শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে দুর্নীতি, জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন

সরকারি অর্থে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ সংস্থা-শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে (ইইডি) লাগামহীন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি উদ্বেগজনক।

জানা গেছে, ঠিকাদারদের সঙ্গে সেখানকার একশ্রেণির প্রকৌশলীর যোগসাজশে নিম্নমানের উপকরণে নির্মিত হচ্ছে ভবন। এতে উদ্বোধনের আগেই কোনো কোনো ভবন হেলে পড়ছে; উপরন্তু বছর না যেতেই অনেক ভবনের পলেস্তারা খসে পড়ছে।

উল্লেখ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণে ইইডির নিজস্ব কিছু প্রকল্প রয়েছে। এছাড়া সরকারের সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতের ব্যয়ও এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এর বাইরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিএমই) বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে ভবন নির্মাণসংক্রান্ত কাজও সম্পন্ন হয়ে থাকে ইইডির মাধ্যমে।

এক হিসাবে দেখা গেছে, ইইডি বর্তমানে যেসব পূর্ত কাজ করছে, তার মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের ২৫টি প্রকল্পের কাজ মাত্র পাঁচজন ব্যক্তির কব্জায় রয়েছে। অথচ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ ও ২০২২ সালের নির্দেশিকাসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী একজন কর্মকর্তার একটির বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকার কথা নয়।

আশ্চর্যজনক হলো, আবুল হাশেম সরদার নামে একজনের কাছেই একসময় ৩৯টি প্রকল্প ছিল। তবে বর্তমানে ১১টি প্রকল্পের পিডি তিনি, যেগুলোর আর্থিক বাজেট ৩ হাজার ৫৯১ কোটি টাকার বেশি। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং বিদেশে পাচারের অভিযোগ আমলে নিয়ে সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তাকে তলব করা হয়।

অবশ্য অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বিষয়ে ইইডির ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ ও সংস্কারের তালিকা তৈরির কাজ। এখন থেকে এটি মন্ত্রণালয় করবে। এছাড়া কিছু বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলীর ক্ষমতা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীদের মাঝে বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সংস্থাটির দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীরা যাতে ঠিকাদারদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে উৎকোচ নিতে না পারেন, সে উপায়ও খোঁজা হচ্ছে। এতে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাত্রা কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা করা যায়।

দেশে প্রকল্প গ্রহণ থেকে বাস্তবায়নের নানা পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি-অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ রয়েছে, যা থেকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরও মুক্ত নয়।

দুর্নীতি সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার খর্ব করছে এবং এ কারণে প্রান্তিক ও পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী ক্ষতির শিকার হচ্ছে। বলার অপেক্ষা রাখে না-দুর্নীতি সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে মানুষের মৌলিক অধিকার অর্জনে বড় বাধা।

জনগণের এসব মৌলিক অধিকার রক্ষায় সরকারের আন্তরিক ভূমিকা কাম্য হলেও উদ্বেগের বিষয় হলো, এ ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে কার্যকর ও কঠোর কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যাচ্ছে না। দুর্নীতি দেশের উন্নয়নকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে, এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণের অবকাশ নেই। কাজেই শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে লাগামহীন অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত চক্রটিকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার পাশাপাশি দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূলে সরকার আরও কঠোর হবে, এটাই প্রত্যাশা।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে দুর্নীতি, জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন

সরকারি অর্থে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ সংস্থা-শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে (ইইডি) লাগামহীন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি উদ্বেগজনক।

জানা গেছে, ঠিকাদারদের সঙ্গে সেখানকার একশ্রেণির প্রকৌশলীর যোগসাজশে নিম্নমানের উপকরণে নির্মিত হচ্ছে ভবন। এতে উদ্বোধনের আগেই কোনো কোনো ভবন হেলে পড়ছে; উপরন্তু বছর না যেতেই অনেক ভবনের পলেস্তারা খসে পড়ছে।

উল্লেখ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণে ইইডির নিজস্ব কিছু প্রকল্প রয়েছে। এছাড়া সরকারের সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতের ব্যয়ও এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এর বাইরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিএমই) বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে ভবন নির্মাণসংক্রান্ত কাজও সম্পন্ন হয়ে থাকে ইইডির মাধ্যমে।

এক হিসাবে দেখা গেছে, ইইডি বর্তমানে যেসব পূর্ত কাজ করছে, তার মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের ২৫টি প্রকল্পের কাজ মাত্র পাঁচজন ব্যক্তির কব্জায় রয়েছে। অথচ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ ও ২০২২ সালের নির্দেশিকাসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী একজন কর্মকর্তার একটির বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকার কথা নয়।

আশ্চর্যজনক হলো, আবুল হাশেম সরদার নামে একজনের কাছেই একসময় ৩৯টি প্রকল্প ছিল। তবে বর্তমানে ১১টি প্রকল্পের পিডি তিনি, যেগুলোর আর্থিক বাজেট ৩ হাজার ৫৯১ কোটি টাকার বেশি। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং বিদেশে পাচারের অভিযোগ আমলে নিয়ে সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তাকে তলব করা হয়।

অবশ্য অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বিষয়ে ইইডির ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ ও সংস্কারের তালিকা তৈরির কাজ। এখন থেকে এটি মন্ত্রণালয় করবে। এছাড়া কিছু বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলীর ক্ষমতা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীদের মাঝে বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সংস্থাটির দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীরা যাতে ঠিকাদারদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে উৎকোচ নিতে না পারেন, সে উপায়ও খোঁজা হচ্ছে। এতে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাত্রা কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা করা যায়।

দেশে প্রকল্প গ্রহণ থেকে বাস্তবায়নের নানা পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি-অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ রয়েছে, যা থেকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরও মুক্ত নয়।

দুর্নীতি সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার খর্ব করছে এবং এ কারণে প্রান্তিক ও পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী ক্ষতির শিকার হচ্ছে। বলার অপেক্ষা রাখে না-দুর্নীতি সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে মানুষের মৌলিক অধিকার অর্জনে বড় বাধা।

জনগণের এসব মৌলিক অধিকার রক্ষায় সরকারের আন্তরিক ভূমিকা কাম্য হলেও উদ্বেগের বিষয় হলো, এ ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে কার্যকর ও কঠোর কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যাচ্ছে না। দুর্নীতি দেশের উন্নয়নকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে, এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণের অবকাশ নেই। কাজেই শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে লাগামহীন অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত চক্রটিকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার পাশাপাশি দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূলে সরকার আরও কঠোর হবে, এটাই প্রত্যাশা।