকেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু রয়েছে। শুধু চালু থাকলেই চলবে না, এর সঠিক প্রয়োগও থাকতে হবে, যেখানে শিক্ষকরা আবার হয়রানির শিকার না হন। কারণ অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষকরা শিক্ষার্থী কর্তৃক অপরাজনীতি ঝামেলায় পড়তে পারেন। আবার অভিযোগ আছে, যে শিক্ষক বেশি মার্ক দেন এবং কম পড়ান তাঁর মূল্যায়নে বেশি ইতিবাচক প্রতিবেদন আসে। কাজেই প্রশাসনকে সঠিক এবং স্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে, যাতে শিক্ষকরা শিক্ষার্থী কর্তৃক মূল্যায়নের ব্যবস্থা হয়। তবে এটাও নীতিমালায় উল্লেখ থাকতে হবে যে কোনো শিক্ষার্থী ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো শিক্ষককে যেন হয়রানি করতে না পারে। যেমন—এ রকম অন্যায় করলে শিক্ষার্থীকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।এই মূল্যায়ন পদ্ধতি যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ অনেক দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চালু রয়েছে। ওই সব দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সফলতাও পেয়েছে। এটা আমাদের দেশে চালু করতে পারলে দেশের শিক্ষার সার্বিক উন্নয়ন হবে, যা মূলত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে। আমরা শিক্ষার উন্নয়নে অন্যান্য দেশের মতো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছি কি? শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়, কিন্তু বাস্তবে শতভাগ কার্যকর হয় না। শিক্ষার উন্নয়ন ছাড়া কোনো উন্নয়ন টেকসই হবে না। তাই শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। মানসম্মত গবেষণার জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।

আমি কোনো এক ক্লাসে শিক্ষক মূল্যায়নের বিষয়ে কথা বলেছিলাম। দেখলাম শিক্ষার্থীরা খুবই উৎসাহী। বুঝতে পারলাম যে তারা কোনো এক শিক্ষকের ওপর বিরক্ত, আবার অনেক শিক্ষকের ক্লাসে খুবই আগ্রহী। আমি কারো নাম জিজ্ঞেস করিনি।

শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষক মূল্যায়ন যথার্থ এবং প্রাসঙ্গিক। এতে শিক্ষার মান বাড়বে বলে বিশ্বাস করি। অর্থাৎ শিক্ষকরা তাঁদের নিজেদের দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতা জানতে পারবেন। সেই অনুযায়ী তাঁরা তাঁদের শিখনপদ্ধতি সম্পর্কে উন্নতি করতে পারবেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আত্মসমালোচনা ও মুক্তচিন্তার চর্চা বাড়বে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্পণ হিসেবে কাজ করবে।

শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপ্রীতি এবং লবিং বন্ধ না হলে আমরা যত মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করি না কেন, তা কাজে আসবে না। এসব বন্ধ করতে পারলে মূল্যায়ন পদ্ধতি কাজে আসবে দ্রুতগতিতে। ভালো শিক্ষার্থীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করতে হবে। শিক্ষক নিয়োগে সব ধরনের অন্যায়ের জন্য আমাদের সবাইকে উচ্চকিত হতে হবে।

শিক্ষাপদ্ধতিতে অনেক বিষয়, যেমন—টিচিং, লার্নিং, মূল্যায়ন, চাকরি এবং শিক্ষানীতি—এসবের সম্পর্ক অনেক গভীর। একটি অন্যটি ছাড়া সফল না। কিন্তু আমাদের দেশে সব হয়। তবে মূল্যায়নে শুধু শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করি, শিক্ষকদের মূল্যায়ন করা হয় না। শিক্ষকদের মূল্যায়ন করা হলে তাঁর টিচিং পদ্ধতি বর্তমান সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না সেটা বুঝতে পারা যাবে। কারণ শিক্ষাপদ্ধতি চিরাচরিত মডেল দিয়ে চলবে না। কারণ গ্লোবাল মার্কেটে টিকে থাকতে হলে নতুন নতুন আধুনিক পদ্ধতি দিয়ে শিক্ষণ দিতে হবে শিক্ষার্থীদের, যাতে শিখন ভালো হবে। শিক্ষণ ও শিখনের সেতুবন্ধ হয় সঠিক মূল্যায়নের মাধ্যমে। এই সঠিক মূল্যায়ন তখনই যথার্থ হবে যখন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ই মূল্যায়নের আওতায় আসে। এই মূল্যায়নের মাধ্যমে অর্জিত হবে জাতির কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন। কারণ মূল্যায়ন সঠিক হলে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা কমে আসবে।

শিক্ষাদানে গঠনমূলক মূল্যায়ন কর্মক্ষমতা প্রমাণ সংকলন, সংগৃহীত তথ্যের মূল্যায়ন এবং পরবর্তীকালে এমনভাবে প্রতিক্রিয়া প্রদানের একটি প্রক্রিয়া হিসেবে বর্ণনা করা হয়, যাতে শিক্ষার অনুশীলনগুলো উন্নত করা যায়। শিক্ষকের মূল্যায়ন শিক্ষার্থীদের সফলতার বর্তমান স্তর নির্ধারণ করতে এবং সেই অনুযায়ী ছাত্রের জন্য উপযুক্ত শিক্ষণ কৌশল এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়। শিক্ষকদের প্রায়ই তাঁদের ছাত্রদের মূল্যায়ন করার বিষয়ে মিশ্র অনুভূতি থাকে। সর্বোপরি এটি অনিবার্য যে কিছু শিক্ষার্থী আরো ব্যক্তিগত স্তরে মূল্যায়ন ব্যবহার করতে পারে। যাই হোক, বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর প্রতিক্রিয়া প্রকৃতপক্ষে সহায়ক হতে পারে, শিক্ষকদের আত্মসচেতনতা এবং অন্তর্দৃষ্টির সুযোগ দেয়, যা তাঁদের চাকরিতে আরো ভালো হতে সাহায্য করতে পারে। ফিডব্যাক শিক্ষকদের শিক্ষাপ্রক্রিয়াকে আরো আনন্দদায়ক এবং কার্যকর করার জন্য সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দেয়। যে শিক্ষকরা তাঁদের ছাত্রদের প্রতি আরো প্রতিক্রিয়াশীল তাঁরা একটি মানসম্পন্ন শিক্ষাগত অভিজ্ঞতা প্রদানের একটি ভালো সুযোগ তৈরি করেন।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ

ট্যাগ